যোগাদ্যা বাংলার এক লৌকিক দেবী ৫১ পীঠের এক পীঠ।

রাহুল রায়,পূর্ব বর্ধমান: পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট ব্লকের অন্তর্গত ক্ষীরগ্ৰাম। যোগাদ্যা বাংলার এক লৌকিক দেবতা কথিত আছে, ক্ষীরগ্রামের দেবী ৫১ পীঠের এক পীঠ। এখানে মায়ের ডান পায়ের বুড়ো আঙুল পড়েছিল। বর্ধমানের মহারাজা এই গ্রামে যোগাদ্যার একটি মন্দির নির্মাণ করান। এবং সম্ভবত তাঁরই আদেশে হারিয়ে যাওয়া মূর্তিটির অনুকরণে একটি দশভুজা মহিষমর্দিনী মূর্তি তৈরি করেন দাঁইহাটের প্রস্তর শিল্পী নবীনচন্দ্র ভাস্কর। সারাবছর মা যোগাদ্যা মূর্তি ক্ষীরদীঘির জলে থেকে। ৩১ শে বৈশাখ ক্ষীরদীঘির জল থেকে মা যোগাদ্যা মূর্তি তুলে নিয়ে আসা হয় পুজোর জন্য। প্রতিবছর বৈশাখমাসের ৩১ তারিখে ধুমধাম করে পালিত হয় পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট ব্লকের অন্তর্গত ক্ষীরগ্রাম-এর যোগাদ্যা দেবীর পুজো । ঐতিহ্যবাহী পুজোকে ঘিরে ক্ষীরগ্রাম এখন মেতে রয়েছে উৎসবের আমেজে । এই পুজোকে কেন্দ্র করে পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকা থেকে কাতারে কাতারে পুণ্যার্থীরা আসেন মাতৃমুখ দর্শনে ৷ স্থানীয় ক্ষীরগ্ৰাম, কুরম্বুগ্ৰাম, ইট্যাগ্ৰাম, বামুনগ্রাম, ধারসোনাগ্ৰাম, পলাশীগ্ৰাম, কাঁটার ইত্যাদি গ্ৰামের আবালবৃদ্ধবনিতা এই পুজোয় মেতে ওঠেন ৷ পুজো পরিচালনা কমিটির সভাপতি মিহির কুমার নস্কর, পুজো পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারি আশীষ সামন্ত জানান, যোগাদ্যা দেবীর পুজো উপলক্ষে ক্ষীরগ্রাম ছাড়াও পার্শ্ববর্তী এলাকা ও অন্যান্য জেলা থেকেও লোকসমাগম হয় ৷ পুজোয় মহিষ,ছাগল বলিদান প্রথা চালু রয়েছে। পুজো উপলক্ষে মন্দির প্রাঙ্গনের সামনে বসে বড়ো মেলা। পুজো উপলক্ষে এসে ভক্তরা যাতে অসুস্থ না হয়ে পড়েন তার জন্য পুজো পরিচালনা কমিটির সদস্যরা চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানের লক্ষ্যে মেডিকেল ক্যাম্প-এরও ব্যবস্থাও রেখেছে ৷ এর পাশাপাশি ক্ষীরগ্ৰামে মা যোগাদ্যা দেবীর পুজো উপলক্ষে ক্ষীরগ্ৰাম অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির পক্ষ থেকে ভক্তদের জন্য জলের আয়োজন করা হয়েছে। পুজো উপলক্ষে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।