মঙ্গলবার কনস্টিটিউশন ক্লাবে রাহুল গান্ধীর ডাকা বৈঠকে হাজির অ-বিজেপি ১৪টি বিরোধীদল

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: ১৪টি বিরোধীদল জোটবদ্ধভাবে মোদি সরকার কে কোণঠাসা করার জন্য কোমর বাঁধছে। ২০২৪-এর মহড়া হিসেবে মঙ্গলবার কনস্টিটিউশন ক্লাবে রাহুল গান্ধীর ডাকা বৈঠকে হাজির হলেন অ-বিজেপি দলের সাংসদরা। কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, এনসিপি, ডিএমকে, শিবসেনা, আরজেডি, সিপিএম, সিপিআই, আরএসপি, আইইউএমএল, এলজিডি, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা এবং কেরাল মনি কংগ্রেসের নেতারা। তবে রাহুল গান্ধীর ডাকা এ দিনের বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন বহু জন সমাজ পার্টি এবং আম আদমি পার্টির সদস্যরা।

    গত সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাঁচ দিনের সফরে গিয়েছেন। তারপর এদিনের বৈঠক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, মহুয়া মৈত্র, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় অসিত মাল। সৌগত রায় জানিয়েছেন, “রাহুল গান্ধী সমস্ত বিরোধী দলকে একসঙ্গে চলার বার্তা দিয়েছেন আমরা একসঙ্গে এবারে মোদি সরকারকে কুপোকাত করব।” প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “রাহুল গান্ধী আজ যে কথা বলেছেন, অনেক আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই বার্তা দিয়েছেন বিরোধীরা এখন থেকে একজোট ২০২৪-এ বিজেপি সরকারের পতন অনিবার্য।”কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং বলেন, “বিরোধীরা একজোট হয়ে লড়ছে এবং বিজেপি সরকার ভয় পেয়েছে।”

    দেশের রাজনীতিতে জাতীয় স্তরে সম্মিলিতভাবে বিজেপিকে কোণঠাসা করা এবং রাজ্যস্তরে একের বিরুদ্ধে এক লড়াইয়ের ফর্মুলা গ্রহণ করতে চাইছে অ-বিজেপি দলগুলি। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি-বিরোধী মঞ্চ গড়ে তোলা এবং ২০২২-এ উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড-সহ ৫ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে বিরোধী দলগুলির ভূমিকা ও রণনীতি নিয়ে ঘুঁটি সাজাতে চাইছেন অ-বিজেপি দলের নেতারা।

    অ-বিজেপি সব বিরোধী দলের সাংসদদের নিয়ে প্রাতঃরাশ বৈঠকে বসেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ন’টায় দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবে এই বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে সংসদের অন্দরে এবং বাইরে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের রণকৌশল তৈরি হয়।সম্প্রতি বাংলার জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি সফরে এসে সনিয়া গান্ধী রাহুল গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেছেন। তিনি কথা বলেছেন আরজেডি ডিএমকে এনসিপি সহ আরও কয়েকটি বিরোধীদলের নেতাদের সঙ্গে। এর পরেই জাতীয় রাজনীতিতে বিরোধী দলগুলি এক ছাতার তলায় আসতে শুরু করেছে। সংসদের ভেতরে এবং সংসদের বাইরে ও বিজেপি দলগুলি নিজেদের মধ্যে সমন্বয় রেখে চলতে শুরু করেছে।

    ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে বিজেপি-বিরোধী দলগুলি পেগাসাস, পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি কৃষি আইন বাতিলের মত ইস্যুগুলোকে তুলে ধরে নরেন্দ্র মোদি সরকারকে কোণঠাসা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সংসদের উভয় কক্ষেই সরকারকে চেপে ধরেছে বিরোধীরা। গত ১৯ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে সংসদের বাদল অধিবেশন। কিন্তু বিরোধী দলগুলোকে একসঙ্গে আমন্ত্রণ জানিয়ে বৈঠক করে সম্মিলিত রণকৌশল তৈরি করার বৈঠক এই প্রথম।

    কংগ্রেস সূত্র জানাচ্ছে, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পর সনিয়া গান্ধী দলের নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস সহ অন্যান্য দলকে সঙ্গে নিয়ে এগোতে হবে পৃথক কর্মসূচির পথে পা-বাড়াবে না কংগ্রেস। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সনিয়া গান্ধীর এই সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ।