৮ বছরের মেয়েকে যৌন হেনস্থা, ৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ড আঁকার শিক্ষকের

নিজস্ব প্রতিনিধি : ১৪ আগস্ট উল্টোডাঙা থানায় একটি গুরুতর অভিযোগ জমা পড়ে। এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, তাঁর ৮ বছর বয়সী নাবালিকা মেয়েকে শ্লীলতাহানি এবং যৌন হেনস্থা করেছে আশিস মিত্র নামে একজন।

    পঞ্চাশোর্দ্ধ আশিস ওই মেয়েটির আঁকার শিক্ষক। বাড়িতে আঁকা শেখাতে এসেই বন্ধ করে দিত ঘরের দরজা। কারণ হিসেবে জানিয়েছিল, ঠিক করে আঁকা শিখতে গেলে গভীর মনঃসংযোগ প্রয়োজন। বাইরের কোনও আওয়াজ বা দৃশ্য যাতে ছোট মেয়েটির মনঃসংযোগে ব্যাঘাত না ঘটাতে পারে, তাই এই ব্যবস্থা।

    মেয়েটির পরিবারের সবাই বিশ্বাস করেছিলেন আশিস মিত্রর এই যুক্তি। একজন মধ্যবয়স্ক আঁকার শিক্ষক যে কোনও কু-মতলবে এইসব বলছেন, ভাবতেই পারেননি তাঁরা। আর তাঁদের এই বিশ্বাসের সুযোগ নিয়েই আঁকা শেখানোর ছলে দিনের পর দিন মেয়েটিকে যৌন হেনস্থা করে গেছে আশিস। গোটা ঘটনার অভিঘাতে ভয়ে কুঁকড়ে গিয়ে প্রথমে কাউকেই কিছু জানাতে পারেনি ছোট মেয়েটি।

    কিন্তু, একদিন থাকতে না পেরে বাবা-মায়ের কাছে সবটা বলে ফেলে বাচ্চা মেয়েটি। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে তার মা-বাবার। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁরা অভিযোগ জানান উল্টোডাঙা থানায়।

    অভিযোগ পাওয়ার পর সেইদিনই সন্ধেবেলায় বেলগাছিয়া রোডের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আশিস মিত্রকে। তার বিরুদ্ধে পকসো (The Protection of Children from Sexual Offences Act) আইনে মামলা রুজু হয়। প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য-প্রমাণ এবং মেয়েটির মেডিক্যাল রিপোর্ট-সহ চার্জশিট জমা দেওয়া হয় মাত্র ৩ দিনে।

    সেই মামলারই রায় বেরিয়েছে। আশিস মিত্রর ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন মাননীয় বিচারক। সঙ্গে ৫০,০০০ টাকা জরিমানা। জরিমানা অনাদায়ে কারাদণ্ডের মেয়াদ বাড়বে আরও ৩ মাস।

    নিচে থাকল অপরাধী আশিস মিত্রর ছবি। অভিযোগ পাওয়ার মাত্র ১৮ দিনে মধ্যে অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত করেছেন উল্টোডাঙা থানার তদন্তকারী অফিসার সাব ইনস্পেকটর প্রভাত কুমার সেনাপতি।