৪৬৩ বছরের পুরনো বাবরি মসজিদ সর্বদা বাবরি মসজিদই থাকবে, বাবরি মসজিদের কথা ভোলার মত নয় :অল ইন্ডিয়া ইমাম কাউন্সিল

 

    নতুন গতি ওয়েব ডেস্ক : অল ইন্ডিয়া ইমাম কাউন্সিলের জাতীয় সেক্রেটারিয়াট এটা প্রকাশ করেছে যে বাবরি মসজিদের জায়গায় মন্দির তৈরি করতে দেওয়াটা দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নাইনসাফি ফায়সালা। অন্যায় ভাবে মন্দির তৈরি করা এটা নাইনসফি। তাছাড়া গণতান্ত্রিক ভারতবর্ষে
    এটা ধর্মীয় স্বাধীনতাকে হত্যা করার সমতুল্য ।

    সংঘ পরিবার সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ করে ৬ ডিসেম্বর ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদকে অন্যায়ভাবে শহীদ করে ।

    আন্তরিকভাবে দুঃখ ও বেদনা সহ মুসলিমরা ধৈর্য ধারণ করে প্রায় ২৭ বছর। দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের দিকে ন্যায়বিচারের জন্য অপেক্ষায় ছিল দেশবাসী। বিভিন্ন প্রমাণাদি, কাগজপত্র, ডকুমেন্ট সমস্ত কিছু মুসলমানদের পক্ষে সঠিক ভাবে থাকা সত্ত্বেও ৪ নভেম্বর ২০১৯ সালে ভারতবর্ষের সর্বোচ্চ আদালত যে ফায়সালা দেয় তা ছিলো দেশের সংবিধানের খেলাফ এবং বেইনসাফে পরিপূর্ণ ফায়সালা। মসজিদ ধ্বংস করে দেশের সম্মানকে নষ্ট করা হয়েছে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে। মসজিদের জায়গায় মন্দির স্থাপন করার অর্ডার দিয়ে দেশের সম্মান কে চরমভাবে বিপন্ন করা হয়েছে।
    সুপ্রিম কোর্টের এই ফায়সালা ছিল ত্রুটিপূর্ণ এবং ইনসাফের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় এটা ছিল খুব হাস্যকর একটি রায় ।

    আমাদের দেশের সুপ্রিম কোর্ট এটা প্রমাণ করেছে যে গণতান্ত্রিক ভারতবর্ষে ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং ঐতিহ্যের শক্তি খর্ব করেছে।একবার যে ভূমি অকফ করে দেওয়া হবে তা মহাপ্রলয় পর্যন্ত সেটা ওকাফ সম্পত্তি হিসেবে বিবেচিত থাকবে। মসজিদ সর্বদা মসজিদই থাকবে। যদিও তার উপর কেউ অন্যয়ভাবে জবরদখল করে কিছু করার অপচেষ্টা চালায়। অন্যায় ভাবে দাবি করে দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে নিয়ন্ত্রণে এনে উগ্র হিন্দুত্ববাদী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বাবরি মসজিদের উপর পূর্ণ দখল করা হয়। এটা মেনে নেওয়া যায় না। এখন বাবরি মসজিদের সত্য ইতিহাস দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা এবং পৌঁছে দেওয়া আমাদের ঈমানী দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।

    যখনই ইনসাফ প্রতিষ্ঠার সময় আসবে তখনই নতুন প্রজন্মের কাছে সাক্ষী হিসেবে আমরা পেশ করব। আমরা বেইনসাফিকে ইনসাফ দিয়ে পরিবর্তন করার দিনের অপেক্ষায় থাকবো।

    উগ্র হিন্দুত্ববাদী শক্তি এখনো অন্যের ইবাদৎখানা জবরদখল ও জুলুম করে কব্জায় করে রাখার চেষ্টায় রয়েছে। এই ধরনের সবরকম অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য আন্তরিক ভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। সমস্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে যারা সাধারণত সর্বদা শোষিত এবং বঞ্চিত হয়ে থাকে তাদের সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে।

    মুসলমানদের অন্যের কোনো হক বা অধিকার দরকার নেই। কিন্তু নিজের অধিকার আদায়ের জন্য সর্বদা চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে এটা দেশের নাগরিক হিসেবে একটা মৌলিক অধিকার। নিজের মৌলিক অধিকার আদায়ের জন্য
    ভারতীয় সংবিধান সমস্ত ধর্মের মানুষকে অধিকার দিয়েছে।

    বাবরি মসজিদ শাহাদাত বরণের সময় সংঘ পরিবারের সাথে অন্যান্য আরো ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক পার্টিগুলো নীরব ভূমিকা পালন করেছিল। ওয়াকফ সম্পত্তির উপর জবরদখল তাদের চোখের সামনে হচ্ছিল এবং তারা নীরব ছিলো। কিছু রাজনৈতিক পার্টি এখন পর্যন্ত নীরব ভূমিকা পালন করে চলেছে । এমন ভূমিকা পালন করা দেশের জন্য এবং সাধারণ মানুষের জন্য খুব ভয়ানক।

    অল ইন্ডিয়া ইমামস কাউন্সিল সমস্ত মুসলিম নেতা এবং পথপ্রদর্শকদের উদ্দেশ্যে অনুরোধ জানান – এখন ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক পার্টিগুলোর উপর পূর্ণ আস্থা না করে দেশ,জাতি ও উম্মাহকে সংরক্ষণ করতে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রস্তুত হয়ে যান। এটাই বর্তমান সময়ের জোরালো দাবি।