নীতীশের দলের ৬ বিধায়ক গেরুয়া শিবিরে

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: অরুণাচল বিধানসভায় নির্বাচিত নীতীশ কুমারের দলে জেডিইউ-এর ৬ বিধায়ককে এবার একসঙ্গে ভাঙিয়ে নিল বিজেপি।ছোট রাজ্য হলেও শরিক দলের প্রতি বিজেপির এই মনোভাব দেখে ফের সরব হয়েছে বিরোধীরা। অসন্তোষের আঁচ জেজিইউ-এর অন্দরেও।

    বিহারে জোটসঙ্গীর পিছনেই কিনা অরুণাচলে গিয়ে ‘ছুরি’ মারল বিজেপি। অরুণাচল বিধানসভায় নির্বাচিত নীতীশ কুমারের দলে জেডিইউ-এর ৬ বিধায়ককে এবার একসঙ্গে ভাঙিয়ে নিল বিজেপি। যে কারণে অরুণাচলে বিরোধী দলের তকমা হারাল নীতীশের দল। বিজেপির খাতায় যোগ হল ৬ বিধায়কের নাম। ফলে নীতিশ কুমারের হাতে পড়ে রইল একজন মাত্র বিধায়ক। ছোট রাজ্য হলেও শরিক দলের প্রতি বিজেপির এই মনোভাব দেখে ফের সরব হয়েছে বিরোধীরা। এমনকী অসন্তোষের আঁচ জেজিইউ-এর অন্দরেও। জোট করে বিহারে লড়লেই জেডি(ইউ)-এর আসন কমে ৪৩-এ দাঁড়িয়েছে। বিহারের শাসক জোটে এখন বিজেপি ‘বড় দাদা’। সেই সময়ই নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছিল। প্রথমে শোনা গিয়েছিল, নীতীশ কুমারের বদলে বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে অন্য কাউকে ঠিক করবেন। নীতীশকে কেন্দ্রে সক্রিয় হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হবে। যদিও শেষমেশ নীতীশ কুমারকেই মুখ্যমন্ত্রী করে বিজেপি। তবে, জেডিইউ-এর অন্দরের খবর, মুখ্যমন্ত্রিত্ব পেলেও বিজেপিকে ‘হাতের পুতুল’ হয়ে উঠতে হচ্ছে জেডিইউ-কে। বিজেপিই এখন নিয়ন্ত্রক। জেডিইউ-র অন্দরের এই ক্ষোভ যে অমূলক নয়, তা অরুণাচলের ঘটনাতেই স্পষ্ট। ২০১৯ সালে অরুণাচল প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে মাত্র ১৫টি আসনে লড়াই করে সাতটি আসনে জয় পায় জেডিইউ। ফলে প্রধান বিরোধী দলের পাশাপাশি অরুণাচলে আঞ্চলিক দলের সম্মানও পায় তাঁরা। বিহারে বিজেপির সঙ্গে জোট থাকা সত্ত্বেও অরুণাচলে বিরোধী আসনে বসে জেডিইউ।

    বিহারে জোট করে গড়ার সময়ই নভেম্বর মাসে দলবিরোধী কার্যকলাপের জন্য জেডিইউয়ের তিন বিধায়ককে শোকজ করা হয়েছিল অরুণাচলে। কিন্তু গতকালই তাঁরা সদলবলে বিজেপিতে নাম লেখান। বিধানসভার স্পিকার তাঁদের সিদ্ধান্ত মেনেও নেন। প্রধান বিরোধী দল হলেও জেডিইউয়ের দুই তৃতীয়াংশের বেশি বিধায়ক একযোগে বিজেপিতে নাম লেখানোর ফলে, কেউ দলত্যাগ বিরোধী আইনের আওতাতেও পড়ছেন না। আর ৬ জেডিইউ বিধায়ক যোগ দেওয়ায় ৬০ আসনের অরুণাচল বিধানসভায় বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা দাঁড়াল ৪৮। কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা মাত্র ৪। ফলে বন্ধুর সঙ্গে ‘শত্রুতা’ করার অভিযোগ ফের উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে।
    অপরদিকে, নীতীশ কুমার প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে লালু-পুত্র তেজস্বী যাদব বলেন, সাহস থাকলে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করুক। গান্ধী ময়দানের ৪ নম্বর গেটের কাছে কৃষি আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানোর ঘটনায় তেজস্বী-সহ আরজেডি, কংগ্রেস এবং বাম দলের ১৮ জন নেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। তা নিয়ে ক্ষুব্ধ তেজস্বী নীতীশকে ‘কাপুরুষ’ মুখ্যমন্ত্রী বলে উল্লেখ করেন। তাঁর কথায়, ‘কাপুরুষ মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারা পরিচালিত বিহার প্রশাসন আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে, কারণ আমরা চাষিদের সমর্থনে গলা তুলেছি। যদি সত্যিই আপনাদের ক্ষমতা থাকে, আমাদের গ্রেপ্তার করুন। আপনারা গ্রেপ্তার না করলে আমি আত্মসমর্পণ করব। চাষিরা ফাঁসির দড়ি গলায় পরতেও রাজি।

    অনুমতি ছাড়া জমায়েতের কারণে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারা এবং অতিমারী আইনে মামলা হয়েছে তেজস্বীদের বিরুদ্ধে। ১৮ জন নেতা ছাড়াও ৫০০ জন অজ্ঞাতপরিচয়ের নামও রয়েছে এফআইআরে। আরজেডির বক্তব্য, ‘চাষিদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তেজস্বী যাদবের বিরুদ্ধে যে মিথ্যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তাতে বিহার প্রশাসনের দু মুখো নীতি স্পষ্ট। চাষিদের রক্ষার জন্য আমরা হাজার হাজার এফআইআরকেও ডরাই না।