|
---|
নিজস্ব সংবাদদাতা : করোনা ভাইরাস আতঙ্ক এখনও মানুষ কাটিতে উঠতে পারেনি। ডেঙ্গু ম্যালেরিয়ার মতো ভয়ঙ্কর রোগগুলো এখনও পিছু ছাড়েনি। এবার যেন গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে এক নতুন আতঙ্ক স্ক্রাব টাইফাস। স্ক্রাব টাইফাস একটি জেনেটিক ডিজিজ।এই ধরনের রোগকে বাংলায় পশুমারি বলে। চলতি বছরে বাঁকুড়া জেলায় স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় দেড়শ এর অধিক। বাঁকুড়া শহরে গত অগাস্ট মাস অনুযায়ী প্রায় ছয় জন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়।
স্ক্রাব টাইফাস মূলত পোকার কামড়ে হওয়া একটি রোগ। এই রোগের জন্য দায়ি ‘ট্রম্বিকুলিড মাইট’ নামক এক ধরনের পোকা।এই পোকার কামড় থেকে এই রোগের জীবাণু মানবদেহে ছড়ায়। এই পোকাগুলির আকার ০.২ মিলিমিটার থেকে ০.৪ মিলিমিটার পর্যন্ত হয়। এগুলো মূলত ঝোপঝাড়ের মধ্যে থাকে। বর্ষায় যেহেতু গাছপালা, ঝোপঝাড়ের সংখ্যাটা বেড়ে যায়। ফলে স্ক্রাব টাইফাসের ঝুঁকিও তৈরি হয়। এক শ্রেনীর উচ্চবিত্ত মানুষ বেশ কিছু এলাকায় জায়গা কিনে দেওয়াল দিয়ে ঘিরে ফেলে রেখেছেন। দীর্ঘদিন সেই জায়গাটি ব্যবহার না করার ফলে জায়গাতে আগাছা এবং জল জমা হয়েছে। আর সেখান থেকেই জন্ম নিচ্ছে বিভিন্ন পোকামাকড়, মশার লাভা। আর সেখান থেকেই বাসা বাঁধছে মরণফাঁদ। আর কখন সচেতন হবে মানুষ সেই নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শহরের বাসিন্দারা।বাঁকুড়া পৌরসভার পক্ষ থেকে বারবার প্রচার চালানো হচ্ছে যাতে জল যেন কোথাও জমা না হয়। ডেঙ্গুর হাত থেকে বাঁচাতে কীটনাশক স্প্রে করা হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। যে সমস্ত মানুষজন তাদের জায়গা কিনে ফেলে রেখে দিয়েছেন দিয়ে রেখেছেন সেই সমস্ত জমি মালিকদের নাম ও ঠিকানা জোগাড় করে বাঁকুড়া পৌরসভা থেকে নোটিশের মাধ্যমে প্রথমে সাবধান করা হবে এবং পরে কড়া আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাঁকুড়া পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান হীরালাল চট্টরাজ।বাঁকুড়া শহরের বাসিন্দা অরুণ রজক বলেন বাঁকুড়া শহরের অধিকাংশ মানুষই জায়গা কিনে দেওয়াল দিয়ে সেই জায়গাটি ঘিরে রেখেছেন। সেই কারণে ডেঙ্গির প্রভাব দেখা যাচ্ছে শহরে। তিনি আরো বলেন পৌরসভা আরেকটু বেশি সচেতন হলে হয়তো এই সমস্ত মারণ রোগ থেকে মানুষ কিছুটা হলেও বিপদমুক্ত হবে।বাঁকুড়া স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিক (ডেপুটি ৩) বলেন এই স্ক্রাব টাইফাস ভাইরাসটি মূলত সংক্রমিত হয় ট্রম্বিকুলিড মাইট নামক এক পোকার মাধ্যমে। জঙ্গল ঝোপঝাড় এবং আগাছায় এই পোকাগুলো জন্ম নেয়। জ্বর মাথা ব্যাথা এবং এক ধরনের রেস এই রোগের মূল লক্ষণ। সময় মত এই রোগের চিকিৎসা শুরু হলে কয়েক দিনের মধ্যেই রোগী সুস্থ হয়ে যেতে পারে কিন্তু দেরিতে চিকিৎসা হলে তা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। বসবাসযোগ্য জায়গা গুলি পরিষ্কার রাখলেই এই রোগ যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মিলবে বলেই তিনি জানান।