|
---|
নতুন গতি, কালিয়াচক: কালিয়াচক হাই স্কুলের উদ্যোগে স্থানীয় ছাত্র সমাজের সহযোগিতায় শনিবার নারী শিক্ষার প্রসার ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের ওপর এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়ে গেল । স্কুলগুলিতে করোনার ও লকডাউনের ফলে ছাত্রীদের স্কুলছুটের সংখ্যা বেড়ে গেছে। খোঁজ নিয়ে দেখা যাচ্ছে ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই কেউ কেউ বিয়ে ও করেছে। দুয়ারে শিক্ষকের পাশাপাশি সামাজিক কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে তাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে পড়ুয়াদের সচেতন করার কাজে নামলেন কালিয়াচক হাই স্কুল কর্তৃপক্ষ। শনিবার বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ‘নারীশিক্ষার প্রসার ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ’ শীর্ষক এক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। স্কুলগুলিতে যেমন স্কুলছুটের সংখ্যা বেড়েছে, তেমনই আবার হাসপাতালে নাবালিকা প্রসূতির সংখ্যাও বেড়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্যদফতর। গোটা জেলা জুড়ে সরকারি ও বেসরকারিভাবে প্রচার চালিয়ে নাবালিকা বিবাহের সংখ্যা কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছিল। তবে বাল্যবিবাহ রোধে সকল স্তরের মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে সচেতন করলে এই সমস্যা দুরীভূত হবে ।
এদিন আলোচনামূলক সচেতনতা সভায় হাজির ছিলেন মালদা জেলা ট্রাফিক ইন্সপেক্টর শান্তিনাথ পাঁজা, কালিয়াচক থানার আইসি মদনমোহন রায়, সাব ইন্সপেক্টর মৌসুমী রায় মল্লিক, সিলামপুর গ্রামীণ হাসপাতালের মহিলা কাউন্সিলর সম্পা চৌধুরি, শিক্ষারত্ন শিক্ষিকা তানিয়া রহমত, ডঃ হাজেরুল ইবকার, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সায়েম আসগার প্রমুখ। সঙ্গীত, ভাষন নানা কর্মসূচিতে আলোকপাত করা হয়। কালিয়াচক থানার আইসি মদনমোহন রায় বলেন, ‘১৮ বছরের আগে কোনও মতেই বিয়ে নয়। এখানে পড়ুয়া, শিক্ষক শিক্ষিকা যারা উপস্থিত আছেন পাড়ায় পাড়ায় এর কুফল সুফল নিয়ে অনুষ্ঠান করে আমরা গ্রামের মানুষকে সচেতন করতে পারি। জনসংযোগ যত বেশি বাড়ানো যাবে, তত তাড়াতাড়ি বাল্যবিবাহ বন্ধ করা সম্ভব হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সমাজে একশ্রেণীর মানুষ এখনও সচেতন হননি। তাঁদের সচেতন করতে শিক্ষক-শিক্ষিকা, ক্লাব, বিভিন্ন সংগঠন, গ্রামের বিশিষ্টদের এগিয়ে আসতে হবে। ছেলে-মেয়েদের স্বাভাবিক কল্যানের স্বার্থেই চাইল্ড রেজিস্টার এক্ট চালু হয়েছে। একটি ক্লাস বিশেষ শিক্ষাদান ও লমূল্যবোধের জন্য স্কুলে রাখার পরামর্শ দেন তিনি।’ এদিকে সিলামপুর গ্রামীণ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এই হাসপাতালে যত সংখ্যক প্রসূতি ভর্তি হন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় রয়েছে ১৮ বছরের কম বয়সী মহিলার সংখ্যা। হাসপাতালের বিএমওএইচ মতিউর রহমানের কথায়, এখানে প্রচুর মহিলা প্রসূতি ১৮ বছরের কম বয়সী ভর্তি হয়। স্বাস্থ্য দফতর চান যাতে সঠিক সময়ে বিয়ে হলে এর বহুবিধ সুফল রয়েছে। এই ধরণের সচেতনতামূলক কর্মসূচীর প্রসার ঘটুক চান স্বাস্থ্য দফতর। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সায়েম আসগার বলেন, ‘লক ডাউনের ফলে স্কুলে স্কুলছুটের সংখ্যা বেড়েছে। তার অন্যতম কারণ, গৃহবন্দি হয়ে থাকার ফলে পরিবারের লোকেরা অল্প বয়সী মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে। এই সমস্যা সংখ্যাটা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে গেছে। তাই পড়ুয়াদের সচেতনায় আমরা নামি । ক্রমশ সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও সচেতনতায় নারী শিক্ষার আরো প্রসারিত হবে এবং শিক্ষার সচেতনতায় নাবালিকা বিবাহ রোধ কমে যাবে। ’