|
---|
নিজস্ব সংবাদদাতা : বহুতল আবাসনের ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হল এক মহিলার। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতার নাম ধীমানা রায় (৪৭)। তাঁর বাড়ি হরিদেবপুর থানা এলাকার বিদ্যাসাগর সরণিতে। বৃহস্পতিবার সকালে আবাসনের এক কোণে ওই মহিলাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন সেখানকার বাসিন্দারা। পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা সেখানেই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। কিন্তু কী ভাবে ওই মহিলা পড়ে গেলেন, সে ব্যাপারে রাত পর্যন্ত নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ।মৃতার আত্মীয়েরা জানাচ্ছেন, তিনি হাওড়ার ডোমজুড়ের একটি স্কুলে পড়াতেন। গত নভেম্বর থেকে তাঁর চোখে কিছু সমস্যা শুরু হয়। দৃষ্টিশক্তিরও সমস্যা ছিল। পরবর্তী কালে মানসিক অবসাদের কারণে তিনি চিকিৎসকের কাছেও যেতেন। তবে আত্মঘাতী হওয়ার কোনও ইঙ্গিত ধীমানার ব্যবহারে মেলেনি বলেই দাবি তাঁর পরিজনদের।পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার রাতে চারতলা আবাসনের ফ্ল্যাটে ধীমানা ও তাঁর স্কুলপড়ুয়া ছেলে অরিঞ্জয় ছিলেন। স্বামী স্বরূপ রায় ছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনায়, তাঁর পৈতৃক বাড়িতে। বৃহস্পতিবার ধীমানার বাড়ির রাঁধুনি বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে কাল অনেক কথা হল। অস্বাভাবিক কিছুই তো আমার চোখে পড়েনি।’’ অরিঞ্জয় তার আত্মীয়দের জানিয়েছে, রাতে সে পড়ছিল। সেই সময়ে মায়ের সঙ্গে তার কথাও হয়। ধীমানা স্বাভাবিক ভাবেই কথা বলেছিলেন বলে জানিয়েছে ছেলে। সকালে উঠে সে মাকে দেখতে পায়নি। পরে প্রতিবেশীদের কাছ থেকে দুঃসংবাদ পেয়ে আত্মীয়দের নিজেই খবর দেয় অরিঞ্জয়।এ দিন ওই আবাসনে গিয়ে দেখা যায়, বহুতলের পিছন দিকে জলাধারের পাশে চাপ চাপ রক্তের দাগ। বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, সেখান থেকেই ধীমানাকে উদ্ধার করা হয়েছিল। তবে অনেকেরই ধারণা, ধীমানা রাতে ছাদ থেকে অসাবধানতাবশত পড়ে গিয়েও থাকতে পারেন। কারণ, ছাদ থেকে ঝাঁপ দিলে ওই একচিলতে জায়গায় পড়তেন না। একমাত্র দুর্ঘটনাজনিত কারণে পড়লেই ওই জায়গায় মুখ থুবড়ে পড়া সম্ভব।
তদন্তকারীরা জানান, মৃত্যু কী ভাবে হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলা হবে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ফরেন্সিক বিভাগকে খবর দেওয়া হয়েছে ঘটনাস্থল ঘুরে দেখার জন্য।ওই শিক্ষিকা ঝাঁপ দিয়েছেন, না কি অসাবধানতাবশত পড়ে গিয়েছেন, তা ফরেন্সিক পরীক্ষার পরে আন্দাজ করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ওই শিক্ষিকার পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি পুলিশের কাছে।