স্পেশালিটি হাসপাতালে গৃহবধূকে রক্ত দিয়ে জীবন রক্ষা করলেন হরিশ্চন্দ্রপুরের এক যুবক

নিজস্ব সংবাদদাতা, নতুন গতি, চাঁচল: চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে যখন হাসপাতালের বেডে শুয়ে ছটফট করছেন সাবিনা ইয়াসমিন নামে এক গৃহবধূ তখন তাকে রক্ত দিয়ে জীবন রক্ষা করলেন হরিশ্চন্দ্রপুরের কনুুুয়া রহমতপুুর এলাকার এক যুবক। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর সাতাশের যুবক শফিকুল আলম পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক। তার সবথেকে বড় পরিচয় সম্প্রতি তার বাবা আব্দুর রহিম আলীর সহযোগিতায় “আঁচল” নামক এক অনাথ আশ্রম খুুুলেছেন তিনি। একটি পোর্টাল নিউজ চ্যানেলও চালান।

    শফিকুল বাবুর বিয়ে সামনে মাসের দশ তারিখে। বাড়িতে বিয়ের তোড়জোরও চলছে জোরকদমে। প্যান্ডেল তৈরি থেকে অতিথিদের কার্ড বিতরণে হাত লাগানোর পরেও প্রসূতির জন্য রক্তদানে তিনি কার্পণ্য করেননি। রক্তের অভাবে এক প্রসূতি হাসপাতালে ছটফট করছেন এই খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় জানতে পাওয়ার পরে বাড়িতে নিজেকে বন্দী রাখতে পারেননি শফিকুল। পাড়ার এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে বাইকে চেপে তিনি ছুটে যান সাত কিমি দূরে অবস্থিত চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন হরিশ্চন্দ্রপুরের মালিওর এলাকার এক বধূর সন্তান প্রসবের আগেই শিশুটি মারা যায়। অস্ত্রোপচার করে সেই মৃত শিশুকে বের করে আনা হলেও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে গৃহবধূর প্রানসংকট দেখা দিতে পারে বলে আশংকা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা।

    এই কথা শোনার পর এই সেই প্রসূতিকে রক্তদানে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেননি শফিকুল আলম। ভাগ্যক্রমে এদিনটি শফিকুল বাবুর জন্মদিনও বটে। তার কথায়, প্রতিবছর নিজেদের জন্মদিনে তার বন্ধুরা যখন সবাই পার্টি করে তখন নিয়ম মেনে চাঁচল ব্লাড ব্যাংকে রক্তদান করেন শফিকুল। কিন্তু এ বছর এক প্রসূতির জীবন রক্ষা করতে পেরে তার চোখে-মুখে ফুটে উঠেছে অনাবিল আনন্দ। লকডাউন এর সময় প্রায় কুড়িটি পরিবারকে রক্তের যোগান দিয়েছিলো তার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা “নতুন আলো”। এমনকি সংস্থার পক্ষ থেকে দুস্থ ও অভুক্ত মানুষের কাছে খাবারের প্যাকেট পৌঁছে দিয়েছিলেন তিনি। তাই সমাজের লোকের কাছে এক প্রকার হিরো হয়ে থাকবেন ২৭ বছরের এই যুবক।এমনটাই স্থানীয় বাসিন্দারা।