পরিবারের চার সদস্যকে খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত পল্লবীকে

নিজস্ব সংবাদদাতা : সম্পত্তি নিয়ে নিত্য বিবাদ। তার জেরেই ভাসুর, তাঁর স্ত্রী, মেয়ে এবং শাশুড়িকে কুপিয়ে খুন করেছেন হাওড়া থানা এলাকার এমসি ঘোষ লেনের বাসিন্দা পল্লবী ঘোষ। একই পরিবারের চার সদস্যকে খুনের ঘটনায় এমনটাই জানতে পেরেছে পুলিশ। ওই কাণ্ডে গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত পল্লবীকে। ধৃতকে তিন দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।বুধবার রাতে এমসি ঘোষ লেনের বাসিন্দা দেবাশিস ঘোষ (৩৬), তাঁর স্ত্রী রেখা ঘোষ (৩০), তাঁদের মেয়ে তিয়াসা ঘোষ (১৩) এবং দেবাশিসের মা মাধবী ঘোষকে (৫৬) ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে পল্লবী নামে বছর তিরিশের ওই মহিলার বিরুদ্ধে। পল্লবী নিহত দেবাশিসের ভাই দেবরাজের স্ত্রী। ওই ঘটনায় প্রাথমিক ভাবে পল্লবীকে আটক করে পুলিশ। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেরার মুখে পল্লবী জানিয়েছেন, তিনি রাগ সামলাতে পারেননি। পুলিশের কাছে তিনি দাবি করেছেন, তাঁর ‘মাথায় রক্ত চড়ে’ যায়। তিনি ও-ও জানিয়েছেন, রেগে গেলে সামনে পুলিশ থাকলেও তিনি ভয় পান না। শাশুড়ি, ভাসুর এবং তাঁদের পরিবারের উপর পল্লবীর মনে ঘৃণা এতটাই জন্মেছিল যে তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, প্রয়োজনে চার জন কেন, আরও কয়েক জনকে খুন করতে পারেন। জেরায় পল্লবী আরও দাবি করেছেন, লকডাউনের সময় দেবাশিস তাঁর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছিলেন।তদন্তে উঠে এসেছে, বছর দশেক আগে হাওড়ার এমসি ঘোষ লেনের বাসিন্দা দেবরাজের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে হয়েছিল পল্লবীর। পল্লবী জানিয়েছেন, প্রেম করে বিয়ে করায় তাঁকে পরিবারে গঞ্জনা সহ্য করতে হত। এমনকি, অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে থাকায় সন্তান-সহ তাঁর গোটা পরিবারকে অনেক সামাজিক অবমাননা সহ্য করতে হয়েছে বলেও দাবি পল্লবীর। তাঁর দাবি, সেখান থেকেই তাঁর আক্রোশ জন্মায় দেবরাজের পরিবারের উপর। তিনি আরও জানিয়েছেন, তাঁর শ্বশুর শিশির ঘোষ হাওড়া ইম্প্রুভমেন্ট ট্রাস্টে চাকরি করতেন। তাঁর দুই সন্তান দেবাশিস এবং দেবরাজ। পল্লবীর দাবি, বড় ছেলে দেবাশিসকে বেশি ভালবাসতেন তিনি। কারণ তাঁর পরিবার শ্বশুর-শাশুড়িকে দেখাশোনা করত। পুলিশের দাবি, পল্লবী জানিয়েছেন, অবসরের পর বেশ কিছু টাকা বড়ছেলেকে দিয়েছেন শ্বশুর। তা নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল পল্লবী এবং দেবাশিসের মনে। এ ছাড়াও সম্পত্তি নিয়েও বিবাদ চলছিল দু’পক্ষের। এ নিয়ে মাস খানেক আগে দেবাশিস থানায় অভিযোগও করেছিলেন। এত দিন অশান্তি বন্ধ থাকলেও মঙ্গলবার রাতে তা চরম আকার নেয়। ঘটে যায় মর্মান্তিক ঘটনা।