আচমকা বন্ধ সড়ক সম্প্রসারণ, মরণফাঁদে গলসির মানুষ

আজিজুর রহমান, গলসি : আচমকা বন্ধ হয়ে গেছে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের সম্প্রসারণের কাজ। দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা এই কাজ হঠাৎ থেমে যাওয়ায় পুরসা থেকে গলিগ্রাম পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার রাস্তায় তৈরি হয়েছে মৃত্যুর ফাঁদ। পথচারী থেকে যানবাহন চালক, প্রত্যেকেই জীবন নিয়ে আশঙ্কার মধ্যে রয়েছেন। কাজ বন্ধের কারণে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

    জানতে পারা গিয়েছে, গলিগ্রাম ও মথুরাপুর এলাকায় দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে ওভারব্রিজ তৈরির কাজ চলছিল। কিন্তু সম্প্রতি নির্মাণকারী সংস্থা সমস্ত কাজ বন্ধ করে মেশিনপত্র গুটিয়ে নিয়ে চলে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কাজ প্রায় শেষের দিকে থাকলেও এই বন্ধের কোনো কারণ স্পষ্ট করা হয়নি। রাস্তার দুই পাশে গাড়ি চলাচল করায় যানজট ও দুর্ঘটনার ঘটনা বাড়ছে। পাশাপাশি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে হিমসিম খাচ্ছে পুলিশ।

    গলিগ্রামের বাসিন্দা অসীম চক্রবর্তী জানান, “গলিগ্রামের ওভারব্রিজ তৈরির কাজ প্রায় শেষের মুখে ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই নির্মাণকারী সংস্থা কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে নিত্যদিন যানজট তৈরি হচ্ছে গলিগ্রামে। সাধারণ মানুষকে সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। আমার অনুরোধ, বিষয়টি জেলা প্রশাসন দেখে ব্যবস্থা নিক।”

    পুরসার বাসিন্দা নাজমুল জামাদার বলেন, “আমাদের গ্রামের পাশে জাতীয় সড়কের ওপর ওভারব্রিজ তৈরির কথা ছিল। সেই কাজ শুরু হয়নি। এর ফলে এখানেও প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটছে। আমরা চাই, অবিলম্বে কাজ শুরু হোক এবং মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক।” নাজমুল আরও জানান, “স্কুল পড়ুয়াদের প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হতে হচ্ছে। পাশাপাশি, আমরাও সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছিনা।” এমন চললে এবারে আমাদের বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতে হবে।

    বাইক চালক সন্দীপ রায় জানান, “অজানা কারনে জাতীয় সড়কের কাজ বন্ধ। গলিগ্রামের ওভারব্রিজের কাজ প্রায় শেষ। তারপরও ওভারব্রিজ চালু করেনি। এখানে সাইট রাস্তায় গর্ত হয়ে গেছে। রাতে রাস্তায় চলাচল করা খুবই বিপজ্জনক। আজই গলিগ্রামের জিও পাম্পের কাছে পরপর তিন চারটি গাড়ি এক্সিডেন্ট হল। বেশ কয়েকজন জখম হয়েছে। আগেরদিন এখানে এক বাইক চালককে পিষে দিয়েছে একটি গাড়ি। গলিগ্রামের ওভারব্রিজটি চালু হলে দুর্ঘটনা হার কমতো। আমাদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে কেউই ভাবছে না কেন ?”

    স্থানীয়দের অনেকের অভিযোগ, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার জন্যই নিত্যদিন দুর্ঘটনা বাড়ছে। এদিকে কাজ বন্ধের ফলে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে। কিছুদিনের মধ্যে কাজ শুরু না হলে তারা আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।