কোভিডের খরা কাটিয়ে ধীরে-ধীরে ছন্দে ফিরছে ব্য়বসায়ী মহলও

নিজস্ব প্রতিবেদক:- কোভিডের খরা কাটিয়ে ধীরে-ধীরে ছন্দে ফিরছে ব্য়বসায়ী মহলও। দীর্ঘদিন পর ফের পাহাড়ে লাভের মুখ দেখছেন চা ব্য়বসায়ীরা। শুধু লাভের মুখ দেখা বললে অবশ্য় কম বলা হবে। একেবারে রেকর্ড দামে বিক্রি হচ্ছে হোয়াইট টি (White Tea)। গ্রিন টি (Green Tea) থেকে সাধারণ দার্জিলিং চা পাতারও (Darjeeling Tea Leaf) বিক্রিও এই মরশুমে ইতিমধ্য়ে রেকর্ড ছাড়িয়েছে। ফলে বলা যায়, এবারের মরশুমে অন্তত পাহাড়ের চা ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটেছে বলা যায়।দার্জিলিঙের সাধারণ পাতা চা বা গ্রিন টি (Green Tea) -র পাশাপাশি হোয়াইট টি (White Tea)-র চাহিদাও বরাবর থাকে তুঙ্গে। তবে এবছর চাহিদা এতটাই বেশি যে, দামও উঠেছে ভাল। কয়েক সপ্তাহ আগেই দার্জিলিঙের (Darjeeling) ‘ফার্স্ট ফ্লাশ চা’ ( First Flush Tea) বিক্রি হয়েছে ২৩ হাজার টাকা কেজি দরে। যা সাম্প্রতিককালে চায়ের ব্যবসায় রেকর্ড বলা চলে। জানা গিয়েছে পাহাড়ের বাদামতাম চা বাগানের কাছ থেকে একটি সংস্থা ২৩ হাজার টাকা কেজি দরে এই হোয়াইট টি (White Tea) কিনেছে৷ পাশাপাশি ‘মুনলাইট টি'(Moonlight Tea)-র দামও যথেষ্ট উঠেছে। ২১ হাজার টাকা কেজি করে বিক্রি হয়েছে ‘মুনলাইট টি’ (Moonlight Tea)। স্বভাবতই হাসি ফুটেছে চা ব্য়বসায়ীদের মুখে।হোয়াইট টি (White Tea)-র দাম ২০ হাজারের উপর ওঠার ঘটনা অবশ্য় এটা প্রথম নয়। তবে। গত দু-বছর করোনা ও লকডাউন পরিস্থিতির জেরে চা বিক্রি থেকে চা পাতার দামেও খানিক ভাটা এসেছিল। যা নিয়ে চিন্তায় ছিলেন বাগান মালিক থেকে ব্যবসায়ীরাও৷ তবে এবারে মরশুমের শুরুতেই রেকর্ড দাম ওঠায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন সকলে। বাদামতাম বাগানের মতো অন্যান্য বাগানের চা পাতাও এবার ভাল দাম পেয়েছে বলে জানা গিয়েছে।দার্জিলিঙের (Darjeeling) বিভিন্ন চা বাগানের ভাল মানের চা পাতা বিভিন্ন সংস্থার মারফৎ পৌঁছে দেয় চা প্রেমীদের কাছে৷ রাজ্য ছাড়িয়ে দেশের পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি হয় দার্জিলিঙের (Darjeeling) ভাল মানের চা, বিশেষত হোয়াইট টি। সেজন্য় দেশীয় সংস্থার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির প্রতিনিধিরাও পাহাড়ে এসে থাকেন। তবে গত দু-বছর ধরে চাহিদা কম থাকায় চায়ের দামও পড়ে গিয়েছিল। তবে এবারে বাদামতামের চা যে দামে বিক্রি হয়েছে, তা কার্যত কয়েক বছরের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে বলে জানাচ্ছেন চা মহলের সঙ্গে যুক্ত ব্য়ক্তিরা৷ শিলিগুড়ি টি অকশন কমিটির চেয়ারম্যান কমল কিশোর তিওয়ারি (Kishor Tewari) বলেন, “ভাল মানের চা পাতার দাম ভাল রয়েছে বাজারে। সম্প্রতি ভাল দামে বাদামতাম চা বাগানের হোয়াইট টি বিক্রি হয়েছে। বেশ কিছু বাগানের মুনলাইট টি ভাল দামে বিক্রি হয়েছে। CTC চা পাতার দামও ভাল রয়েছে। করোনার পর চা পাতার চাহিদা ভাল বেড়েছে।”সাধারণত ফেব্রুয়ারি (February) থেকে এপ্রিলের (April) মাঝেই ‘ফার্স্ট ফ্লাশ’ চা ( First Flush Tea) পাতা তোলা হয় অভিজ্ঞ শ্রমিকদের মাধ্যমে। আবার পূর্ণিমায় চাঁদের আলোয় তোলা হয় ‘মুনলাইট টি’ (Moonlight Tea)৷ এবার মরশুমের শুরু থেকেই চায়ের বিক্রি বাড়ায় মুখিয়ে রয়েছেন পাহাড় ও ডুয়ার্সের চা বাগান কর্তৃপক্ষরা। তবে শুধু হোয়াইট টি নয়, সাধারণ চায়ের চাহিদাও তুঙ্গে। দার্জিলিঙের (Darjeeling) বাগানের ভাল মানের চা পাতা ৫০০-১০০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ভাল মানের চা পাতা উৎপাদন করলে ভাল দাম পাওয়া যাবে বলে প্রতি বাগান কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন কিশোর তিওয়ারি (Kishor Tewari)।