এবিটিএ-এর দুদিনের জেলা সম্মেলন শেষে গঠিত হলো ৭১ জনের নতুন জেলা কাউন্সিল

নিজস্ব সংবাদদাতা, মেদিনীপুর : সংগঠনকে আরও মজবুত ও দৃঢ় করার শপথের মধ্য দিয়ে রবিবার বিকেলে শেষ হলো এবিটিএ-এর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্মেলন। “আক্রান্ত শিক্ষা, সংস্কৃতি, গনতন্ত্র-এসো গড়ি প্রতিরোধ”-এই শ্লোগানকে সামনে রেখে বিদ্যাসাগর স্মৃতি মন্দিরে অনুষ্ঠিত হলো শতবর্ষ প্রাচীন বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতির (এবিটিএ) পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দু-দিনের দশম ত্রিবার্ষিক সম্মেলন। সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন রবিবার সকালে শিক্ষক-শিক্ষিকা-শিক্ষাকর্মীদের একটি বর্ণাঢ্য মিছিল মেদিনীপুর শহর পরিক্রমা করে। বিদ্যাসাগর হল থেকে মিছিল শুরু হয়ে গান্ধীমোড়,বিদ্যাসাগর মোড়, ক্ষুদিরাম মোড়, কেরানীটোলা, নান্নুর চক,বটতলাচক, গোলকুঁয়াচক, পঞ্চুর চক,গান্ধীমোড় হয়ে পুনরায় বিদ্যাসাগর হলে প্রবেশ করে। রাস্তায় বীমা কর্মচারী ও সরকারি কর্মচারীদের পক্ষ থেকে মিছিলকে সংবর্ধনা জানানো হয়। এদিন সকাল থেকে বিভিন্ন বিভাগীয় আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। তিনটি মহকুমা থেকে ১৫ জন প্রতিনিধি সম্পাদকীয় প্রতিবেদনের উপর আলোচনা করেন। জবাবী ভাষন দেন বিদায়ী জেলা সম্পাদক বিপদতারণ ঘোষ। সম্মেলন থেকে সর্বসম্মতিক্রমে ৭১ জনের জেলা কাউন্সিল গঠিত হয়। সংগঠনের গঠনতন্ত্র মেনে আগামী একমাসের মধ্যে এই কাউন্সিলের পদাধিকারীরা নির্বাচিত হবেন।

     

    পাশাপাশি এদিন রাজ্য সম্মেলনের প্রতিনিধিদের নাম ঘোষিত হয়। উল্লেখ্য শনিবার সন্ধ্যায় মেদিনীপুর শহরের ঐতিহ্যবাহী সভাকক্ষ বিদ্যাসাগর স্মৃতি মন্দিরে এই সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন এবিটিএ-এর সাধারণ সম্পাদক সুকুমার পাইন।সম্মেলন শুরুর আগে শনিবার সকালে অবসর শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়ে প্রাক্তনী সম্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়। প্রকাশিত হয় এবিটিএ-এর নেতৃত্ব জেলার শিক্ষক আন্দোলনের ইতিহাস। বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় শিক্ষা বাঁচাও সমাবেশ।এই সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ্ অধ্যাপক কেশব ভট্টাচার্য, বিশিষ্ট অভিনেতা দেবদূত ঘোষ,এবিটিএ-এর সাধারণ সম্পাদক সুকুমার পাইন, জেলা সম্পাদক বিপদতারণ ঘোষ, জেলা সভাপতি বিকাশ পট্টনায়েক প্রমুখ।বক্তারা কেন্দ্রীয় সরকারের শিক্ষানীতি এবং রাজ্য শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যপক দুর্ণীতি এবং বিশৃঙ্খলার তীব্র সমালোচনা করেন। সন্ধ্যায় সম্মেলন শুরুর আগে সমিতির পতাকা উত্তোলনের পাশাপাশি সম্মেলন কক্ষে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন জেলা সভাপতি বিকাশ পট্টনায়েক। সাংগঠনিক প্রতিবেদন পেশ করেন জেলা সম্পাদক বিপদতারণ ঘোষ। আয়-ব্যয়ের হিসাব পেশ করেন কোষাধ্যক্ষ সত্যকিংকর হাজরা। তিনটি মহকুমার ২৯৩ জন নির্বাচিত প্রতিনিধি এই সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। সম্মেলনকে কেন্দ্রে করে দুদিনের সান্ধ্যকালীন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় পঞ্চুর চকে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অভর্থনা কমিটির সভাপতি প্রাক্তন অধ্যক্ষ হরিহর ভৌমিক সহ বিভিন্ন ভাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সংগঠনের প্রাক্তন নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলন উপলক্ষ্যে সম্মেলন স্থল ও সম্মেলন মঞ্চের নামকরণ করা হয়েছিল প্রয়াত দুই শিক্ষক নেতা তুষার পঞ্চানন ও অপরেশ ভট্টাচার্যের নামে।