|
---|
রবিউল ইসলাম,সাগরদিঘি : মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি ব্লকে এবছর ২০২১ সালে সর্বভারতীয় ডাক্তারী প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নজির সৃষ্টি করেছেন ব্লকের চার কৃতি সন্তান।তাদের মধ্যে তিনজন কাবিলপুর অঞ্চলের বাসিন্দা যথাক্রমে- গোলাম সারয়ার (সর্বভারতীয় র্যাঙ্ক-৯৭৫৯),ইমরান সেখ ( সর্বভারতীয় র্যাঙ্ক-১২৭৫৮),আসিক ইকবাল(সর্বভারতীয় র্যাঙ্ক-২৩৫৭২)ও অন্যজন ব্রাহ্মণীগ্রামের বাসিন্দা সাহিল রাজা (সর্বভারতীয় র্যাঙ্ক- ১৮১০৩)।ডাক্তারী প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ায় তাদের সকলের পরিবার জুড়ে বইছে খুশির জোয়ার।১৪ নভেম্বর রবিবার সাগরদিঘির অন্যতম নবগঠিত ‘তরঙ্গ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ‘এর পক্ষ থেকে মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ফুলের তোড়া, উত্তরীয়,ব্যাচ,মিষ্টির ভাড়, মোমেন্ট, স্টেথোস্কোপ, দিয়ে সংবর্ধনা জানানো হয়।
এই মহতি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান অতিথি প্রধান শিক্ষক মজিবুর রহমান, বিশেষ অতিথি সাগরদিঘি থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সুমিত বিশ্বাস,মুর্শিদ সারওয়ার জাহান,আব্দুর রাজ্জাক,রুহুল আমিন, ওবাইদুর রহমান, সাহিন হোসেন, ট্রাস্টের সভাপতি ইফতিকার আলম, ওলিউল্লাহ, সাইফুল ইসলাম,শরিফ আহামেদ প্রমুখ ও ছাত্রছাত্রীবৃন্দসহ তরঙ্গ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের সদস্যগণ।
মোহঃ ইলতুৎমিস এর সাত ছেলে-মেয়ের মধ্যে গোলাম সারয়ার কনিষ্ঠতম পুত্র। গোলাম সারয়ার ২০১৭ সালে কাবিলপুর হাই স্কুল থেকে ৮৬% শতাংশ নম্বর নিয়ে মাধ্যমিক এবং ২০১৯ সালে আল আমিন মিশন (পাপুড়ি শাখা) থেকে ৮৩% শতাংশ নম্বর নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন। সেই সময় থেকেই সময় নষ্ট না করে আল আমিন মিশন এর সাঁতরাগাছি নয়াবাজ শাখায় মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষার জন্য নিজেকে তৈরি করেছেন বলে জানায় গোলাম সারয়ার।
আবার,নাজিবুর রহমান এর তিন পুত্রের মধ্যে মেজো ছেলে ইমরান সেখ। ইমরান ২০১৮ সালে আল আমিন মিশন(ধুলিয়ান শাখা)থেকে ৯১.৪% শতাংশ নম্বর নিয়ে মাধ্যমিক এবং ২০২০ সালে আল আমিন মিশন(খলিশানি শাখা) থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ৯২% শতাংশ নম্বর নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন।আগামী প্রজন্মকে অনুপ্রেরণার বার্তা দেওয়ার জন্য ইমরান জানায়, প্রতিনিয়ত পড়াশোনা করলেই সাফল্য একদিন আসবেই।
অন্যদিকে, খাইরুল বাসার এর দুই ছেলে ও এক কন্যা। সাহিল রাজা কনিষ্ঠ। সাহিল ২০১৭ সালে সাগরদিঘি থার্মাল পাওয়ার স্কুল থেকে ৯২% শতাংশ নম্বর নিয়ে মাধ্যমিক এবং ২০১৯ সালে আল আমিন মিশন (সূর্যপুর শাখা) থেকে ৯২% শতাংশ নম্বর নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাশ করেন। তারপর থেকেই সে আল আমিন মিশন এর পাঁচুর শাখা মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করেন। নিজে পড়াশোনা করলেই আগে সাফল্য পাওয়া যায়।সাহিল বলেন, ডাক্তারী হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছিল মা,সেই মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পেরে আমি ও আমার পরিবার আজ গর্বিত। কাবিলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী শিক্ষক আব্দুর রউফ,তার পাঁচ ছেলে-মেয়ের মধ্যে আসিক ইকবাল কনিষ্ঠ। আসিক ইকবালের বাবা আব্দুর রউফ জানান,কাবিলপুর হাই স্কুল থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর ২০১৯ সালে আল আমিন মিশন(পাথরচাপরি শাখা) থেকে ৯৬.৫৭% শতাংশ নম্বর পেয়ে মাধ্যমিক পাশ করে।সে সম্ভাব্য মাধ্যমিকে রাজ্যে ১৫তম স্থান অধিকার করেছিল।আবার ২০২১ সালে আল আমিন মিশন(পাঁচুর শাখা) থেকে ৯৫.৮% শতাংশ নম্বর পেয়ে উচ্চমাধ্যমিক বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাশ করে।করোনা অতিমারিতে দীর্ঘদিন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকা সত্ত্বেও নিজের ইচ্ছা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে কোনো মেডিক্যাল কোচিং ছাড়াই নিট পরীক্ষায় সাফল্য পেয়েছি বলে জানায় আসিক ইকবাল। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সুচারুভাবে সঞ্চালনা করেন মুর্শিদ সারওয়ার জাহান।
তরঙ্গ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট হবু ডাক্তারদের কাছে প্রত্যাশা করছে, সাগরদিঘির এই কৃতি সন্তানরা ন্যায়পরায়ণ ডাক্তার হয়ে সাধারণ মানুষের সেবা করবে ও উত্তর-প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।