রাজনগরে আদিবাসী যুবতীকে কুপ্রস্তাব ও জাত তুলে গালিগালাজ করার অভিযোগ তৃণমূল ব্লক সহ-সভাপতির ছেলের বিরুদ্ধে

 

     

     

    খান আরশাদ, বীরভূম:

    রাজনগরে আদিবাসী যুবতীকে কুপ্রস্তাব ও জাত তুলে গালিগালাজ করার অভিযোগ তৃণমূল ব্লক সহ-সভাপতির ছেলের বিরুদ্ধে –

    রাজনগরে আদিবাসী যুবতীকে কু-প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূল নেতার ছেলে সহ ৩ জনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রাজনগরের গাংমুড়ি-জয়পুর অঞ্চলের দুই আদিবাসী যুবতী শুক্রবার বিকেলে সাইকেলে করে রাজনগর থেকে বাড়ি ফিরছিল। আলীগড় নামক একটি স্থানে ওই দুই যুবতীর পথ আটকায় এক তৃণমূল নেতার পুত্রসহ ৩ জন। তারা আদিবাসী ওই যুবতীদের কুপ্রস্তাব দেয় এবং জাত তুলে গালিগালাজ করে বলে অভিযোগ। এরপর ওই আদিবাসী যুবতীর পরিবারের পক্ষ থেকে রাজনগর থানায় অভিযোগ জানালে সার্কেল ইন্সপেক্টর চন্দ্রপুর চয়ন ঘোষ ও রাজনগর থানার ওসি তাপস দত্তের নেতৃত্বে শুরু হয় তদন্ত এবং রাজনগর থানার পুলিশ শুক্রবার রাত্রেই আলীগড় থেকে ধ্রুব ভান্ডারী নামে অভিযুক্ত এক যুবককে গ্রেফতার করে। বাকি দুই জন তখন পর্যন্তও পলাতক ছিল। এদের মধ্যে একজন তৃণমূলের ব্লক সহ-সভাপতির পুত্র কৌশিক রায় বলে জানা গেছে। পুলিশ ওই দুইজনের খোঁজ পেতে বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চালায়।
    এদিকে রাজনগর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সুকুমার সাধু এবং সহ-সভাপতি তথা অভিযুক্ত পলাতক কৌশিক রায়ের বাবা রানা প্রতাপ রায় জানান তারা বিষয়টি জেনেছেন এবং এটা খুবই ন্যাক্কারজনক ঘটনা। তাঁরাও চান দোষীরা উপযুক্ত শাস্তি পাক। পুলিশ ইতিমধ্যে তল্লাশি শুরু করেছে এবং তারাও দলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর নিচ্ছেন যেভাবেই হোক ২৪ ঘন্টার মধ্যেই পলাতক পুত্রকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানান তৃণমূল সহ-সভাপতি রানা প্রতাপ রায়।
    এরপর মঙ্গলবার সকালে জানা যায় পলাতক কৌশিক রায়কে চন্দ্রপুর মোড় থেকে রাজনগর থানার পুলিশ ধরে এনেছে। বাকি একজনের খোঁজ চলছে। ধৃতকে সিউড়ি আদালতে তোলা হলে বিচারক দশদিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
    এরই পরিপ্রেক্ষিতে কংগ্রেস ও সিপিআইএম রাজনগর থানায় স্মারকলিপি জমা দিয়ে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবী জানায়। মঙ্গলবার সকালে তৃণমূল নেতার পুত্র পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর মঙ্গলবার দুপুরে বিজেপি রাজনগর থানার সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। উপস্থিত রাজ্য বিজেপি সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় জানান তাঁরা হুমকি দিয়েছিলেন অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার পুত্র ধরা না পড়লে বিক্ষোভ দেখাবেন, সেই চাপে পড়েই পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেছে। রাজনগরের বড় কোন এক তৃণমূল নেতার বাড়িতে ব্লক সহ-সভাপতির পুত্র অভিযুক্ত কৌশিক রায় লুকিয়ে ছিল। পুলিশ ইচ্ছে করেই ধরছিল না, আমাদের চাপে পড়ে ধরতে বাধ্য হয়েছে।
    এদিকে রাজনগর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি এবং সহ-সভাপতি রানা প্রতাপ রায় জানান, আমরা ঘটনার শোনার পর সেদিনই পুলিশকে জানিয়েছিলাম যেভাবেই হোক খুঁজে বের করে অভিযুক্তদের শাস্তি দিতে হবে এবং আমরাও খোঁজ তল্লাশি চালাচ্ছি যেভাবেই হোক অভিযুক্তকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেবো। সেই মোতাবেক আমরা খোঁজখবর নিয়ে ঝাড়খন্ড থেকে পলাতক কৌশিককে ধরে এনে চন্দ্রপুরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি। বিজেপি রাজনৈতিক রঙ লাগানোর জন্য এখন উঠে পড়ে লেগেছে। আমাদের কোন নেতার বাড়িতে যদি লুকিয়েই ছিল, এ খোঁজ তাঁরা যদি পেয়েছিলেন, তাহলে বিজেপি নেতারা চুপচাপ বসেছিলেন কেন? এসে কৌশিককে ধরে নিয়ে যেতে পারতেন বা পুলিশকে-মিডিয়াকে সবাইকে জানাতে পারতেন! তা কেন তাঁরা করেননি?
    রাজনগরে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানোর পাশাপাশি দোষীরা যেন উপযুক্ত শাস্তি পায় সেই দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসীরা।