অনগ্রসর সম্প্রদায়ের পড়ুয়াদের স্কলারশিপের টাকা তছরুপের অভিযোগ উঠল উত্তর দিনাজপুরে

নিজস্ব প্রতিবেদক:-জাতিগত শংসাপত্র (caste certificates) জোগাড় করে, অনগ্রসর সম্প্রদায়ের পড়ুয়াদের স্কলারশিপের টাকা তছরুপের অভিযোগ উঠল উত্তর দিনাজপুরে। করণদিঘির আইসি এবং বিডিওর কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।রাজ্য সরকারের তরফে অনগ্রসর সম্প্রদায়ের ছাত্র ছাত্রীদের স্কলারশিপ দেওয়া হয়। সেই টাকাই নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছে। উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘিতে কোটি কোটি টাকা নয়ছয় করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কীভাবে হয়েছে তছরুপ? অভিযোগ, যাঁরা এখন পড়াশোনা করেন না, তাঁদের জাতিগত শংসাপত্র ব্যবহার করে স্কলারশিপের টাকা তোলা হচ্ছে। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ অনেক আগেই পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছেন। কেউ এখন ভিনরাজ্যে কাজ করেন। এমন ব্যক্তিকের কাস্ট সার্টিফিকেট ব্যবহার করা হচ্ছে। অভিযোগ, প্রথমে পড়াশোনা করেন না এমন ব্যক্তির কাস্ট সার্টিফিকেট জোগাড় করা হচ্ছে। তারপরে ওই শংসাপত্র দিয়ে নাথ নথিভুক্ত করা হচ্ছে রাজ্য সরকারের OASIS পোর্টালে। সেখানে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর দিতে হয়। এক্ষেত্রে, যার নামে অ্যাকাউন্ট হচ্ছে, সেখানে অন্য অ্যাকাউন্ট নম্বর দেওয়া হচ্ছে। এভাবেই স্কলারশিপের কোটি কোটি টাকা তছরুপ হচ্ছে বলে অভিযোগ। এক অভিযোগকারী রবিউল হক বলেন, ‘ছাত্র-ছাত্রীদের কোটি কোটি টাকা নয়ছয় হচ্ছে। বিডিও-আইসে চিঠি করেছি, কেউ সদুত্তর দেয়নি।’ রাজ্য সরকারের পোর্টালে নাম রয়েছে করণদিঘির চৌনাগরা গ্রামের বাসিন্দা গীতা সিংয়ের। তিনি অনেক আগেই পড়াশোনা ছেড়েছেন। তাঁর বিয়ে হয়ে গিয়েছে। সন্তান রয়েছে। তাঁর নামে গত তিন বছর ধরে স্কলারশিপের টাকা তোলা হচ্ছে বলে পোর্টালে দেখাচ্ছে। গীতা সিংহ বলেন, ‘আমি আবেদনও করিনি, টাকাও পাইনি। যে বা যারা আমার টাকা নিয়েছে, তারা ফিরিয়ে দিক।’ একই দাবি, সাদিপুর গ্রামের বাসিন্দা মরিচলাল সিংয়ের। তাঁর ছেলে সন্তোষ সিং ভিনরাজ্যে কাজ করেন। তাঁর নামেও স্কলারশিপের টাকা তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ। মরিচলাল সিংহ বলেন, ‘আমার ছেলের টাকা দরকার, টাকা পেলে পড়াশোনা করতে পারবে।’ রাজ্য সরকারের পোর্টালে দেখা যাচ্ছে, যে পড়ুয়ার নামে স্কলারশিপের টাকা তোলা হচ্ছে, তাঁদের রায়গঞ্জের একটি বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়া বলে দেখানো হয়েছে। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মহম্মদ আজহারউদ্দিন বলেন, ‘এরা কেউ স্কুলের পড়ুয়া নয়, তদন্ত হোক।’ ইতিমধ্যেই, স্কলারশিপ দুর্নীতির অভিযোগে, করণদিঘি থানা ও স্থানীয় বিডিও’র কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। করণদিঘির বিডিও নিতিশ তামাং বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। তদন্তের পর বলা যাবে কী হয়েছে।’বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে নগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ মন্ত্রী বুলুচিক বরাইক বলেন, ‘এটা হওয়া উচিত নয়। কোন কোন স্কুলে হয়েছে, আমি বিডিওকে বলব এবং বিভাগীয় তদন্ত হবে।’