মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে অবৈধভাবে জলাশয় ভরাটের অভিযোগ,ক্ষোভ স্থানীয়দের মধ্যে,শুরু রাজনৈতিক চাপানউতোর

মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে অবৈধভাবে জলাশয় ভরাটের অভিযোগ,ক্ষোভ স্থানীয়দের মধ্যে,শুরু রাজনৈতিক চাপানউতোর

     

     

    উজির আলি,মালদা, ১৩ ফেব্রুয়ারি : মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর আইটিআই কলেজের সামনে অবৈধভাবে জলাশয় ভরাটকে ঘিরে শাসক ও বিরোধীদের মধ্যে তরজা শুরু হয়েছে। শুধু আইটিআই কলেজের সামনে নয়, একাধিক এলাকায় অবৈধভাবে জলাশয় ভরাট করার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ক্ষোভ জমেছে এলাকাবাসীর মনে। এই নিয়ে শাসক দলকেই কাঠগড়ায় তুলেছে বিজেপি। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।

     

    হরিশচন্দ্রপুর আইটিআই কলেজের পাশের জলাশয় ভরাট করার অভিযোগ উঠেছে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, হরিশ্চন্দ্রপুরে বিভিন্ন জায়গায় মাটি কেটে অবৈধভাবে জলাশয় ভরাট করা হচ্ছে। এবং মাটি নিয়ে যাওয়ার সময় ট্রাক্টরের হুড খোলা রয়েছে এবং তা থেকে মাটি পড়ে রাস্তা বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। ফলে দূর্ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ। আইটিআই কলেজের সামনে জলাশয় ভরাটের অভিযোগ জেনে এইদিন ভূমি পরিদর্শে আসেন ভূমি সংস্করক আধিকারিক। তিনিও বলেন বিষয়টি অবৈধ এবং এ নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট বার্তা পাঠানো হবে এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি ওই জলাশয় ভরাটের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

     

    স্থানীয় বাসিন্দা চন্দ্রনাথ রায় তার ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, “এ আর নতুন কী? বারবার প্রশাসনকে বলা হয়েছে, কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। হাসপাতাল থেকে বাজারের সমস্ত জল যাবে কোথায়? জনপ্রতিনিধিদের একাংশ শুধু পয়সা রোজগারের ফন্দি আঁটতেই ব্যাস্ত।”

     

    হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের রাজস্ব আধিকারিক অ্যান্থনি হাঁসদা জানান, “আমরা উর্ধতন কতৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট করব। আইনত জলাশয় ভরাট করা যায়না। অন্যায় ভাবে লুকিয়ে লুকিয়ে করছে। এর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

     

    হরিশ্চন্দ্রপুর বিজেপির দক্ষিণ মন্ডলের সভাপতি রূপেশ আগরওয়াল বলেন, “আইটিআই কলেজের পাশে একটা জলাশয় অবৈধভাবে ভরাট করা হচ্ছে। এতে মদত দিচ্ছে তৃণমূল ও বিএলআরও অফিস। শুধু এখানেই নয়, সমস্ত হরিশ্চন্দ্রপুরেই এমন অবৈধকাজ জলাশয় বুজিয়ে ফেলা হচ্ছে। প্রয়োজনে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবো।”

     

    হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি মানিক দাস অবশ্য বলেন, “যেটা হচ্ছে সেটা অবৈধভাবে হচ্ছে। বিএলআরও সাহেব দেখবেন। এসব বিজেপির কালচার, অন্যের উপর দায় চাপানো। তারা ভোট বৈতরণী পার করতেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছে। মাটি ভরাটে আমরা কাউকে মদত দিতে যাব কেন?” কেউ বেনিয়ম করলে প্রশাসন পদক্ষেপ করবে।

     

    হরিশচন্দ্রপুরে এই ঘটনা নতুন নয় বলে খবর। জমি মাফিয়াদের রমরমা দিন দিন বেড়েই চলেছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। বারংবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও কোনো সুরাহা হয়নি বলে জানাচ্ছেন তারা। এইসব মাফিয়া সকলেই তৃণমূল মদতপুষ্ট, এমনটাই দাবি বিজেপির। তবে ভোটের মুখে অবৈধভাবে জলাশয় ভরাটের অভিযোগ এবং তাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তরজা নিয়ে সরগরম হয়ে উঠেছে হরিশ্চন্দ্রপুরের রাজনৈতিক মহল।