আশঙ্কা থাকলেও ঝড় আসেনি তবে বাঁধের ভাঙন রোখা গেল না

নিজস্ব প্রতিবেদক:- আশঙ্কা থাকলেও ঝড় আসেনি। তবে বাঁধের ভাঙন রোখা গেল না। জল ঢুকেছে বেশ কিছু এলাকায়। ক্ষতি হয়েছে জমি, বাড়ির।নিম্নচাপ ও কটালের সাঁড়াশি চাপে মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বিভিন্ন উপকূল এলাকায়। বুধবারও দিনভর হালকা বৃষ্টি হয়েছে। অন্য দিকে, পূর্ণিমার কটালের ফলে নদীতে জলও বেড়েছে। এর জেরে মঙ্গলবার রাত থেকে কাকদ্বীপ মহকুমা এলাকার একাধিক জায়গায় বাঁধ ভাঙে, কোথাও নামে ধস। অনেক জায়গায় আবার বাঁধ উপচে নোনা জল ঢোকে এলাকায়। বুধবার রাতে জোয়ারের ফলেও কয়েক জায়গায় বাঁধ ভাঙে। বিশেষ করে, সাগরের বঙ্কিমনগরের বটতলা নদীর প্রায় ৭০০ ফুট বাঁধের একাধিক জায়গা ভেঙে জল ঢোকে এলাকায়। সুমতিনগর, বোটখালি, মহিষামারি এবং নামখানার ঈশ্বরীপুর এলাকাতেও জল ঢুকেছে। বুধবার বিকেল পর্যন্ত প্রশাসনের তরফে বাঁধ মেরামতির কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিযোগ।আলিপুর হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, বৃহস্পতি ও শুক্রবারও বৃষ্টি হবে। উপকূল এলাকার বাসিন্দাদের আশঙ্কা, গুরুপূর্ণিমার কটালের জেরে নদী ও সমুদ্রের জল বাড়ছে। সঙ্গে রয়েছে পূবালি হাওয়ার জের। এ দিকে, একাধিক বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। ফলে আরও বাঁধ ভেঙে এলাকা জলমগ্ন হওয়ার আশঙ্কায় রাত জাগছেন মানুষ।স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ফি বছর বর্ষার সময়ে এলাকায় একই ছবি ফিরে আসে। ফাটল ধরে বাঁধে, জলের চাপে বাঁধ ভেঙে বানভাসি হয় গ্রামের পর গ্রাম।স্থানীয় বাসিন্দা দীপক পাত্র বলেন, ‘‘সকালে জোয়ারের সময়ে বাঁধ ভেঙে জল ঢুকে বেশ কয়েকটি বাড়ি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। চাষের জমিতেও জল ঢুকেছে। অনেকেই ঘর ছেড়ে কাছাকাছি স্কুলে রাত কাটাচ্ছেন।’’ আর এক বাসিন্দা কবিতা ভান্ডারী বলেন, ‘‘প্রতিবার কটালের সময়ে বাড়ির উঠোনে জল চলে আসে। ছোট ছেলেমেয়েদের নিয়ে কিছুটা দূরে পিচের রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকি। জল নেমে গেলে বাড়ি ফিরি। এই দুর্ভোগ কতদিন চলবে জানা নেই।’’স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রশাসনের তরফে প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরে বার বার বাঁধ মেরামতি করলেও তা বেশিদিন স্থায়ী হয় না। তাঁদের দাবি, ক্রংক্রিটের বাঁধ না হলে সমস্যা মিটবে না।সাগর ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, বঙ্কিমনগর এলাকায় ২ কিলোমিটার কংক্রিটের পাকা বাঁধ ছিল। আমপানে ওই বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বহু জায়গায় ফাটল দেখা দেয়, অনেক জায়গায় বাঁধ দুর্বল। মেরামতির জন্য এখনও পর্যন্ত ১১ দফায় সেচ দফতর থেকে প্রায় ৩ কোটি টাকা অনুমোদিত হয়েছে। সব টাকা খরচের হিসেবও দেখানো হয়েছে। একশো দিনের কাজেও বাঁধ মেরামতি করা হয়েছে। অভিযোগ, এরপরেও বাঁধের হাল ফেরেনি।সাগর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি স্বপন প্রধান বলেন, ‘‘পূর্ণিমার কটালের জেরে সাগরের কয়েকটি জায়গায় বাঁধ ভেঙে জল ঢুকেছে। সাগর পঞ্চায়েত সমিতি ও ব্লক প্রশাসনের তরফে বাঁধের অবস্থা সেচ দফতরে জানানো হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব বেহাল বাঁধগুলি সংস্কারের চেষ্টা করছি।’’