|
---|
সুবিদ আলী মোল্লা, উত্তর চব্বিশ পরগনা : উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙা থানার অন্তর্গত মসলন্দপুর বিজ্ঞান চেতনা মঞ্চ তার সূচনা লগ্ন থেকে কুসংস্কার বিরোধী আন্দোলন ও মনোত্তর চক্ষুদান আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা নিয়ে চলেছে। অন্ধত্ব মানব জীবনের একটি অভিশাপ । যে মানুষ কোনদিন পৃথিবীর আলো দেখেনি, সৃষ্টির রূপ উপলব্ধি করেনি আজ তারাও মহতী মরণোত্তর চক্ষু দান আন্দোলনের ফলে সৃষ্টির সৌন্দর্যকে অবলোকন করতে পারবে। মৃত্যুর পরে দাহ অথবা সমাধিস্ত করার ফলে চোখের অমূল্য সম্পদ কর্নিয়া নষ্ট হয়ে যায়। মানুষের মৃত্যুর পর কর্নিয়া যদি দান করা হয় যে কোনদিন পৃথিবীর আলো দেখেনি সে দেখতে পাবে পৃথিবীর আলো।বর্তমান বিশ্বে চার কোটি কুড়ি লক্ষ মানুষ অন্ধত্বের শিকার ।এই মুহূর্তে ভারতে প্রায় তিন কোটির উপর মানুষ অন্ধত্বের অভিশাপ বহন করছে। WHO এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী উন্নত দেশে জনসংখ্যার 0.2,% মানুষ আর উন্নয়নশীল দেশে ০.৬% মানুষ অন্ধত্বের শিকার। আমাদের দেশে প্রয়োজনে নিরিখে এই চক্ষুদান খুবই অপ্রতুল। পৃথিবীর মধ্যে ছোট্ট একটি দেশ শ্রীলংকা যেখানে সকল নাগরিক মৃত্যুর পরে তাদের কর্নিয়া দান করেন। তাদের নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়েও অন্য দেশকে দিতে পারে কিন্তু পরিতাপের বিষয় ভারতবর্ষের মত সুবিশাল দেশে বিভিন্ন অন্ধ সংস্কারের কারণে এই মরণোত্তর চক্ষুদান আন্দোলন বাধাপ্রাপ্ত হয়। ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তে বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গোবরডাঙ্গা থানার অন্তর্গত মসলন্দপুর বিজ্ঞান চেতনা মঞ্চ তার সূচনা পর্ব থেকে মরণোত্তর চক্ষুদান ও দেহদান আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে । বিজ্ঞান মঞ্চের সম্পাদক তপন বিশ্বাস জানালেন, এ পর্যন্ত ৬৪ জোড়া কর্নিয়া ও ১৭ টি দেহ বিজ্ঞান মঞ্চের দায়িত্বে চক্ষু ব্যাংকে ও হাসপাতালে দেওয়া হয়েছে। ১৮ই মার্চ ১৯৯৯ সালে প্রথম কর্নিয়া দাত্রী ছিলেন গোবরডাঙ্গার সুধারানী দত্ত এবং ২০২৩ সালে যে মহতী প্রাণ চক্ষুদান করলেন তিনি হলেন প্রয়াত শ্রীমতি গীতারানী বিশ্বাস (৮৪) ( গোবরডাঙ্গা) এবং সর্বশেষ দেহদাতারা হলেন মধ্যমগ্রামের প্রয়াত কার্তিক চন্দ্র ঘোষ (৭৭)ও গোবরডাঙ্গার পশুপতি নাথ রক্ষিত।