|
---|
লুতুব আলি, বর্ধমান : আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সমাজে নিবেদিত নারীদের সম্মাননা। ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। আক্ষরিক অর্থে মনকে ছুঁয়ে যাওয়ার মত ঐতিহ্যে অমলিন আন্তর্জাতিক নারী দিবস টি পালন করলো বর্ধমানের অগ্রজ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বর্ধমান সদর প্যায়ারা নিউট্রিশন ওয়েলফেয়ার সোসাইটি। এদিন দুপুর তিনটের সময় বর্ধমান উদয়চাঁদ জেলা গ্রন্থাগারে সংস্থাটি এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। অনুষ্ঠানের নান্দনিক সূচনা পর্বে সংস্থার সম্পাদক প্রলয় মজুমদার স্বাগত ভাষণ দেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য এই অনুষ্ঠানে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের ক্ষমতায়ন ও নারী পুরুষ সমান অধিকার প্রতিষ্ঠায় যারা বাস্তবে প্রেক্ষাপটে কাজ করে চলেছেন এমন ৩০ জন নারীর হাতে তুলে দেওয়া হল শংসাপত্র ও স্মারক। এমন অনুষ্ঠানের আয়োজন দেখে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলের উচ্চ প্রশংসিত করেন। অনুষ্ঠানে কেবল সংবর্ধনা নয় নারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখতে ও নারীদের পুষ্টির মান বজায় রাখতে দেওয়া হলো মিশ্র ডাল ও আমন্ডের প্যাকেট যা ভিটামিন ই, ফাইটোকেমিক্যাল ও ফাইটোই স্ট্রোজেন সমৃদ্ধ যা মহিলাদের হরমোন ব্যালেন্স রক্ষায়, অক্সিডেটিভ ট্রেস নিয়ন্ত্রণে ও অস্থি ক্ষয় প্রতিরোধে একান্ত সহায়ক। সংস্থার সম্পাদক প্রলয় মজুমদার বলেন, নারী শক্তির জাগরণ ছাড়া একটা দেশের একটা জাতির উন্নয়ন সম্ভব নয়। একথা বহু যুগ আগে বলে গেছেন বীর সন্ন্যাসী স্বামী বিবেকানন্দ কিন্তু তারপরেও লিঙ্গ বৈষম্য সময়ে সময়ে প্রকট হয়ে ওঠে! নারীকে আপন ভাগ্য জয় করার অধিকার যতদিন না দেওয়া যাবে ততদিন বাস্তবে দেশের উন্নতি সম্ভব হবে না, তাই নারীর ক্ষমতায়নের স্বার্থে এই সংস্থা ক্রমাগত কাজ করে চলেছে। সমাজে যে সমস্ত নারীরা নিরবে নিভৃতে সমাজে প্রভূত উন্নতির সাধনের জন্য বিভিন্নভাবে কাজ ও পরিষেবা দিয়ে চলেছেন তাঁদের এদিন সংস্থার পক্ষ থেকে যে সমস্ত নারীদের সম্মাননা তুলে দেয়া হল তাঁরা হলেন, শিখা ভট্টাচার্য, শিখা দেবী ক্যান্সার বিজয়িনী মিসেস ইন্ডিয়া ট্রেন্ড সেন্টার এবং দিল্লির পতিতা পল্লীর শিশুদের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নিরলস ভাবে কাজ করে চলেছেন। তাঁকে মহানন্দা সম্মানে ভূষিত করা হয়। বৃক্ষ রোপনের স্মরণীয় অবদানের জন্য সায়েদা সালিনা বেগম পেলেন নব পত্রিকা-সম্মাননা, শিক্ষাক্ষেত্রে অবদানের জন্য জাতীয় শিক্ষিকা ড. কৃষ্ণা মুখার্জিকে দেয়া হয় বিদুষী সম্মেলনা, বর্ধমান উদয়চাঁদ মহাবিদ্যালয় এর অধ্যক্ষা ড. মল্লিকা চক্রবর্তীকে শিক্ষাক্ষেত্রে অবদানের জন্য দেয়া হয় বিদুষী সম্মাননা, স্বামী দুর্গেশানন্দ পুরি মহারাজের জননী রুমা দত্তকে দেয়া হয় রত্নগর্ভা সম্মাননা, বাচিক শিল্পী নৌরিন ফিরদৌস পেলেন বাগ্মী সম্মাননা। এদিন এই অনুষ্ঠানে যে ১০ জন সাংবাদিকদের মাহাথি সম্মানের ভূষিত করা হয় তাঁরা হলেন কুহেলি নস্কর, অস্মিতা বসু, সুজাতা মেহেরা, রিম্পা চক্রবর্তী, রিম্পা সোনকার, সায়নী সরকার, শ্রীজা দে, বিউটি স্যান্যাল, ঝিলিক মুখার্জি, নিকিতা দে। গ্রামীণ চিকিৎসায় অবদানের জন্য শেখ নুরুন্নিসা কে অমৃতা সম্মানে ভূষিত করা হয়। লাবনী ভট্টাচার্য পেলেন দীপান্বিতা সম্মান। পশুপ্রেমে বিশেষ অবদানের জন্য রিনা দাঁ কে দেয়া হলো সমদর্শী সম্মাননা। বর্ধমান স্টেশন চত্বরে যে তিনজন নারী বিস্কুট বিক্রি করে সংসার চালান তারা হলেন সন্ধ্যা দাঁ, আলপনা সাঁতরা, সাকিমা ইয়াসমিন এদের দেয়া হলো শ্রীরূপা সম্মাননা। শিল্পকলায় বিশেষ অবদানের জন্য পূর্বাশা মন্ডল সাধুকে দেয়া হলো কলাবতী সম্মাননা। সাহিত্য ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য রিংকি বোস সেন কে দেয়া হলো পদ্মাবতী সম্মাননা। এই স্তরে আরেক মহীয়সী নারী পার্বতী মিত্র কে দেয়া হলো পদ্মাবতী সম্মাননা। সবজি বিক্রি করে সংসার প্রতিপালন করেন সুজাতা রায় তাকে দেয়া হলো শ্রীরূপা সম্মাননা। মৃৎশিল্পে অসাধারণ অবদানের জন্য লক্ষীপালকে দেয়া হলো মৃন্ময়ী সম্মাননা। শিশুদের সেবায় অসাধারণ নবদানের জন্য ভানি মা পেলেন মহামায়া সম্মাননা। এদিন এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বামী ত্রিদেবানন্দাজি মহারাজ। সংস্থার মিডিয়া অফিসার অঙ্কিতা সাম বলেন, এ দিনের বর্ণময় অনুষ্ঠানে সমাজে বিশেষ অবদানের জন্য নারীদের সম্মাননা দিতে পেরে ভীষণ ভালো লাগছে।