|
---|
নিজস্ব প্রতিবেদক, মেদিনীপুর: আবারও নিজের সৃষ্টি দিয়ে তাক লাগালেন প্রসেনজিৎ কর।বুধবার সৌরভ গাঙ্গুলীর জন্মদিনে সৌরভকে শুভেচ্ছা জানিয়ে পেন্সিলের শীষের মাথায় সৌরভের প্রতিকৃতি বানিয়ে তাক লাগালেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশপুর ব্লকের শীর্ষা ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের রানীয়ড গ্রামের বাসিন্দা মাইক্রো আর্ট শিল্পী প্রসেনজিৎ কর। পেশায় মোটর মেকানিক রানীয়ড় ক্ষুদিরাম বিদ্যাপীঠের প্রাক্তন ছাত্র প্রসেনজিৎ বরাবরই এই রকম।
সমসাময়িক বিভিন্ন ঘটনা, আলোচিত বিষয়, ব্যক্তি বা উৎসবকে নিজের সৃষ্টি দিয়ে বেশীর সময় নিজের শ্রদ্ধা জানান প্রসেনজিৎ।বাবা মোটক মেকানিক মুক্তিপদ কর ও মা গৃহবধু ছন্দা করের দুই ছেলে মেয়ের মধ্যে প্রসেনজিৎ বড়। বোন পূজার বিয়ে হয়ে গেছে। বছর ২৭ এর অবিবাহিত যুবক প্রসেনজিৎ উচ্চ মাধ্যমিক পাশের মেদিনীপুর আই টি আই থেকে প্রোডাকশন ম্যানুফ্যাকচারিং ট্রেডে টেকনিক্যাল ড্রিগ্রী নিয়ে পাশ করেছেন। পাশাপাশি নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি বিষয়ে স্নাতক হয়েছেন প্রসেনজিৎ। বর্তমানে বাবা বছর ৫৮’র পৌঢ় মুক্তিপদ করের রানীয়ড় বাজারে অবস্থিত মোটর সাইকেল গ্যারেজে সহকারী মেকানিক হিসেবে কাজ করেন প্রসেনজিৎ। পাশাপাশি সময় বাঁচিয়ে মনের আনন্দে তৈরি করেন নানা সৃজনশীল শিল্প। পেন্সিলের শীষে বিশ্বের সবচেয়ে ছোট আকারের দুর্গা প্রতিমা তৈরির কৃতিত্ব প্রসেনজিৎ এর দখলে। পালকের উপর নানা রকম ছবি এঁকে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। একটি মাত্র পায়রা পালকে গত ক্রিকেট বিশ্বকাপের স্কোয়াডে থাকা সমস্ত ভারতীয় ক্রিকেটারদের ছবি এঁকে তাক লাগিয়ে ছিলেন প্রসেনজিৎ। কদিন আগেই একটিমাত্র অশ্বত্থ পাতার মাঝে কাটিং করে ক্যামেরার সহ সত্যজিৎ রায়ের ছবি তৈরি করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন তাঁর অনুরাগীদের। এইসব কাজ করে কয়েক বছরের মধ্যেই প্রসেনজিৎ এর খ্যাতির মুকুটে যুক্ত হয়েছে নানা পালক।২০১৯ সালের নভেম্বরে সারা বাংলা কুইজ কার্নিভাল সিজিন ফোরের তারকা খচিত মঞ্চে মেদিনীপুর কুইজ কেন্দ্রে সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি প্রসেনজিৎ এর হাতে তুলে দিয়েছে “মেদিনীপুর রত্ন” পুরস্কার। পাশাপাশি স্বীকৃতি পেয়েছেন ইন্ডিয়া বুক অফ্ রেকর্ডস, ইন্টারন্যাশনাল বুক অফ্ রেকর্ডস, ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস্ ইন্ডিয়া,রয়েল সাকসেস ইন্টার ন্যাশনাল বুকস্ অফ্ রেকর্ডস থেকে। বুধবার পেন্সিলের শীষের উপর আট ঘণ্টা সময় ব্যয়ে তাঁর তৈরি সৌরভ গাঙ্গুলীর প্রতিকৃতির ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেন প্রসেনজিৎ। বরাবরের মতো তাঁর অনুরাগী ও নেটিজেনেরা প্রশংসায় ভরিয়ে দেন। প্রসেনজিৎ বলেন, সংসার চালানোর জন্য গ্যারেজের কাজ করতে করতেই সময় চলে যায়,শিল্প সৃষ্টির দিকে সেভাবে সময় দিতে পারেন না, অনেক সময় রাত জেগে ঘন্টার পর ঘন্টা ব্যয় করে শিল্প তৈরি করতে হয়। এখন করোনা আবহে গ্যারেজে সেভাবে কাজের চাপ না থাকায়, কিছুটা সময় হাতে পেয়ে কিছু কাজ করছেন। প্রসেনজিৎ এর কথায় যদি সরকারি কোন কাজ পেতেন তাহলে হয়তো শিল্প সৃষ্টিতে আর একটু মনোযোগী হতে পারতেন।
প্রসেনজিৎ ইতিমধ্যে এবছর ফেব্রুয়ারিতে মেদিনীপুরে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের চারুকলা পর্ষদের উদ্যোগে ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরের সহযোগিতায় আয়োজিত ছদিনের রাজ্যস্তরীয় আবাসিক শিবিরে ইন্টারভিউ দিয়ে নিজের যোগ্যতায় সুযোগ করে নিয়েছিলেন।শিবিরে নিজের কাজের মধ্য দিয়ে অন্যান্য অনেক শিল্পীর মতো শিবিরের পরিচালকবৃন্দ ও পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা তথ্য সংস্কৃতি আধিকারিক অনন্যা মজুমদারের প্রশংসা কুড়িয়েছেন প্রসেনজিৎ কর।