আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে প্রশাসনিক বৈঠক শাসন থানায়

রেশমিকা ইয়াসমিন,শাসন : পবিত্র ঈদুল আজহা মহান আল্লাহর উদ্দেশ্যে নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী পশু কোরবানি করা মুসলমানদের প্রাচীন ঐতিহ্য।আল্লাহতায়ালা তার প্রিয়নবী হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর আনুগত্য পরীক্ষা করার জন্য তাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন তার সবচেয়ে প্রিয় বস্তুকে কোরবানি দিতে। স্নেহের পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.) ছিলেন তার সবচেয়ে প্রিয়। স্নেহ-মমতায় ভরা জগৎ-সংসারে পিতার পক্ষে আপন পুত্রকে কোরবানি দেওয়া অসম্ভব এক অগ্নিপরীক্ষা। কিন্তু আল্লাহর নির্দেশ পেয়ে হজরত ইব্রাহিম (আ.) বিনা দ্বিধায় আপন পুত্রকে কোরবানি দিতে উদ্যত হয়েই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। মহান আল্লাহর নির্দেশে ছুরির নিচে প্রিয় পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.)-এর স্থলে কোরবানি হয়ে যায় একটি দুম্বা। এই প্রতীকী ঘটনার অন্তর্নিহিত বাণী স্রষ্টার প্রতি পরিপূর্ণ আনুগত্য ও ত্যাগ স্বীকার।

    পবিত্র ঈদুল আজহার উদ্দেশ্য স্রষ্টার সন্তুষ্টির জন্য নিজেকে উৎসর্গ করতে প্রস্তুত থাকা। পশু কোরবানি করা হয় প্রতীকী অর্থে। আসলে কোরবানি দিতে হয় মানুষের সব রিপুকে : কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, পরনিন্দা ও পরশ্রীকাতরতা। সৎ পন্থায় উপার্জিত অর্থের বিনিময়ে কেনা পশু কোরবানির মাধ্যমেই তা সম্পন্ন হয়। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, কোরবানির এই মর্মবাণী আমাদের সব সময় স্মরণে থাকে না, বরং ত্যাগের সাধনার চেয়ে বড় হয়ে ওঠে ভোগবিলাস ও অপচয়। আধ্যাত্মিকতাকে ছাপিয়ে যায় বস্তুগত আনুষ্ঠানিকতা। কোরবানির মধ্যে যে উৎসর্গের মহিমা রয়েছে, তার চেয়ে বড় হয়ে ওঠে ভোজনের উৎসব। অথচ এ দেশে বিপুলসংখ্যক দরিদ্র মানুষ অন্নকষ্টে ভোগে, অনেক শিশু অপুষ্টিজনিত রোগব্যাধির শিকার। অনেক মানুষের মাথার ওপর আচ্ছাদন নেই, তারা রোদে পোড়ে, বৃষ্টিতে ভেজে, তীব্র শীতে কষ্ট পায়। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানহীন এই দরিদ্র জনগোষ্ঠীর দুঃখণ্ডদুর্দশার কথা চিন্তা করা এবং সাধ্যমতো তাদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়ানো সামর্থ্যবানদের একান্ত কর্তব্য।
    পবিত্র ঈদুল আজহায় সারা দেশে একই দিনে বিপুলসংখ্যক পশু কোরবানি হয়। উক্ত দিনে এলাকার শান্তি সম্প্রীতি বজায় রাখতে পঃবঃ সরকারের মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রাজ্যের প্রতিটি থানায় সমাজের সর্বস্তরের মানুষের নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার উঃ ২৪ পরগনা জেলার বারাসাত পুলিশ জেলার অন্তর্গত শাসন থানার উদ্যোগে মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় উঠে আসে ঈদের দিন এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে। নানা কারণে পরিবেশের পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করা একটি সমস্যা হয়ে ওঠে। তাই সবার উচিত যেখানে-সেখানে পশু জবাই করার প্রবণতা ত্যাগ করা। কোরবানির পর পশুর রক্ত, মলমূত্র, হাড় ইত্যাদি ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করা, নিজ নিজ লোকালয় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব সবার।কোরবানির পশুর চামড়া কেনাবেচার ক্ষেত্রেও সততাণ্ডশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে হবে, যেন কোনো ধরনের অসদুপায় বা কারসাজির সুযোগ কেউ না পায়।
    শাসনের স্বস্তি ভিলেজে অনুষ্ঠিত ঈদূল আজহা উপলক্ষ্যে প্রশাসনিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এসডিপিও শাসন, আইসি মোঃ ফিরোজ আলী, স্থানীয় জেলা পরিষদের সদস্য তথা জেলা পরিষদের বন ও ভূমি স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ একেএম ফারহাদ, বিশিষ্ট সমাজকর্মী শ্রী শম্ভুনাথ ঘোষ, মনোয়ারা বিবি, ইফতেখার উদ্দিন, মেহেদী হাসান,মনিরুল ইসলাম মনি,আছের আলী, মান্নান আলী, পীরজাদা হাফেজ মোস্তাক আহমেদ সহ প্রশাসনের আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধি।