অর্থের অভাবে বন্ধ মন্দির নির্মাণ, অর্থ সাহায্য ফজিলার

আজিজুর রহমান,গলসি : অর্থের অভাবে বন্ধ ছিল রাস মন্দির নির্মাণের কাজ। বন্ধ মন্দিরের কাজ শুরু করতে অর্থ সাহায্য করে পাশে দাঁড়ালেন গলসির রাইপুর গ্রামের মুসলিম মহিলা ফজিলা বেগম। তিনি পূর্ব বর্ধমান জেলার গলসি ১ নং ব্লকের পুর্তের কর্মাধক্ষ্যা। জানা গেছে, গলসির লোয়া গ্রামে অবস্থিত শ্যামসুন্দর মন্দির যেটিকে সকলেই রাস মন্দির বলে থাকেন। ওই মন্দিরে নিত্য তিনবার পুজিত হন রাধাকৃষ্ণ। মুল মন্দিরটি  সাড়ে তিনশো বছর আগের ছিল। যা ভেঙে নতুন মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল। স্থানীয় ক্লাব সদস্য তন্ময় ভট্টাচার্য বলেন, তিনি কয়েকমাস ধরে তিনি দেখছেন মন্দিরটি বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। ঠাকুরের সেবাইতরা এর ওর কাছে চেয়ে চিন্তে মন্দিরটি নির্মান শুরু করছেন। সেবাইতদের অধিকাংশ পরিবার গুলি দরিদ্র বলেই থমকে ছিল মন্দির নির্মাণের কাজ। বর্তমানে ওই মন্দিরকে কেন্দ্র করে রাস পুণিমা চলছে। একটি মেলাও বসেছে গ্রামে। তাই তাদের ক্লাবের ছেলেরা ফজিলা বেগম ও তার স্বামী জাহির আব্বাসকে কে রাস পূর্ণিমায় আমন্ত্রণ করেন। পাশাপাশি মন্দিরের কাজ বন্ধ থাকার কথা জানান। এরপরই শনিবার রাতে এসে ফজিলা বেগম মন্দির কমিটির হাতে ১০ হাজার টাকা একটি চেক তুলে দেন। তিনি বলেন, এমন কাজের জন্য আমরা সকলেই ফজিলার কাছে কৃতজ্ঞ। সেবাইত অসিত মুখার্জি বলেন বাপ দাদুর আমল থেকে তারা ১৬ জন সেবায়েত মিলে ওই মন্দিরে নিত্য পূজো করে আসছেন। তাদের সকল সেবাইতরা দরিদ্র। বর্তমানে তার পালা চলছে।  তিনি বলেন, প্রায় সাড়ে তিনশো বছর ধরে ওই শ্যামসুন্দর মন্দিরে রাধা কৃষ্ণ পুজে করে আসছেন তাদের বাপ দাদুরা। পূর্ব পুরুষরা রাধাকৃষ্ণকে নিত্য তিনবার করে পুজো করতেন। সকালে ফল মিষ্টি, দুপরে অন্নভোগ ও রাতে নিত্য আরতি করা হয়। সেই নিয়ম আজও চালু রয়েছে। বর্তমানে ওই মন্দিরের ১৬ জন সেবাইত আছেন। তিনি বলেন, আগে ওখানে পুরাতন চুল সুরকির মন্দির ছিল। যা কুড়ি বছর আগে একবার সারাই করা হয়েছিল। তবে পাঁচ ছয় বছর আগে মন্দিরটি রুগ্ন দশা নেয়। এরপরই মন্দিরটি ভেঙে ফেলেন তারা। শুরু হয় নতুন মন্দির নির্মাণের কাজ। অর্ধেক কাজ হয়েছে। তবে টাকার জন্য ছয় মাস আগে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এখনও আট দশ লক্ষ টাকার প্রয়োজন। শনিবার ফজিলা টাকা দেওয়ায় পুনরায় কাজ শুরু করবেন। এমন কাজের জন্য সেবাইতদের পক্ষ থেকে তিনি তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তাছাড়াও বাকি থাকা মন্দিরটি যাতে সম্পূর্ণ হয় সেই জন্য সকলের কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন। ফজিলা বেগম বলেন, মন্দিরটির কাজ বন্ধ রয়েছে শুনে দশহাজার টাকা দিয়েছি। যাতে কাজটা শুরু হয়। পরে আবারও কিছু সাহায্য করবো। তিনি বলেন, বিভিন্ন মানুষ তার কাছে সাহায্যের আবেদন করেন। তিনি তার সাধ্যমত সব জায়গাতেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। মন্দির বা মসজিদ বড় কথা নয় মানুষের পাশে দাঁড়ানো তার মূল উদ্দেশ্য।