আজিম প্রেমজিরাই ভারতের আদর্শ হোক

ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ : দেশ ভাগের সময় মোহাম্মদ আলি জিন্নাহ প্রচুর রাইস মিলের মালিক মোহাম্মদ হাশিম প্রেমজিকে পাকিস্তানে নাগরিকত্ব নেওয়ার আমন্ত্রণ জানায়। বোঝায় মুসলমানদের মাঝে সে সুরক্ষিত থাকবে, ব্যবসা আরো বাড়াতে পারবে। হাশিম সাহেব হাত জোড় করে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। বলে হিন্দুস্তানই আমার দেশ। কোথাকার কে নতুন দেশ বানালো বলে ওখানে চলে যেতে হবে? প্রেমজিদের সমাধি এই মাটিতেই ছিল, আছে, থাকবে!

    মোহাম্মদ হাশিমের ছেলে আজিম প্রেমজি। উইপ্রোর মালিক। ভারতের তথ্য প্রযুক্তি শিল্পের বেতাজ বাদশা! দশম ধনী ব্যক্তি এ দেশের। চাইলেই তৃতীয় বা চতুর্থ ব্যক্তি হতে পারতেন কিন্তু বাবার মতোই তো আজিম। দুম করে ২০১৮ সালে সিদ্ধান্ত নিলো ১৫,০০০ কোটি টাকা দান করে দেবে। নিজের সম্পদের ৫০%। কে কতো বড়লোক হওয়ার কম্পিটিশনে না গিয়ে শিক্ষা- স্বাস্থ্য খাতে টাকা ঢালবে। কিছু একটা ছাপ ছেড়ে যাবে। সেই বছর অবধি ১৫,০০০ কোটি টাকার এই অনুদানটিই ভারতের সব থেকে বড় অনুদান। এর বেশি অর্থ কেউ আজ অবধি দান করেনি।

    বিল গেটস, ওয়ারেন বাফে ছাড়া এই ভারতীয় মুসলমান লোকটিই এই দমটা রেখেছেন, সাফল্যের শিখরে বসে আধা সন্ন্যাসী সাজার! একটা গুজব উঠেছিল, কোরোনা মোকাবিলায় উনি ৫০,০০০ কোটি দান করেছেন। খবরটা ভুল। ২০২০ না, ২০১৯ সালে পৃথিবীর সমস্ত ধনী মানুষদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দান করেছেন প্রেমজি। কতো শুনবেন? ৫২,৭৫০ কোটি টাকা।

    আজিম প্রেমজি শিক্ষা, জনস্বাস্থ্য, সকলের পেটে ভাত আর কারিগরি শিক্ষা প্রশিক্ষণ দিয়ে যুবকদের পৃথিবীর সবচেয়ে Skilled workforce বানানোর এক অসম প্রতিযোগিতায় নেমেছে।

    অজিম প্রেমজীর প্রচার জরুরি কারণ কয়েকজনকে দিয়ে অনেকজনকে তুল্যমূল্য বিচার করা যায় না। ভারতের জামাতে সুফি থাক, লালন থাক, রামকৃষ্ণ পরমহংস আর সন্ত কবির থাক। আজিম প্রেমজিরও দেশ বটে এটা৷ রতন টাটা, আজিম প্রেমজির স্বপ্নের হিন্দুস্তান অক্ষয় থাক! দেশপ্রেম এটাই।

    সূত্র: সোশ্যাল মিডিয়া