ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ মামলার রায় ঘোষণা শীর্ষ আদালতের

নতুনগতি প্রতিবেদক: ঐতিহাসিক বাবরি মামলার রায় ঘোষণা করল শীর্ষ  আদালত৷ বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমি রামলালাকে দেওয়া হল৷ সেখানে রামমন্দির তৈরি হবে৷ মুসলিম পক্ষ সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে বিকল্প জায়গায় ৫ একর জমি দেওয়া হবে বলে আদালত ঘোষণা করেছে৷ সেই জমি অযোধ্যার কোনও সদর জায়গায় হতে পারে৷ জমি দেবে কেন্দ্র অথবা উত্তরপ্রদেশ সরকার৷  মন্দির ওহি বানায়েঙ্গে– এই স্লোগানে বিজেপি-আরএসএসের রাজনৈতিক উত্থান ঘটেছিল৷ ২০১৯-এর ৯ নভেম্বর সেটা সফলতার চূড়ান্ত রূপ নিল বলে মনে করছে বিশ্লেষকরা৷
শনিবার সকাল সাড়ে দশটা থেকে আদালতের ১ নম্বর ঘরে রায় পড়তে শুরু করেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ৷ প্রথমেই শিয়া ওয়াকফ বোর্ডের দাবি খারিজ করে মুসলিম পক্ষ হিসেবে সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ডকে স্বীকার করা হয়৷ বাতিল হয় নির্মোহী আখড়ার দাবিও৷ হিন্দু পক্ষ হিসেবে রামজন্মভূমি ন্যাসকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়৷ রায়ে এএস আইয়ের রিপোর্টকে গুরুত্ব দেওয়া হয়৷  এই সংস্থার দাবি, বাবরি মসজিদের ধাঁচা হিন্দু মন্দিরের মতো৷ আর খালি জমিতেও এটা তৈরি হয়নি৷ তারা এও জানায়, ধাঁচা মন্দিরের মতো মানেই এই নয় যে, মন্দির ভেঙে বাবরি মসজিদ তৈরি হয়েছে৷ বাবরের আমলে মির বাকি মির বাবরি নির্মাণ করেন বলে কোর্ট স্বীকার করে৷ তবে ইংরেজ আমল পর্যন্ত মুসলিমরা যে সেখানে নামায পড়ত, তার কোনও প্রমাণ সুন্নি বোর্ড দেখাতে পারেনি বলে আদালত জানিয়েছে৷ তাই হিন্দু বিশ্বাসকেই প্রমাণ হিসেবে বিবেচনা করেন ৫ সদস্যের বেঞ্চ৷ ফলে রামের জন্মস্থান হিসেবে মান্যতা দেওয়া হয় জায়গাটিকে৷
এর আগে ৪০ দিনের ম্যারাথন শুনানির পর গত ১৬ অক্টোবর মামলার রায়দান স্থগিত করে দেন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চের প্রধান বিচারপতি গগৈ। ওই বেঞ্চের বাকি সদস্যরা হলেন বিচারপতি এসএ বোবদে, ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, অশোক ভুষণ এবং এস আবদুল নজির। প্রধান বিচারপতির সুরক্ষা বাড়িয়ে জেড ক্যাটিগরির করা হয়েছে বলে সূত্রানুসারে জানা যাচ্ছে। অযোধ্যায় ২.৭৭ একর জমির দাবি জানিয়েছে হিন্দু এবং মুসলিম উভয়পক্ষই৷ ১৯৮০ থেকেই এই ইস্যুটি রাজনৈতিক বিষয় হয়ে উঠেছে। ষোড়শ শতকে এই মসজিদ নির্মাণ করেন মোগল সম্রাট বাবর। ১৯৯২-এ ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ গুঁড়িয়ে দেয় করসেবকরা৷  সেই সময় হিংসার ঘটনায় সারা দেশের ২,০০০ এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।
২০১০ সালের রায়ে এলাহাবাদ হাইকোর্ট ওই বিতর্কিত জমিকে (২.৭৭ একর) তিনটি ভাগে বিভক্ত করে তিন মামলাকারী সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, নির্মোহী আখড়া ও রাম লালা বিরাজমানের জন্য। সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল জমা পড়ে। এরপর এক মধ্যস্থতাকারী প্যানেল বিষয়টি মেটানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় আগস্টে। এরপর শুরু হয় শুনানি। শুনানির পরে শীর্ষ আদালত রায়দান স্থগিত করে। আজ হল সেই রায় প্রদান৷
(সংগৃহীত)