বাংলা আবাস যোজনার ঘর ফিরিয়ে দিলেন দুই পঞ্চায়েত প্রধান

আজিজুর রহমান, গলসি : বাংলা আবাস যোজনার তালিকা থেকে নিজেদের নাম বাদ দিয়ে একটি নজির স্থাপন করলেন গলসি ২ নং ব্লকের দুই পঞ্চায়েত প্রধান। তাদের এই উদ্যোগের প্রশংসা করছেন অনেকেই। জানা গেছে, এবারের বাংলা আবাস যোজনার তালিকায় গলসি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান কমল রুইদাসের মা ভাদু রুইদাস এবং মসজিদপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান মুন্সি মাড্ডির নাম এসেছে। যদিও তারা এই সুযোগ পাওয়ার যোগ্য, তবুও তারা গলসি ২ নং বিডিও অফিসে নিজেদের নাম বাদ দেওয়ার জন্য আবেদন জমা দিয়েছেন।

    গলসি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান কমল রুইদাস জানান, তার মা ভাদু রুইদাসের নাম বাংলা আবাস যোজনায় এলেও তিনি এই সুবিধা নিতে চান না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, “অনেক অসহায় মানুষের এই তালিকায় নাম আসেনি। তাই আমি চাই, আগে তারাই সুযোগ পাক।” তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন অনেক অসহায় মানুষজন তার কাছে এসে ঘরের জন্য অনুরোধ করেন, যা তার কাছে কষ্টদায়ক। তার দাবি, পঞ্চায়েতের হাতে তেমন কিছু ক্ষমতা নেই। তবে তিনি তার মায়ের নামে আসা বাড়িটি ফিরিয়ে দিয়ে একজন অসহায়ের পাশে দাঁড়াতে পারবেন। পরে আবার সুযোগ হলে তিনি তখন আবেদন করবেন। তাতে না পেলেও তার দুঃখ নেই।

    মসজিদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মুন্সি মাড্ডিও একই মনোভাব প্রকাশ করে বলেন, বাংলা আবাস যোজনায় তারও নাম এসেছে। তবে তিনিও ঘরটি ফিরিয়ে দিতে চান। প্রাপকের চাইতে কম ঘর এসেছে। এছাড়া তার মতো অনেক মানুষ পাবার যোগ্য হলেও তাদের নাম এই তালিকায় আসেনি। তার দাবি, অসহায় মানুষরা আগে সুযোগটা পাক। পরে তিনি আবেদন করবেন।

    এ প্রসঙ্গে গলসি ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি হেমন্ত পাল বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার সবদিক থেকে আমাদের রাজ্যকে বঞ্চিত করছে। আমাদের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী সাধারণ মানুষের জন্য সবরকমভাবে সহযোগিতা করছেন। তিনি বলেন, “আমাদের এলাকার অনেক অসহায় মানুষের নাম এখনো তালিকায় নেই। এই দুই প্রধানের উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এটি জন প্রতিনিধিদের জন্য একটি উদাহরণ। আমাদের সকল জনপ্রতিনিধির উচিত সাধারণ মানুষকে প্রথমে সুযোগ দেওয়া।”