বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বর্ধমানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠক।

লুতুব আলি, পূর্ব বর্ধমান : ২৩ সেপ্টেম্বর : বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বর্ধমানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠক। একটি নিম্নচাপের জের কাটতে না কাটতেই বঙ্গোপসাগরে জোড়া ঘূর্ণাবর্তের রাজ্যের ৯ জেলা বানভাসি। ডিভিসি ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে লক্ষ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া জেরে ইতিমধ্যে রাজ্যের ৯টি জেলা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডিভিসি ও পাঞ্চেত জলধার থেকে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে জল ছাড়া উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং এটিকে ম্যানমেড বন্যা বলে আখ্যায়িত করেছেন। এ ব্যাপারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও পরপর দুটি চিঠি লিখে প্রতিবাদও জানিয়েছেন। কমিটি থেকে রাজ্যের দুই প্রতিনিধিকে সরিয়েও নিয়েছেন। ২৩ সেপ্টেম্বর বাঁকুড়া জেলার প্লাবিত এলাকাগুলি পরিদর্শন করে এসে বর্ধমানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনিক বৈঠক করেন। হুগলির লাগোয়া পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের বেরুগ্রাম অঞ্চলে দামোদরের জলে বেশকিছু গ্রাম জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। এদিন পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসকের দপ্তরে রাজ্যের চিফ সেক্রেটারি ও বেশ কিছু মন্ত্রী এবং অন্যান্য আমলা, বিধায়ক ও সাংসদদের নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করলেন। এই প্রশাসনিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, প্রদীপ মজুমদার, স্বপন দেবনাথ, মলয় ঘটক, সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী, পূর্ব বর্ধমান জেলার পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট, জেলাশাসক, দুই সাংসদ কীর্তি আজাদ ও শর্মিলা সরকার সহ অন্যান্য বিধায়ক ও আধিকারিকরা। প্রশাসনিক বৈঠক সেরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, একটি নিম্নচাপের জেরে রাজ্যের জলমগ্ন জেলা গুলি স্বাভাবিক হতে না হতেই আবার বঙ্গোপসাগরে জোড়া ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হওয়ায় আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বন্যা কবলিত দুর্গত মানুষদের শুকনো খাবারের প্যাকেট সহ অন্যান্য খাবার সরবরাহ করার যেন কোনো ঘাটতি না থাকে সে ব্যাপারে সকলকে সজাগ হওয়ার নির্দেশ দেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন এই সংকট জনক পরিস্থিতিতে প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে জনপ্রতিনিধিদেরও ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। দুর্গত মানুষরা যেন না ভাবে তাদের পাশে কেউ নেই। হাসপাতাল গুলিতে পর্যাপ্ত ওষুধ বিশেষ করে এই পরিস্থিতিতে সাপে কাটার ওষুধ পর্যাপ্ত পরিমাণে রাখার জন্য হাসপাতাল গুলিকে পরামর্শ দেন। ডিসেম্বর মাসে ১১ লক্ষ্য মাটির বাড়িকে পাকা করা হবে। ইতিমধ্যে রাজ্যে ৫০ লক্ষ পাকা বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। এখনো ৫০ লক্ষ বাকি আছে। রাজ্যের সংখ্যালঘু দপ্তর ৬৫ হাজার পাকা বাড়ি তৈরি করে দেবে। ১১ লক্ষ পাকা বাড়ি করার জন্য যে লিস্ট করা হয়েছে সেই লিস্টে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের নাম না থাকলেও নাম তোলা হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান। পানীয় জলের জন্য পিএইচ ই এবং রাস্তা মেরামতের পূর্ত দপ্তরকে ত্বরান্বিত হওয়ার জন্য আহ্বান জানান। উদ্ভূত বন্যা পরিস্থিতির মোকাবেলা করার জন্য এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের আহ্বান জানান।