বর্ধমান একটি ঐতিহাসিক প্রসিদ্ধ প্রাচীন শহর এর মধ্যেই আছে প্রাচীন স্মৃতিসৌধ

খাজা নবাব বেড়/ নবাব বাড়ি/মগ বেড়া।
——————————————————-
শেখ মনোয়ার হোসেন,বর্ধমান, ১৭ সেপ্টেম্বর : বর্ধমান একটি ঐতিহাসিক প্রসিদ্ধ প্রাচীন শহর, এই শহরের মধ্যেই আছে প্রাচীন স্মৃতিসৌধ খাজা সৈয়দ আনোয়ার ও ভাই খাজা সৈয়দ আবুল কাশেম দুই বীর যোদ্ধার সমাধি। ১৬৯৭ খ্রিস্টাব্দে পাঠান সরদার রহিম খান দিল্লির সম্রাট দের মান্যতা অস্বীকার করে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। সম্রাট ফারুক সিয়ার বিদ্রোহ দমনের উদ্দেশ্যে এই দুই বীর সেনাপতিকে বর্ধমানে পাঠালেন। খাজা সৈয়দ আনোয়ার ছিলেন একদিকে জ্ঞানী গুণী আধ্যাত্মিক গুরু এবং অপরদিকে ছিলেন শৃঙ্খলা পরায়ন বীর যোদ্ধা, তিনি রহিম খান কে আনুগত্য স্বীকার করে মোগল দরবারে যোগদানের জন্য অনুরোধ করেন, ধূর্ত রহিম খান সন্ধির জন্য মূলকাটি নামক গ্রামে তাদের আহবান করেন এবং অতর্কিত ভাবে হত্যা করেন। দিল্লির দরবারে এই সংবাদ পৌঁছালে দুঃখের ছায়া নেমে আসে। সম্রাট ফারুক সিয়ার কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে বর্তমানে খাজা আনোয়ার বেড় নামক স্থানে পাঁচটি গ্রাম সহ একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করেন, যা ইন্দো সিরিয়া ও বাংলার আট চালার আকৃতি অপূর্ব ও সুদর্শন দেখতে। সম্রাট ফারুক সিয়ার এর নির্দেশে একটি পুকুর খনন করা হয় ,তার সাথে জল টঙ্গী, বেগম দের ব্যাবহার এর জন্য হাওয়া মহল, একটু দূরে নবাবদের ভবন, পশ্চিম দিকে একটি মসজিদ ,আবার অনেকের মতে এই মসজিদটি তারও অনেক আগে থেকে অবস্থান করছিল, অপরূপ সুন্দর মসজিদটি এরও তিনটি গম্বুজ , চারটি মিনার আছে, এর কারুকার্য এক কথায় অপূর্ব সুন্দর। ১৮৯৭ সালে খাজা আনোয়ারের মেয়ের বংশধররা সামনের গেটটি তৈরি করেন। লর্ড ওয়েলেসলি চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত সময় পাঁচটি গ্রাম কে বর্ধমান মহারাজা কে দান করে জমিদারির মধ্যে ভরে দেন, বর্তমান মহারাজা ৩ হাজার ৬৯০ টাকা প্রতি বছর নবাবদের দেবেন বলে অঙ্গীকার করেন। ১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীনতা অর্জন করে 1948 সালে শেষবারের মতন ভাতা তার বংশ ধরতে দেয়া হয়। তারপরে বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীকালে তার বংশধররা ওই কবরস্থান পুকুর মসজিদ ওয়াকফ বোর্ডের শরণাপন্ন হয়ে ওয়াকফে আওলাদ করে দেন, যা বংশ পরম্পরায় ওদের ব্যক্তিগত ওয়াকাপ সম্পত্তিতে পরিণত হয়েছে।