বর্ধমানের গর্ব আনিকা সানজিদা: আইসিএসসিতে রাজ্যে ৫ম ও দেশে ৪৯তম স্থান অধিকার

এম এস ইসলাম , বর্ধমান : বর্ধমান শহরের সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলের ছাত্রী আনিকা সানজিদা এবারের আইসিএসসি মাধ্যমিক পরীক্ষায় অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে। সে রাজ্যে পঞ্চম এবং গোটা দেশে ৪৯তম স্থান অধিকার করেছে, যা বর্ধমানবাসীর কাছে এক গর্বের বিষয়।

    ছোটবেলা থেকেই মেধাবী আনিকা দিনে চার থেকে দশ ঘণ্টা নিয়মিত পড়াশোনা করত। যদিও কিছু গৃহশিক্ষক ছিল, তবুও বেশিরভাগ পড়াশোনা সে নিজের চেষ্টাতেই করেছে। তার এই কৃতিত্বের পেছনে রয়েছে কঠোর পরিশ্রম, আত্মনিবেদন এবং পরিবারের উৎসাহ।

    আনিকা জানিয়েছে, স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা, গৃহশিক্ষক ও বিশেষ করে মা-বাবার অবদান তাকে এই সাফল্যে পৌঁছতে সাহায্য করেছে। সে আরও জানায়, পড়াশোনার পাশাপাশি ক্যারাটে, বাস্কেট বল , ড্রয়িং এবং বিভিন্ন সৃজনশীল কাজেও তার আগ্রহ রয়েছে।

    তার মাধ্যমিকের প্রাপ্ত নম্বর সত্যিই চোখে পড়ার মতো — ইংলিশ ওয়ান ৯৫, ইংলিশ টু ১০০, ফিজিক্স ৯৭, কেমিস্ট্রি ৯৯, বাংলা ৯৪, বায়োলজি ১০০, ম্যাথমেটিক্স ১০০, কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন ১০০, হিস্ট্রি ও সিভিকস ১০০ এবং জিওগ্রাফি ৯৭।

    আনিকার পরিবার অত্যন্ত শিক্ষিত ও সজ্জন। বাবা লাল প্যাথ ল্যাবরেটরিতে কর্মরত, মা একজন লাইব্রেরিয়ান, দাদু ছিলেন প্রাক্তন কৃষি দপ্তরের আধিকারিক এবং মায়ের বাবা বিশিষ্ট চিকিৎসক ও লেখক ডাক্তার সামসুল হক, মামা ইঞ্জিনিয়ার যার কাছ থেকে আনিকা অংকের পাঠ নিয়েছে । তার জ্যাঠা আশরাফ উদ্দিন বাবু একজন বিশিষ্ট সমাজসেবী ও রক্তদানের সংগঠক হিসেবে রাজ্যে পরিচিত।

    আনিকা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে জানিয়েছে, নামাজ ও ধর্মীয় চর্চা তার মানসিক শক্তি জুগিয়েছে। সে জানিয়েছে, ভবিষ্যতে ডাক্তার হতে চায় এবং সমাজের অবহেলিত ও দরিদ্র মানুষের সেবা করতে চায়, বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদানই তার স্বপ্ন।

    তার এই কৃতিত্বে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন। পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীরা সবাই গর্বিত ও আনন্দিত। আনিকা ভবিষ্যতে আরও সাফল্য অর্জনের লক্ষ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছে।

    এই অনন্য সাফল্যের জন্য আনিকা সানজিদা আজ রাজ্যজুড়ে প্রশংসিত এবং ভবিষ্যতের জন্য এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।