বর্ধমানের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিষ্ঠা দিবসে স্মরণীয় কর্মকাণ্ড।

লুতুব আলি, বর্ধমান : বর্ধমানের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিষ্ঠা দিবসে স্মরণীয় কর্মকাণ্ড। বর্ধমান সদর প্যায়ারা নিউট্রিশন ওয়েলফেয়ার সোসাইটির চতুর্থ তম প্রতিষ্ঠা দিবস পালিত হলো বর্ধমানের রবীন্দ্র ভবন আনেক্স বিল্ডিং এ। স্বামী স্বামী ত্রিবেদানন্দ পুরী মহারাজ প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের নান্দনিক শুভ সূচনা ঘটান। এই অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে পূর্ব বর্ধমান জেলার ১৮ জন দুস্থ মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে এককালীন বৃত্তি হিসেবে মোট ৫২ হাজার টাকার বৃত্তি প্রদান করা হয়। এছাড়াও শহরের লাল কল বস্তি, মল্লিক পুকুর বস্তি, রানীবাগান বস্তি ও কোড়াপাড়া বস্তি এলাকার মোট ৪০ টি মধ্যম তীব্র অপুষ্ট এস এ এম শিশুর হাতে এক মাসের জন্য উচ্চ প্রটিন্ন কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার হিসাবে ৫০০ গ্রাম ছোলা, ৫০০ গ্রাম ছাতু, ৫০০ গ্রাম সয়াবিন, ৫০০ গ্রাম গোটা মুগ এবং ৫০০ গ্রাম করে সুজির প্যাকেট দেয়া হয়। এছাড়াও চেন্নাই থেকে সোসাইটিতে ইন্টারসিপ করতে আসা বিটেক বায়োটেকনোলজির ছাত্রী অদ্রিজা পালের হাতে তার শংসাপত্র তুলে দেয়া হয়। প্রদত্ত স্কলারশিপ গুলির মধ্যে মাধ্যমিক স্তরে বর্ধমান আদর্শ স্কুলের মহম্মদ রামিজ রাজা এবং উচালন হাইস্কুলের সুরোজ কর্মকার পান ডক্টর এস এনঝা প্রদত্ত স্কলারশিপ। কাটোয়ার বিল্লেশ্বর বিনদী বালা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রিয়াঙ্কা মন্ডল এবং সুলগ্না ঘোষ পান অনিন্দিতা রায় চৌধুরী ও রাজকুমার ঘোষ প্রদত্ত স্কলারশিপ। কিউটিয়া হাই স্কুলের অগ্রিমা সাউ এবং সুমিত দত্ত পান কিশোর মাকড় ও মধুমিতা সাম প্রদত্ত স্কলারশিপ। বর্ধমান শ্রীরামকৃষ্ণ সারদা পিঠ উচ্চ বিদ্যালয় এর আদর্শ সাউ এবং কাটোয়া জানকিলাল শিক্ষা সদনের সুব্রত পাল পান বিদ্যুৎ কোনার প্রদত্ত স্কলারশিপ। উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বর্ধমানের শুভজিৎ গড়াই পান কল্যাণ কুমার সাম প্রদত্ত স্কলারশিপ, বর্ধমান হরিসভা হিন্দু হাইস্কুলের পায়েল চাচার্জী পান মিঠু সাম প্রদত্ত স্কলারশিপ, তেজগঞ্জ হাই স্কুলের কার্তিক দাস পান সোমেশকালী হাজরা প্রদত্ত স্কলারশিপ, সেন্ট পলস একাডেমীর গুই পান যোগেন্দ্র বর্মন প্রদত্ত স্কলারশিপ। উচালন হাই স্কুলের সৌমজিৎ কুন্ডু, বর্ধমান সি এম এস হাই স্কুলের প্রাতঃ বিভাগের শেখ শাহনওয়াজ, কাটোয়া বিল্লেশ্বর হাই স্কুলের দিশা মন্ডল, এবং এক লক্ষী হাইস্কুলের মোহিনী মহান্ত পান যথাক্রমে পূর্ণেন্দু মজুমদার, পার্বতী মিত্র এবং পূর্ণিমা মজুমদার প্রদত্ত স্কলারশিপ। বড়বৈনান ইউনিয়ন সমবায় কৃষি সমিতি শিক্ষা নিকেতনের দিশা হাজরা পান অরুনিমা লাহা প্রদত্ত স্কলারশিপ এবং রথ তলা মনোহর দাস বিদ্যানিকেতনের তিতলি রুইদাস পান মিলন দাস প্রদত্ত স্কলারশিপ। সোসাইটির সম্পাদক প্রলয় মজুমদার বলেন, সঠিক পুষ্টি এবং সুস্বাস্থ্য যে কোন জাতির মেরুদন্ড এবং এর জন্য চাই সঠিক শিক্ষা। বিশ্ব ক্ষুধা সূচক অনুসারে ১২৭ টি দেশের মধ্যে ভারতবর্ষের স্থান ১০৫, যা যথেষ্ট উদ্বেগের। এন এফ এইচ এস পাঁচ অনুসারে পূর্ব বর্ধমান জেলায় যেখানে পুষ্টির মান ২১.১% যেখানে সোসাইটির সার্ভেতে বর্ধমান শহরের চারটি বস্তি এলাকায় এই মান ৩০ শতাংশের উর্ধ্বে। বিগত দু’মাসের চেষ্টায় সোসাইটি এই মান ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে পেরেছে। আগামী দিনে পূর্ব বর্ধমান তথা সমগ্র পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে পুষ্টি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার উন্নতিতে আমাদের সংস্থা অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলেই আমাদের বিশ্বাস। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ বিশ্বনাথ রায়, গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ আরামবাগ হুগলির অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডা: শংকর নাথ ঝাঁ, দেব শিশু সংস্থার সম্পাদক সবিতাবব্রত হাটি, হট গোবিন্দপুর এমসি হাইস্কুলের শিক্ষক তুষার কান্তি মুখোপাধ্যায়, রথ তলা মনোহর দাস বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়, পি এফ সি এন্ড সি পি এর সভাপতি কে এমজি মইনুদ্দিন, বর্ধমান জব সার্কেলের কর্ণধার প্রণব কুমার রক্ষিত, সমাজ সংস্কারক রাসমণি মালিক। সংস্থার পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন চৈতালি ঘোষ, দ্যুতি কোনার, শিল্পা অধিকারী, মনীষা মন্ডল, মনীষা দাস, জয়ী সাহা প্রমুখ। সংস্থার মিডিয়া অফিসার অঙ্কিতা সাম ১১ জুলাই এর অনুষ্ঠানটি আক্ষরিক অর্থে বর্ণময় হয়ে ওঠে।