ভেঙে পড়া মঞ্চে আলো

সংবাদদাতা : ভেঙে পড়া মৌলিক মঞ্চে আশার আলো দেখালেন বর্ধমানের বিধায়ক খোকন দাস। রসিকপুর চিলড্রেন পার্কে ৫৫ বছরের নাট্য শিক্ষা ও প্রয়োগের ইতিহাসকে ধরে রেখেছে বর্ধমান ড্রামা কলেজ ও মৌলিক মঞ্চ। বর্ধমানে ধন্বন্তরি ডাক্তার শৈলেন বাবুর বাড়ির পাশে জলের ট্যাং ভাঙতে গিয়ে আরো ক্ষতবিক্ষত হয়েছে সম্মুস্থ স্থানটি। টিনের চাল থেকে জল চুঁইয়ে পড়া এই মঞ্চ ও তার সংলগ্ন ভগ্নপ্রায় কক্ষে এখনো প্রতি বুধবার আবৃত্তি শিক্ষার ক্লাস চলে নিয়মিত। প্রায় ৮৫ বছরের তরুণ ললিত কোনার এখনো সমানে শিক্ষা দিয়ে চলেছেন নাট্যকলা ও আবৃত্তির। সাংগঠনিক সহযোগিতা আছেন আব্দুল রশিদ, মৃত্যুঞ্জয় সরকার, দেবীপ্রসাদ মন্ডল, দুলাল দাস প্রমুখ ব্যক্তিত্ব। শিখা সরকারের মতো বাচিক শিল্পীরা এখানে এসে পেয়েছেন বাঁচার আশ্বাস।

    মঙ্গল চৌধুরী প্রতিষ্ঠিত মৌলিক মঞ্চ আর বর্ধমানের সংস্কৃতি অঙ্গাঙ্গী জড়িত। ২৬ অক্টোবর, ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে বিজয়া সম্মেলনী উপলক্ষে নিখিলরঞ্জন দাস রচিত ‘ঢাকের বাদ্যি’ নাটকের অভিনয়ের মধ্য দিয়ে এই মঞ্চের শুভযাত্রা। মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে ডাক্তার পাড়ার ডাক্তারগণ এবং রমাপতি হাজরা-র মতো নাট্য পরিচালক ও নাট্যশিক্ষক অনেকেই এই মঞ্চের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এই নাট্য সংস্থার উদ্যোগে বর্ধমান রেলওয়ে রঙ্গমঞ্চে দুটি করে শো-এ অভিনীত হয়েছে গোত্রান্তর, শাজাহান ও বিসর্জন এর মত নাটক। ওয়ার্কশপ করে গেছেন দ্বিজেন বন্দ্যোপাধ্যায় ও মনোজ মিত্রের মত নাট্যকারেরা।
    এখান থেকেই উঠে এসেছেন এ বঙ্গের অন্যতম সেরা সঞ্চালক কল্লোল কোনার, শ্যামাপদ চৌধুরী, সব্যসাচী কোনার প্রমুখ। বাচিকশিল্পী ও নাট্যকার ড. দেবেশ ঠাকুর, নাট্য সমালোচক ড. রমজান আলি, ডক্টর শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী এই মঞ্চের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত। নাটক মঞ্চস্থ করার পাশাপাশি বর্ধমানে বিভিন্ন সংস্কৃতি অনুষ্ঠানের সঙ্গে এরা ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত আছেন। বিধায়ক উপন্যাস বলেন, বর্ধমানের নাট্যচর্চার ইতিহাস ও ঐতিহ্য এখনো ধুলায় মিশে যায়নি, তাকে বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব এই সংস্থার। অসংখ্য নাট্যকর্মীদের ভালোবাসা নিয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে বর্ধমান ড্রামা কলেজ ও মৌলিক মঞ্চ।

    ছবি : চন্দনা সরকার