|
---|
আজিজুর রহমান, গলসি : গত পাঁচ ছয় দিন ধরে গলসির পুরসা হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছে এক ভবঘুরে। তখন থেকে হাসপাতালে চলছে তার সারা দিনের খাওয়া দাওয়া। গত বৃহস্পতি বার সন্ধায় হাসপাতাল কর্মী সেখ সাহেব ও জাকির মীর তাকে প্রথম দেখে একটি গায়ের চাদর দেন রাতে ঘুমানোর জন্য। তারপর থেকে হাসপাতালের বিশ্রাম ভবনই তার ঠিকানা হয়েছে। সোমবার বিএমওএইচ ফারুক হোসেন তাকে হাসপাতালে ঘুরতে দেখে তার নোংরা জামাকাপড় খুলে সাবান, শ্যাম্পু দিয়ে স্নান করার ব্যবস্থা করেন। হাসপাতালে কর্মী সেখ সাহেব, বিনা হাজরা, গাড়ি চালক রাজ মীর, অ্যাম্বুলেন্স চালক সাবির আহম্মেদ, ও হাসপাতালের গেটে চা দোকানদার লাল্টু মন্ডলরা তাকে স্নান করিয়ে তেল মাখিয়ে দেন। তার পর তাকে নতুন জামাকাপড় ও শীতবস্ত্র পরিয়ে দেয় তারা। সাথে সাথে হাসপাতাল কর্মীদের দিয়ে কোবিড টেস্ট করানো বিএমওএইচ ফারুক হোসেন। খরচ দেন জামাকাপড় ও শীতবস্ত্র কেনার। অ্যাম্বুলেন্স চালক সেখ সাবির জানিয়েছেন, ভবঘুরে ব্যাক্তি ঠিকঠাক কথা বলতে পারেন। তিনি গাড়ি পার্কিং করে মাঝে মাঝে তার খবর নিন। কখন কখনও চা ও বিস্কুট কিনে দেন। ঠিক কি করেনে তিনি এদিকে চলে এসেছেন তা তিনি সঠিকভাবে বলতে পারছেন না। হাসপাতালের দায়মাসি বিনা হাজরা বলেন, আমাকে দেখলে উনি ভাত চান। বলেন দিদি আমাকে ভাত দিন। আমাদের দুইজন মাসির খাবার থেকে একজনের ওকে খাবার দিই। তাছাড়া আমাদের হাসপাতালের সকল কর্মীরা ওকে শুকনো খাবার ও চা দিয়ে থাকে। তাছাডও হাসপাতালের গেটের দোকানদার লাল্টু মন্ডল ও তাকে চা ও শুকনো খাবার দিয়ে সহযোগিতা করেন। তিনি চান বিশ্বনাথের বাড়ির লোকেরা তাকে নিয়ে যাক। হাসপাতাল কর্মী সেখ সাহেব বলেন, ডাক্তার বাবুর বিশ্বনাথকে নোংরা পোশাকে দেখে কিছু টাকাদেন জামাকাপড় ও শীতবস্ত্র কিনতে। তারপর তিনি ও তাদের কর্মীরা তাকে স্নান করিয়ে নতুন জামাকাপড় পরিয়ে দেন। তিনি চান বিশ্বনাথ চক্রবর্তী তার নিজের ঠিকানায় ফিরে পাক। ভবঘুরে ভবঘুরে ওই ব্যাক্তি বলেন, তার নাম বিশ্বনাথ চক্রবর্তী, পিতা সদেশ চক্রবর্তী, পূর্ব মেদনীপুরের ঘটাল এর গোবিন্দনগরে তার বাড়ি। তবে তার বাবা মা নেই। বাড়িতে দাদা বৌদীরা আছেন। আমি হেঁটে হেঁটে এখানে চলে এসেছি। বাড়িতে বড় দা, মেজদা ও বৌদীরা আছেন। বাবা মা মারা গেছেন। আমি পঞ্চম শ্রেনী প্রযন্ত পড়াশোনা করেছি। এখান হাসপাতালে আছি, এরা আমাকে খাবার দেয়। আজ মাছের ঝোল ভাত খেয়েছি।