|
---|
মোল্লা জসিমউদ্দিন : সোমবার বিকেলে কলকাতার হাডকো মোড় সংলগ্ন বিধান শিশু উদ্যানে পুননির্মিত সুইমিং পুলের শুভ উদ্বোধন এবং চলতি মরশুমে সাঁতার বিভাগের শুভ সূচনা হলো। এদিন বিধান শিশু উদ্যানে পুনর্নির্মিত সুইমিং পুলের উদ্বোধন এবং এই মরশুমের সাঁতার প্রশিক্ষণের শুভ করলেন বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ বঙ্গভূষণ ডা. তুষার শীল।উপস্থিত ছিলেন অন্যান্য বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দ সহ অভিভাবকরা।বিগত লকডাউন এবং আমফান-কে কেন্দ্র করে উদ্যানের সুইমিং এর পরিকাঠামোর প্রভূত ক্ষতি হয়েছিল। চেঞ্জিং রুমের আসবাবপত্র এবং ফিল্টারিং প্ল্যান্টের সমস্ত যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে গিয়েছিল। এবছর তা সম্পূর্ণভাবে নতুন করে তৈরি করা হয়। ডা. তুষার শীল তাঁর বক্তৃতায় বিধান শিশু উদ্যানকে ধন্যবাদ জানান, বিশেষ করে অতুল্য ঘোষ প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থা পরিচালনার ক্ষেত্রে কমিটির ভূয়সী প্রশংসা করেন। এদিন তিনি বলেন, -” সবচাইতে বড়ো এবং মর্যাদাপূর্ণ যোগাসন প্রতিযোগিতা এই বিধান শিশু উদ্যানেই হত”। ডা. শীল অনুরোধ করেন যে, যোগাসন প্রতিযোগিতা বিধান শিশু উদ্যানে আবার আয়োজন করলে তিনি সর্বতোভাবে সহায়তা করবেন। বিধান শিশু উদ্যানের সম্পাদক গৌতম তালুকদার ড: শীলের অনুরোধ কে মান্যতা দিয়ে যোগাসন প্রতিযোগিতার চেস্টা করবেন বলে জানিয়েছেন।চলতি মরশুমে বিধান শিশু উদ্যানে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী সাঁতারে ভর্তি হয়েছে বলে জানা গেছে ।এদিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলেই করতালির মাধ্যমে শুভেচ্ছা জানান সাঁতারে ভর্তি হওয়া বালক-বালিকাদের। বালক ও বালিকাদের ভিন্ন ভিন্ন তিনটি দিনে ৩০ মিনিটের ব্যাচে সাঁতার কাটবার সুযোগ পাবে। বিকাল ৪-০০টে থেকে সন্ধে ৬.০০ টা সাঁতার চলবে। এরপর ৬:০০ টা থেকে সন্ধে ৭.০০ টা পর্যন্ত বড়োদের সাঁতার (ছেলে ও মেয়ে) চলবে । সাঁতার চলাকালীন তত্ত্বাবধানে থাকবে অভিজ্ঞ সাঁতার প্রশিক্ষকেরা বলে জানা গেছে ।
আপামর বাঙালি হৃদয়ে সর্বদা বিরাজমান বিধান শিশু উদ্যান। বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিধান চন্দ্র রায় স্মরণে তাঁরই ডানহাত অতুল্য ঘোষ গড়ে গেছেন বিধান শিশু উদ্যান থেকে বিধান শিশু হাসপাতাল। যা আজও খাঁটি বাঙালিয়ানার পথে শৈশবকাল কে উন্নতর পথে নিয়ে যাচ্ছে বিধান শিশু উদ্যান। ঠিক ৪৭ বছর আগে ১৯৭৬ সালে বিধান শিশু উদ্যানের পথচলা শুরু হয়েছিল। উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন মাননীয় রাষ্ট্রপতি ড.ফকরুদ্দিন আলি আহমেদ। কয়েক দশক ধরে সর্বভারতীয় রাজনীতির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান থেকে সরে এসে বিধান শিশু উদ্যান তৈরী করেছিলেন যিনি, তিনি অতুল্য ঘোষ। অনন্য সাধারণ দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মানুষ ছিলেন অতুল্য ঘোষ।যিনি শিশুদের কাছে ‘কানাদাদু’ হিসাবে পরিচিত ছিলেন। অসুস্থ বাচ্চাদের জন্য ড.বিধান চন্দ্র রায়ের স্মৃতিতে তৈরী করেছিলেন সবরকমের সুবিধা যুক্ত শিশু হাসপাতাল, উত্তর কলকাতার নারকেলডাঙ্গায় ফুলবাগানের কাছে এই শিশু হাসপাতাল টি অবস্থিত। সমস্ত বাচ্চাদের জন্য শিক্ষা ও শারীরিক উন্নয়নের জন্য উল্টোডাঙ্গার হাডকো মোড় সংলগ্ন এলাকায় গড়েছিলেন বিধান শিশু উদ্যান। হাজার হাজার মানুষ যাঁরা বেড়াতে আসেন তাঁদের কাছে বিধান শিশু উদ্যান বিনোদন পার্ক। আবার যেসব শিশুরা রোজ নাচ,গান,আবৃত্তি, অঙ্কন,যোগা, টেবিল টেনিস, সাঁতার, ক্রিকেট, রোলার স্কেটিং, এ্যাথলেটিক্স শিখতে আসে তাদের কাছে বিধান শিশু উদ্যান শিক্ষাঙ্গন। “বিধান শিশু উদ্যান তাই শুধু বিনোদন পার্ক নয় বা শুধু শিক্ষাঙ্গন নয়। এই দুইয়ের সংমিশ্রণে অন্য কিছু একটা” বলে জানিয়েছেন বিধান শিশু উদ্যানের সম্পাদক গৌতম তালুকদার মহাশয়।