বিধায়কের হস্তক্ষেপে শক্তিগড় জুট পার্কের উৎপাদন শুরু হল

সংবাদদাতা, শক্তিগড় : বিধায়কের হস্তক্ষেপে শক্তিগড় জুট পার্কের উৎপাদন শুরু হল। মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে পূর্ব বর্ধমানের বড়শুলে অবস্থিত শক্তিগড় জুট পার্কের শ্রমিকেরা অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্দোলন চালাচ্ছিলেন। এর ফলে জুট পার্কটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এলাকার মানুষ তথা শ্রমিকদের একটি অংশ দুশ্চিন্তার কালো মেঘ দেখে ভয় পেয়ে যায়। উল্লেখ্য, শক্তিগড় জুট পার্কটি পূর্বে শক্তিগড় টেক্সটাইল ছিল। শক্তিগড় টেক্সটাইলটি তে শ্রমিক বিক্ষোভের জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। প্রায় এক দশক ধরে বন্ধ হওয়ার পর টেক্সটাইল টির মালিকানা বদল হয়ে জুট পার্কে রূপান্তরিত হয়। দীর্ঘদিন টেক্সটাইল টি বন্ধ হওয়ার ফলে এলাকার অর্থনৈতিক পরিকাঠামো ভেঙে পড়ে। নব উদ্যমে শক্তিগড় জুট পার্ক খোলায় এলাকার মানুষ আশার আলো দেখতে পেয়েছিল। প্রসঙ্গত মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিক ইউনিয়নকে পাশে না পেয়ে শ্রমিকেরাই ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের ডাক দেয়। গতকাল নতুন গতি পত্রিকার অনলাইন এডিশনে এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পর আলোড়ন পড়ে যায়। রাজ্যের শ্রম মন্ত্রী মলয় ঘটক বর্ধমান উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক নিশীথ কুমার মালিক কে নির্দেশ দেন শ্রমিকদের স্বার্থ সুরক্ষা বজায় রেখে অবিলম্বে শক্তিগড় জুট পার্কটি চালু করতে হবে। এই নির্দেশ পেয়ে নিশীথ কুমার মালিক আন্দোলনরত শ্রমিকদের পাশে এসে হাজির হন। আন্দোলনরত শ্রমিকেরা যেসব দাবিদার নিয়ে আন্দোলন করছিলেন নিশীথ বাবু বৃহস্পতিবার এসে তাতে সিলমোহর দেন। আন্দোলনরত শ্রমিকদের অভিযোগ ছিল শ্রমিক ইউনিয়নের জামা পড়ে জনা পাঁচেক নেতা নেত্রী ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে গোপনে জোক সাজোস করে বখরার বিনিময়ে মনগড়া একটি এগ্রিমেন্ট করে নোটিশ বোর্ডে ঝুলিয়ে দেয়। এই এগ্রিমেন্টে শ্রমিক স্বার্থ না থাকায় আন্দোলনরত শ্রমিকেরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এদিন এক সাংবাদিক সম্মেলনে নিশীথ কুমার মালিক অভিযোগ আনেন যে শক্তিগড় জুটপার্কে ইউনিয়নে দালাল রাজ চক্র চলছিল। নিয়ম হচ্ছে এগ্রিমেন্ট করতে গেলে শ্রমিকদের নিয়ে আগে গেট মিটিং করা দরকার। রাতের অন্ধকারে এই এগ্রিমেন্ট হয়েছিল। এগ্রিমেন্ট টি পুরোপুরি শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী। শক্তিগড় জুট পার্কটি তে অচল অবস্থা চলায় মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, বেচারাম মান্না, রাজ্য আইনটিইউসির রাজ্য সভাপতি দেবব্রত ব্যানার্জি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তাঁরা সকলে নিশীথ কুমার মালিক কে হস্তক্ষেপ করার জন্য নির্দেশ দেন। আন্দোলনরত শ্রমিকেরা নিশীথ বাবুর আশ্বাস পেয়ে আন্দোলন থেকে সরে আসেন এবং এদিন দুপুর দুটো থেকে শক্তিগড় জুট পার্কের উৎপাদন শুরু হয়ে যায়। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আন্দোলনরত শ্রমিক প্রতিনিধি, গৌরাঙ্গ লাল বসু, গৌড় দত্ত, বড়শুল ২নং গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রমেশ চন্দ্র সরকার, শেখ রাজু, শেখ মোঃ হাবিব, শেখ রতন প্রমুখ। জানা গেছে২১ জুলাই কলকাতার শহীদ দিবস অনুষ্ঠানের পর চলতি মাসের ২৫ তারিখে বিধায়ক সকলকে ডেকে একটি সুষ্ঠু সমাধান করবেন ও শ্রমিক ইউনিয়নের নতুন কমিটি গঠিত হবে। অভিযুক্ত যে পাঁচ জন ব্যক্তি ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে যোগসাজ করে এগ্রিমেন্ট করেছিলেন তাদেরকে আর মিলে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে নিশীথ বাবু জানান। তারা যেন আর কোনক্রমে শক্তিগড় জুটপার্কে না ঢুকতে পারেন সে ব্যাপারে নিশীথ কুমার মালিক পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করেছেন।