বামের পরিস্থিতে বিমান বসুর মন্তব্য

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: দিনের শুরুই বলে বাংলায় অকাল-ভোটের বাকি দিনটা কেমন যাবে বামেদের। ভবানীপুরে তখন শেষ হয়েছে প্রথম রাউন্ডের গণনা, সিপিএম প্রার্থী শ্রীজীব বিশ্বাসের প্রাপ্ত ভোট তখন ৮৫। বুঝতে পারা গিয়েছিল, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো অনেক দূরের, ভবানীপুরে বিজেপি-র প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালেরও ধারেকাছে ঘেষতে পারবেন শ্রীজীব। সকালের আন্দাজই ফলে গেল দুপুরে। শেষমেশ দেখা গেল, তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পেয়েছেন ৮৪ হাজার ৩৮৯ ভোট। বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের প্রাপ্ত ভোট ২৬ হাজার ৩২০ ভোট। আর সিপিআইএম প্রার্থী শ্রীজীব বিশ্বাস পেয়েছেন মাত্র ৪২০১ ভোট। অর্থাৎ, জামানত বাজেয়াপ্ত। একই অবস্থা জঙ্গিপুর-সামশেরগঞ্জেও।

    জঙ্গিপুরে তৃণমূল প্রার্থী জাকির হোসেন ১৩৬,৪৪৪ এবং বিজেপির সুজিত দাস পেয়েছেন ৪৩,৯৪৬ ভোট। আর আরএসপি-র জানে আলম মিঞা পেয়েছেন মাত্র মাত্র ৯০৬৭ ভোট। ওই কেন্দ্রে তৃণমূলের জাকির হোসেন জিতেছেন ৯২,৪৮০ ভোটে। সামশেরগঞ্জেও বামেদের অবস্থা তথৈবচ। ওই কেন্দ্রে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী আমিরুল ইসলাম। তিনি জিতলেন ২৬,৩৭৯ ভোটে। সামশেরগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে নির্বাচনী লড়াইতে নেমেছিলেন তৃণমূল প্রার্থী আমিরুল ইসলাম, বিজেপি প্রার্থী মিলন ঘোষ, কংগ্রেস প্রার্থী জৈদুর রহমান এবং সিপিআইএম প্রার্থী মোদাসসর হোসেন। সেখানে তৃণমূল পেয়েছে ৯৬,৪১৭ ভোট, কংগ্রেস পেয়েছে ৭০,০৩৮ ভোট, বিজেপি পেয়েছে ১০,৮০০ ভোট আর সিপিআইএম মাত্র ৬,১৫৮ ভোট।

    পরিস্থিতি দেখে সোনারপুরের রাজপুর রবীন্দ্রভবনে দলীয় একটি অনুষ্ঠানে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু মন্তব্য করেন, ”রেজাল্ট যা হওয়ার ছিল, তাই হয়েছে। এই ভোটে খুব ব্যাতিক্রমী কিছু রেজাল্ট হবে বলে মনে করিনি। তবে এবার কিছু মানুষ যারা নিয়মিত ভোট দেন, তাঁরা এই নির্বাচনে ভোট দেননি। বিশেষ করে ভবানীপুর কেন্দ্রে। কেন তাঁরা ভোট দিলেন না, জানি না। সামশেরগঞ্জে, জঙ্গিপুরে ভোট ভালো হয়েছে। তবে সেখানেও যা হওয়ার ছিল, তাই হয়েছে। বামেদের ভোটের পার্সেন্টেজ বাড়বে, এটা ভাবিনি।” এরপর কী হবে বামেদের? আসন্ন উপনির্বাচনগুলিতেই বা কী করতে চলেছে বামেরা? এ নিয়ে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যানের জবাব, ”আসন্ন উপনির্বাচনগুলিতে জোট করে নাকি কী ভাবে লড়াই করা হবে, তা মিটিং করে কয়েকদিনের মধ্যেই ঘোষণা করা হবে।”

    গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ও আব্বাস সিদ্দিকির দলের সঙ্গে জোট করেছিল বামেরা। কিন্তু তাতে কার্যত ধূলিস্যাৎ হয়ে গিয়েছে বামফ্রন্ট। বিধানসভায় তাঁদের এখন একজনও বিধায়ক নেই। এই পরিস্থিতিতে উপনির্বাচনে ফের সিপিএম তথা ফ্রন্টের কঙ্কালসার চেহারাটাই ফের একবার সামনে চলে এল। রাজনৈতিক মহলের মতে, এই পরিস্থিতিতে চলতি মাসের শেষেই ফের চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বামেদের ফল এর থেকে ভালো হওয়া কঠিন।