বারুদের স্তূপের ওপর কার্যত দাঁড়িয়ে রয়েছে বীরভূম

নিজস্ব প্রতিবেদক:- বারুদের স্তূপের ওপর কার্যত দাঁড়িয়ে রয়েছে বীরভূম। গত চার দিনে ৪০০-র বেশি বোমা উদ্ধার হয়েছে জেলা জুড়ে। প্রশ্ন উঠেছে জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে। মাড়গ্রাম, দুবরাজপুর, লাভপুর, মল্লারপুর থেকে প্রচুর বোমা উদ্ধার হয়েছে। শুধু বোমাই নয়, উদ্ধার হয়েছে ৩০ কেজিরও বেশি বোমা তৈরির মশলা। এত বোমা ও বোমার মশলা উদ্ধার নিয়ে শাসক দলকে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ, বীরভূম জেলায় বাড়িতে বাড়িতে বোমা মজুত রয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া হাতে প্রশাসন সামলাচ্ছেন। সব থানার পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন যাতে বেআইনি সব অস্ত্র ও বোমা বাজেয়াপ্ত করা হয়। তার জেরেই পুলিশ এত বোমা-অস্ত্র উদ্ধার করছে।জেলার বিরোধী শিবিরের নেতারা বলছেন, বীরভূমে যা বোমা মজুত আছে, তাতে একটা দেশ উড়ে যাবে। আর তৃণমূলের পাল্টা সাফাই, কড়া পদক্ষেপ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিতেই চার দিনে ৪০০-র বেশি বোমা উদ্ধার হয়েছে বীরভূম জেলায়।গত সপ্তাহে বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী বীরভূমের রামপুরহাটে গিয়ে সমস্ত থানাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন যাতে, বেআইনি ভাবে মজুত করা বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত করা হয় জন্য। তারপর থেকেই বীরভূমে শুরু হয় বোমা উদ্ধারের পালা। শুক্রবার বীরভূমের মাড়গ্রামে উদ্ধার হয় ৬০ টি তাজা বোমা, তারপর শনিবারও মাড়গ্রামেই উদ্ধার হয় আরও ১০০ টি বোমা। রবিবার দুবরাজপুরে উদ্ধার হয় ৩০টি বোমা। পাশাপাশি আরও তিন কেজি বারুদ উদ্ধার হয় সেখান থেকে। অন্যদিকে দুটি ড্রাম ভর্তি প্রায় ৪০ টি বোমা উদ্ধার হয় মল্লারপুরে। সোমবারও বীরভূমে সেই বোমা উদ্ধার অব্যহত ছিল। বীরভূমের দুবরাজপুর ও লাভপুরে উদ্ধার হয়েছে মোট ১৪০ টি বোমা।সোমবার বীরভূমের দুবরাজপুর ব্লকের সাহাপুর প্রাথমিক উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পাশে থাকা একটি পরিত্যক্ত বাথরুমের চেম্বার থেকে উদ্ধার হয় বোমা। পুলিশ সূত্রে খবর, আনুমানিক ৩০ টি বোমা উদ্ধার হয়েছে। খবর পেয়ে সদাইপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ও উদ্ধার করে বোমাগুলি।অন্যদিকে, দীর্ঘ দু দিন ধরে তল্লাশি করার পর অবশেষে লাভপুর থানার পুলিশ লাভপুরের সাও গ্রামের নদীপাড়ের একটি ঝোপ থেকে দুই ড্রাম তাজা বোমা উদ্ধার করে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে প্রায় ১১০ টি তাজা বোমা উদ্ধার হয়েছে। তবে কে বা কারা কোন উদ্দেশ্যে এই বোমা মজুত করে রেখেছিল, তার তদন্ত শুরু করছে লাভপুর থানার পুলিশ। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।বিরোধীরা বলছেন আইওয়াশ,বীরভূমের কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট চঞ্চল চট্টোপাধ্যায় ও বীরভূম জেলার বিজেপি সভাপতি ধ্রুব সাহার বক্তব্য, বীরভূম বারুদের স্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। বাড়িতে বাড়িতে বোমা মজুত রয়েছে। এমনকি, এই উদ্ধার শুধু মাত্র চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য বলেও দাবি করেছেন তাঁরা। চঞ্চল বাবুর দাবি, বীরভূমে যা বোমা মজুত আছে তাতে একটা দেশ উড়ে যাবে। অন্যদিকে বীরভূম জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি ও জেলা পরিষদের মেন্টার অভিজিৎ সিংহ সাফাই দেন যে, মুখ্যমন্ত্রী কড়া পদক্ষেপ করেছেন, তাই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আর মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধান্তের জন্যই প্রশাসন কাজ করছে।