বিশিষ্ট রোজাদার রসায়ন বিজ্ঞানী ড মুনকির হোসেন অসুস্থ।

মতিয়ার রহমান : বিশিষ্ট রোজাদার রসায়ন বিজ্ঞানী ড মুনকির হোসেন অসুস্থ। আমাদের অহংকার প্রিয় মানুষ ড মুনকির হোসেন অসুস্থ হয়ে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। গত বছর হজ্জ পালন করতে যাওয়ার আগে তিনি পায়ে টান ও ব্যথা অনুভব করেন। বয়সজনিত কারণে তখন তিনি সাময়িক ভাবে নফল রোজা রাখা বন্ধ রাখেন। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করিয়ে তেমন কোন লাভ না হলে ফের নফল রোজা রাখা শুরু করেন। তাতে তিনি সুস্থ বোধ করেন বলে তাঁর মনে হয়। পবিত্র হজ উপলক্ষে মক্কা শরীফ ও মদীনা শরীফ ভ্রমণকালেও রোজা রাখেন এবং সফল হন। জানুয়ারি মাস থেকেই তিনি অসুস্থ বোধ করেন। বিশেষতঃ সর্দি কাশি ঠান্ডা লেগে যাওয়া।এ অবস্থাতেও ডাক পেলেই ছুটে গেছেন পথে প্রান্তরে। ছোট বড়ো মাঝারি অনুষ্ঠানে। নিজের শরীরের প্রতি প্রচন্ড উদাসীন মানুষটি অন্যের শরীরের নিয়মিত খোঁজখবর নেন কিন্তু অকৃতদার মানুষটি নিজের বেলায় নৈব নৈব চ। তাঁর প্রিয়জন জামাতা আমিনুল ইসলাম সবসময় তাঁর শরীর ও খাওয়া দাওয়ার প্রতি নজর দিতে অনুরোধ করেন! কিন্তু কে শোনে কার কথা! মুরারই ২ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি আলি রেজা মন্ডল মানিক, চরৈবেতি পত্রিকার সম্পাদক গল্পকার কবি কুদ্দুস আলি, গল্পকার মুনকির প্রেমী দোস্ত মহম্মদ,দারুল হুদা ইসলামিক ইউনিভার্সিটির প্রিন্সিপাল সিদ্দিক সাহেব,ভাইস প্রিন্সিপাল নাফে সাহেব বার বার তাঁর শরীর স্বাস্থ্য ও খাওয়া দাওয়ার প্রতি নজর দিতে অনুরোধ জানান।সদা প্রাণবন্ত হাসিমুখে সব কষ্ট ভুলে একটাই কথা, আমি ঠিক আছি। আমাকে নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোন কারণ নেই।

    কিন্তু উদ্বিগ্ন হতেই হলো। ছোট ভাই হঠাৎ করেই একটা বুনো শূয়োরের আক্রমণে গুরুতর আহতাবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর হাঁটুতে অস্ত্রপাচার করাতে হয়। পরিবারের একমাত্র ভরসা বড়ো দাদা মুনকির হোসেন। ভাইয়ের অসুস্থতার কারণে তিনিও নতুন করে অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসা করান ডা অমিত হাউলির কাছে। তিনি বক্ষ রোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন।গত ১৪ ই মার্চ তাঁকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।ডা এন কে সিটের চিকিৎসার রিপোর্ট অনুযায়ী তাঁর ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ে।জমা জল বের করে দেয়া হয়। রীতিমত পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে তাঁকে।যে মানুষটি জীবনে মাত্র একবার ওষুধ ইঞ্জেকশন নিয়েছেন। হোমিওপ্যাথি ও রসুন তেলাতেই যার ভক্তি ও ভরসা সেই মানুষটিকে নিয়মিত ওষুধ ইঞ্জেকশন নিতে হচ্ছে।যে মানুষটি হাজার ব্যস্ততার মাঝে থেকেও এক ওয়াক্ত নামাজ কাযা করেননি। সময়ের নামাজ সময়েই আদায় করেছেন। এখন তিনি কিনা হাসপাতালের বেডে শুয়ে বসে দিনপাত করছেন।

    ।এখন অনেকটাই সুস্থ বোধ করছেন বলে জানিয়েছেন তাঁর পরিবারের প্রিয় জামাতা আমিনুল ইসলাম।আজ মুরারই বিধানসভার বিধায়ক ভীমপুর গ্রামের কৃতী সন্তান ডা মোশারফ হোসেন তাঁকে দেখা করতে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান। তাঁর শরীরের এবং সুচিকিৎসার খোঁজ খবর নেন। পাগলা নদীর তীরে খুঁটকাইল গ্রামে জন্ম নিলেও তাঁর বাল্য কৈশোর ও যৌবন কেটেছে এই ভীমপুর গ্রামেই। দীর্ঘ বেশ কবছর বাহির দেশে সিনিয়র সায়েন্টিস্টের পদে যোগ্যতার সাথে কাজ শেষ করে ফিরে এসেছেন মাটির টানে আপন আলয়েই। পিছিয়ে পড়া এলাকায় নিজের সঞ্চিত মোটা আয়ের টাকায় গড়ে তুলেছেন আস সাকিনা ট্রাস্ট। এই ট্রাস্ট দারুল হুদা ইসলামিক ইউনিভার্সিটিকে জমি দান করে ভীমপুর হরিশপুর বাস রাস্তার ধারে গড়ে উঠেছে দারুল হুদা ইসলামিক ইউনিভার্সিটির পশ্চিমবঙ্গ ক্যাম্পাস।ড মুনকির হোসেনের স্বপ্ন। চোখের মণি। তাইতো তাঁর অজস্র গুণমুগ্ধ ছাত্র অভিভাবক শিক্ষক শিক্ষানুরাগী পথ চেয়ে আছেন তিনি কবে ফিরে আসবেন তাঁদের মাঝে।রোজার মাসে আল্লাহ তায়ালার কাছে সকলেই প্রার্থনা করেছেন যেন খুব দ্রুত আরোগ্য লাভ করে তাঁদের স্যার তাদের মধ্যেই ফিরে আসেন।