বিজেপি নেতা সাংসদরা ক্রমাগত হিংসা ও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ বিশিষ্ট মহলে

বিজেপি নেতা সাংসদরা ক্রমাগত হিংসা ও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ বিশিষ্ট মহলে

    নতুন গতি ডিজিটাল ডেস্ক : সম্প্রতি বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের ফেসবুক পোস্ট ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
    বিজেপি নেতা সাংসদরা ক্রমাগত হিংসা ও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ বিশিষ্ট মহলে। কতোটা সত্যি জানতে ফ্যাক্ট চেক করেন বিশিষ্ট সমাজকর্মী ও স্বাধীন সাংবাদিক জিম নাওয়াজ। তিনি লিখছেন – গত দু’তিনদিন ধরে হুগলির চন্দননগরের তেলানিপাড়ায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। এবিষয়ে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে এসেছে। তথ্যগুলো ভেরিফিকেশনের কাজ চলছে। ভেরিফিকেশনের পরে একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্ট প্রকাশ করবো বলে স্থির করেছি। আজকের এই পোস্টটি সাংসদ অর্জুন সিং এর ফেসবুক ভিডিও পোস্ট এর ফ্যাক্ট চেক বিষয়ক।
    গত ১১ই মে বিকেল ৪টে ৩৪ মিনিটে বিজেপির সাংসদ অর্জুন সিং ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। সেই ভিডিওটিতে একজন রক্তাক্ত ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছে । ভিডিও পোস্টটির লিঙ্ক কমেন্টে এবং আমার এই পোস্টে তার স্ন্যাপশট রইল।

    অর্জুন সিং তার ফেসবুক পোস্টে সেই রক্তাক্ত ব্যক্তিকে হিন্দু বলে উল্লেখ করেছেন। এবং দাবি করেছেন, ‘দুধেল গাই’ মুসলমানরা এভাবেই তেলানিপাড়ায় হিন্দুদের রক্ত ঝরাচ্ছে।

    আসুন, এবার অর্জুন সিং এর পোস্টের ভিডিওতে যে রক্তাক্ত ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছে তার আসল পরিচয় একবার খতিয়ে দেখে নেওয়া যাক।

    ভিডিওটিতে যে রক্তাক্ত ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছে তার আসল নাম মঞ্জুর আলম। বয়স প্রায় ৫৫ বছর। পেশায় ভদ্রেশ্বর জুটমিলের শ্রমিক। ভদ্রেশ্বর জুটমিল কোয়ার্টারের ১২নম্বর লাইনে সপরিবারে থাকেন। গত ১০ তারিখ ইফতারের পরে মাগরিবের নামাজ পড়ে মঞ্জুর কোয়ার্টারের বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন। তখন মুশলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। হঠাৎ কিছু দুষ্কৃতি তরোয়াল হাতে মঞ্জুরের কাছে এসে বলতে শুরু করেন,
    “তোরা মুসলমানরা করোনা ছড়াচ্ছিস। তোরা এই কোয়ার্টার ছেড়ে চলে যা। নাহলে কেটে টুকরো টুকরো করে নদীতে ভাসিয়ে দেবো।”

    মঞ্জুর কোয়ার্টার ছেড়ে যেতে রাজি না হতেই দুষ্কৃতিরা জয়শ্রীরাম শ্লোগান দিয়ে এলোপাথাড়ি তরোয়ালের কোপ মারতে শুরু করে। আর্তনাদ শুনে মঞ্জুর আলমের সন্তান বছর ত্রিশ বয়সী মুহাম্মদ আজাদ বেরিয়ে আসেন। বাবাকে বাঁচাতে যেতেই আজাদকেও কোপানো হয়। এরপর স্থানীয় মানুষরা রুখে দাঁড়ালে দুষ্কৃতিরা পালিয়ে যায়। মঞ্জুর আলম এবং পুত্র মুহাম্মদ আজাদকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

    মুসলিম ব্যক্তিদের উপর আক্রমণ চালিয়ে তাদের রক্তাক্ত করে, রক্তাক্ত ব্যক্তিদের হিন্দু বলে চালিয়েছিলেন অর্জুন সিং। আক্রমণের দায় চড়িয়েছিলেন মুসলমানদের উপর। দাঙ্গাবাজ অর্জুন সিং ধরা পড়ে গেলেন। হিন্দুত্ববাদীদের দ্বারা আক্রান্ত মঞ্জুর আলম এবং মুহাম্মদ আজাদ এর সুস্থতা কামনা করি। এবং ধিক্কার জানাই সেই সমস্ত মুসলিম তোষণ কারীদের কে।