|
---|
মহিউদ্দীন আহমেদ।
আহা রে… মেয়েটার মা বাবা কেউ নেই। এই “নেই” বলেই তার প্রতি ভালোবাসা দয়া মায়া স্নেহ আন্তরিকতা সবই উজাড় করে দেয় তার পরিচিতিরা। ক্লাস ইলেভেনে পড়া বাচ্চা মেয়েটাকে সবাই ভালোবাসতো। ভালোবাসতো এই কারনেই তার বয়স যখন মাত্র চার বছর তখন তার মা মারা যায়। মা তো মারা যায় নি, তার মাকে মেরে দেয় বাবা সহ পরিবারের সদস্যরা। সেই খুনের মামলা চলছে কোর্টে।
মাত্র চার বছর বয়সেই মা হারা মেয়েটির দায়দায়িত্ব নেয় মাসি। তবে এক অদ্ভুত কারনে তার মাসী অবশ্য মা হারা বোনঝি কে নিজ বাড়ীতে রাখে নি। স্কুলে পড়ছে আর থাকে ভাড়া বাড়ীতে। আরো আর্শ্চয্যজনক ঘটনা হলো মেয়েটির বাবাও মেয়ের দায়িত্ব যেমন নেয় নি ঠিক তেমনই কোন দায়িত্ব নেয় নি তার মামার বাড়ীর লোকেরাও। কেন নেয় নি? তার কারনও অজানা।
এহেন মেয়েটি তার মৃত মায়ের সম্পত্তির অংশ থেকেই তার মাসীর কাছে জমা থাকা টাকা পয়সা থেকেই পড়াশুনো করে। খাওয়া দাওয়া সবই গচ্ছিত পয়সা থেকে। যে খরচ সে তার মাসির কাছ থেকেই নেয়। মাসী, বোনঝির খরচ দিলেও বোনঝি কে নিজ ঘড়ে রাখতে চায় নি। তার কারনও বলতে চায় নি।
এদিকে স্কুলে পড়াশুনো, শহরে ভাড়া বাড়ীতে থাকার জন্য ছোট্ট মেয়েটির পরিচয় পরিচিতিও কম নয়। তার পরিচিত দিদিরা “আহা রে, মা মরা মেয়ে, বাবা থাকতেও দেখে না” বলে বেস মায়া করে, ভালোবাসে। কিন্তু সেই মায়া ভালাবাসাও বেশীদিন স্থায়ী হলো না।
যে বাচ্চা মেয়েটির মা বাবা নেই, মাসী মামারা থাকতেও নেই, সে অনেকটাই স্বাধীন। এই ম্বাধীন থেকে স্বাধীনতা পেয়ে সে কখন যেনো বে-পরোয়া জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। স্কুলে পড়া মেয়েটি, সবে আঠারো বছর পেড়ায়েছে, আইনী দৃষ্টিতে সে সাবালিকা হলেও তার সাম্যক ধ্যান ধারনা তো সেরকম হয় নি। তবুও সে বেপরোয়া জীবনযাপনে অভ্যাস্থ হয়ে পড়ে। মাসী কিছুটা আয়ত্তে আনার চেষ্টা করলেও সে ব্যর্থ হয়। তার বে-পরোয়া জীবনযাপন দেখে তার ভালোবাসার দিদিরাও তাকে সর্তক করে। পরে বেগতিক দেখে তার কাছ থেকে তারাও সড়ে যায়..
একাধিক বন্ধু বান্ধবী, ফেসবুকে হোয়াটস এ্যাপে চ্যাট করে, সোস্যল মিডিয়া ব্যাবহারের নামে অপ-ব্যাবহার তাকে আরো বেপরোয়া করে তোলে। ছোট বাচ্চা, সাধারন জ্ঞান বুদ্ধি প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থা সম্পর্কে ধারনা না থাকায়, তার সাথে বন্ধুত্বের নামে অসভ্যতামিও শুরু করে দেয় তার তথাকথিত দাদা তথা বন্ধুরা। এবং ঘটনা প্রবাহে কখন যেন সে অপরাধের পথে পা দেয়… সেটা তার অজান্তেই।
পিতা মাতা অভিভাবকহীন একটা মেয়ে, কম বয়সেই একাধিক বন্ধু বান্ধব, সোস্যাল মিডিয়ার অপ-ব্যাবহার তাকে সুষ্ঠভাবে মসৃন পথে থেকে অ- পথে বিপদের পথে যে ঠেলে দেয় তখনই সে বুঝতে পারে যখন হঠাৎ থানা নামক একটি আইনী প্রতিষ্ঠান থেকে যখন তাকে ডেকে পাঠায়। সে তখন বুঝতে পারে তার বে- হিসেবী, উশৃঙ্খল জীবনযাপন তাকে কতটা বিপদে ফেলে বিপথে পরিচালিত করেছে…
এবং তার নাম নামের পরে একাধিক ধারায় যখন মামলা হয় তখন সে বুঝতে পারে… জীবন নামক দীর্ঘপথে চলার শুরুটাই তার চরম ভুলে ভরা এবং আগামী দিন এখন তার কাছে কতটা বিরক্তিকর…. আর যে বন্ধু বান্ধবরা তাকে বিপথে পরিচালিত করেছিলো তারা..
বন্ধু নয়….