গোরু পাচার মামলায় CBI এর প্রথম দিনের তদন্তেই গ্রেফতার BSF জওয়ান, ১০০ কোটি টাকা লেনদেনের অভিযোগ

নতুন গতি ওয়েব ডেস্ক: গোরু পাচার মামলায় মঙ্গলবার প্রথম করল সিবিআই। আর এই দুর্নীতিতে প্রথম গ্রেফতার হলেন বিএসএফ-এর এক কমান্ড্যাট! তাঁর নাম সতীশ কুমার। এদিন প্রায় সাত ঘণ্টা ধরে জেরা করা হয় সতীশ কুমারকে। তদন্ত অসহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। এরপরই তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, গোরু পাচারকাণ্ডে অন্যতম সন্দেহভাজন এনামুলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল সতীশ কুমারের। অবৈধ প্রায় ১০০ কোটি টাকা লেনদেনেরও হদিশ মিলেছে। ইতিমধ্যেই এনামুলকে করোনার কারণে হোম আইসোলেশন করে নজরবন্দি করে রেখেছে সিবিআই। তার মাঝেই প্রথম গ্রেফতারি এই কাণ্ডে।

    এর আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বাংলা সফরের সময়ই কলকাতার পাঁচটি জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছিল সিবিআইয়ের আর্থিক তছরুপ দমন শাখা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপির শীর্ষনেতা অমিত শাহ তখন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে এই রাজ্যেই ছিলেন। যা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘আজ তো কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাঁকুড়ায় নিমন্ত্রণ খেতে এসেছেন। আজই সিআরপিএফ নিয়ে রেড হচ্ছে বলে শুনছি আসানসোল, পুরুলিয়া, দুর্গাপুরে।’ মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘কী প্ল্যানিং রে বাবা! এ তো ট্রাম্পকে হারিয়ে দেবে!’

    গোরু পাচার মামলার তদন্তে সিবিআই সেদিন কলকাতার মানিকতলা মেন রোডে একটি অভিজাত আবাসনে হানা দিয়েছিল। ওই আবাসনে ফ্ল্যাট রয়েছে এক নির্মাণ ব্যবসায়ীর। ওই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার অভিযান চলে দুই চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের অফিসেও। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ফ্ল্যাট ও অফিস থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার করা হয়েছে।

     

    মাস দেড়েক আগে গোরু পাচার মামলায় সিবিআই যে এফআইআর করে, সেখানে বেশ কয়েক জন ব্যবসায়ীর পাশাপাশি মুর্শিদাবাদে ডিউটি করে যাওয়া বিএসএফের প্রাক্তন কমান্ড্যান্ট সতীশ কুমার এবং বিএসএফ ও শুল্ক বিভাগের কয়েক জন আধিকারিকের নাম রয়েছে। এর আগেও সতীশ ও কয়েক জন আধিকারিককে জেরাও করেছে সিবিআই। কলকাতা ও মুর্শিদাবাদের ১৩টি জায়গায় ওই মামলার তদন্তে আগেও হানা দিয়েছেন গোয়েন্দারা। সেই সব জায়গায় পাওয়া নথির ভিত্তিতে এবং সতীশকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করার পরই গ্রেফতার করা হয় সতীশকে।

    গোয়েন্দাদের দাবি, বেআইনি ভাবে বিভিন্ন জেলা থেকে গোরু এনে মুর্শিদাবাদ সীমান্ত হয়ে পাচারের ক্ষেত্রে অনেকেই নানা ভাবে অভিযুক্ত পাচারকারী ও বিএসএফ-শুল্ক বিভাগের অফিসারদের সাহায্য করেছেন। তাঁদের মধ্যে মানিকতলার এক নির্মাণ ব্যবসায়ীরও নাম মিলেছে। পাচারের টাকা কোথায় কোথায় লগ্নি করা হয়েছে, তা ওই ব্যবসায়ীর কাছে জানতেও চেয়েছিলেন তদন্তকারীরা। অভিযুক্ত বিএসএফ ও শুল্ক আধিকারিক এবং পাচারকারীদের গত কয়েক বছরের আর্থিক লেনদেনের নথিপত্রও সিবিআই খতিয়ে দেখছে। অভিযুক্তরা ঘুষের টাকা আবাসন বা বিভিন্ন সংস্থায় আমানত করে থাকতে পারেন বলে তদন্তকারীদের একাংশের সন্দেহ। অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের কথা জানা যায়। যাঁরা আয়ব্যয় সংক্রান্ত নথি তৈরি করেছিলেন। ওই সিএ-দের অফিসে হানা দেন তদন্তকারীরা।