অবশেষে তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার কেন্দ্রের, বড়ো জয় কৃষকদের

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: গুরু নানকের জন্মদিনে বিরাট ঘোষণা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। বিতর্কিত তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করল কেন্দ্র। সাফল্য পেল কৃষকদের দীর্ঘদিনের আন্দোলন। আইন প্রত্যাহারের পরই আন্দোলনরত কৃষকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধ, ‘এবার আপনারা বাড়ি ফিরে যান।’ প্রধানমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, সংসদের আসন্ন অধিবেশনেই এই তিনটি বিতর্কিত আইন প্রত্যাহারের আইনি প্রক্রিয়া শুরু হবে।

    এদিন জাতির উদ্দেশে ভাষণে মোদি বলেন, “আমাদের সরকার ছোট কৃষকদের কথা ভেবে, দেশের কথা ভেবে, গ্রাম এবং গরিবদের উন্নতির কথা ভেবে পূর্ণ সততার সঙ্গে এই আইন এনেছিল। কিন্তু এই সহজ কথা আমাদের হাজার চেষ্টার পরও আমরা কিছু কৃষককে বোঝাতে পারিনি। অল্প সংখ্যক কৃষক এর বিরোধিতা করলেও, সেটাই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। অর্থনীতিবিদরা, বিশেষজ্ঞরা ওদের বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, আমরা ওদের কথা শুনেছি, বোঝার চেষ্টা করেছি। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছি। আজ দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইছি, হয়তো আমাদের তপস্যায় কোনও ঘাটতি ছিল। তাই প্রদীপের আলোর মতো এই সত্য কৃষকদের বোঝাতে পারিনি।”

    প্রধানমন্ত্রীর সাফ কথা, “কৃষকদের আর্থিক পরিস্থিতির উন্নতিতে আমরা পূর্ণ সততার সঙ্গে কাজ করছি। ছোট কৃষকদের উন্নতির জন্য তিনটি কৃষি আইন আনা হয়েছিল। দেশের বহু কৃষক, কৃষি বিশেষজ্ঞ, কৃষি অর্থনীতিবিদ সবাই চাইছিলেন এই ধরনের আইন আনা হোক। এর আগেও একাধিক সরকার এই ধরনের বিল আনার চেষ্টা করেছিলেন। এবারেও সংসদে আলোচনা করে এই আইন আনা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের কোটি কোটি কৃষক এই আইনকে স্বাগত জানিয়েছিলেন।” আসলে প্রধানমন্ত্রী এদিন বুঝিয়ে দিতে চাইলেন, তিনি দেশের কৃষকদের ভালর জন্যই এই আইন এনেছিলেন। শুধু সামান্য কিছু কৃষকের জন্য তাঁর সেই মহান উদ্দেশ্য পূরণ হল না।

    আসলে, এক বছরের বেশি সময় ধরে চলে আসা এই কৃষক বিক্ষোভ মোদি সরকারের জন্য রীতিমতো অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এই বিক্ষোভ প্রত্যাহার করানোর চেষ্টা হলেও পিছু হটেননি কৃষকরা। উত্তরপ্রদেশ ও পাঞ্জাবের ভোটের আগে আইন প্রত্যাহার না হলে, তার প্রভাব যে ভোটবাক্সে পড়বে ভালই বুঝতে পারছিলেন মোদি। সম্ভবত সেকারণেই এই আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত। প্রধানমন্ত্রী এদিন কৃষকদের অনুরোধ করলেন, দয়া করে বাড়ি ফিরে যান। মাঠে নামুন। আসুন সব নতুন করে শুরু করা যাক।