হাওড়ার ডোমজুড়কাণ্ডে ধৃত চন্দন মাজির জেরায় মিলেছে স্বীকারোক্তি! উদ্ধার হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্রটিও

নিজস্ব সংবাদদাতা : একাধিক বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন স্ত্রী। বারবার বলেও তাঁকে সেই সব সম্পর্ক থেকে বার করে আনতে না পারায় এই খুন বলে জেরায় স্বীকার করেছেন হাওড়ার ডোমজুড়কাণ্ডে ধৃত স্বামী চন্দন মাজি। এমনটাই খবর পুলিশ সূত্রে। অনুশ্রী হাজরাকে খুনে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রটিও উদ্ধার করেছে ডোমজুড় থানার পুলিশ।রবিবার রাতে ডোমজুড়ের রাঘবপুরের ঝালুয়ারবেড়ের রাস্তা থেকে অনুশ্রীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। বধূর বাপের বাড়ি চন্দনের বিরুদ্ধেই খুনের অভিযোগ তোলে। এর পরেই অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেফতার করে নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিশ। তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, চন্দন জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছেন। তিনিই জানিয়েছেন যে, অনুশ্রীকে গুলি করে খুন করার পর কাটলিয়ার একটি পুকুরে সেভেন এমএম পিস্তলটি ফেলে দিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার সেই পিস্তলটি উদ্ধার করা হয়। কলকাতার বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের ডুবুরি নামিয়ে সেটি উদ্ধার করে পুলিশ।

     

    পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার বন্ধুর বাড়িতে যাওয়ার জন্য সাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বার হন হাওড়ার ডোমজুড়ের সলপ-হাজরা মোড়ের বাসিন্দা অনুশ্রী। রাত ৮টা নাগাদ মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা হয় তাঁর। জানান, বাড়ি ফিরছেন সাইকেল চালিয়ে। কিন্তু বাড়ি আর ফেরা হয়নি। পরে ঝালুয়ারবেড়ের একটি নির্জন এবং অন্ধকার রাস্তায় তাঁর দেহ মেলে। কাপড় দিয়ে বাঁধা ছিল তাঁর চোখ। এই ঘটনার তদন্তে নেমে পরিবারের লোকেদের জিজ্ঞাসাবাদ করে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনকষাকষির কথা জানতে পারে পুলিশ। তদন্তকারীরা এ-ও জানতে পারেন যে, সংসারে অশান্তি বাড়তে থাকায় বিবাহবিচ্ছেদেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অনুশ্রী। তার মামলাও চলছিল। তার মধ্যেই খুন হন তরুণী।তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, পরিবারের লোকেদের বয়ান থেকে জানা যায়, অনুশ্রীর নৃত্যশিল্পী হিসাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া তাঁর স্বামীর পছন্দ ছিল না। শ্বশুরবাড়ির অন্যান্য লোকেরাও প্রবল আপত্তি তোলেন। এ বার জেরায় চন্দন দাবি করেছেন যে, অনুশ্রীর সঙ্গে একাধিক পুরুষের সম্পর্ক ছিল। সেটা তিনি কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না। স্ত্রীকে বারবার বুঝিয়েও পারেননি। তাই খুন করেছেন।

     

    এই খুনের পরিকল্পনায় আর কেউ জড়িত কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, অনুশ্রী খুনে মঙ্গলবার এক মহিলাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ওই মহিলা মৃতা অনুশ্রী হাজরার ঘনিষ্ঠ বান্ধবী। প্রিয় বান্ধবীর মৃত্যুর খবর পেয়েও তাঁর কোনও খোঁজ নেননি ওই মহিলা। বরং, রবিবার রাতে অনুশ্রীর মৃত্যুর পর থেকে ‘নিখোঁজ’ ছিলেন তিনি। এই সূত্র ধরে তদন্ত করছে পুলিশ।