|
---|
আজিজুর রহমান, গলসি : রাস্তার ধারে ঝুঁকে পরেছে একটি শিশু গাছ। তার নিচে ত্রিপলের টাঁঙানো বাড়িতে চার বছর ধরে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মহুয়া চৌধুরী। রাজ্য সরকারের কন্যাশ্রী প্রকল্পে পঁচিশ হাজার টাকা পেলেও পায়নি মাথা উপরে কংক্রিটের ছাদ এমনই অভিযোগ তার। জানা গেছে, গলসির আটপাড়া গ্রামের তাদের বসত বাড়ি বলতে আট দশ ফুটের একটি ত্রিপলের ঝুপড়ি। আর তার ভিতরে এক চৌকিতে খাওয়া দাওয়া ও ঘুমানো সাথে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি করছেন মহুয়া। তিনি বলেন, চার বছর আগে আমফান ঝড়ে ভেঁঙে যায় তাদের মাটির বাড়িটি। তখন থেকেই বাবা মায়ের সাথে গাছের নিচে আশ্রয় নিয়েছে। মহুয়ার মা রেখা বেগম একজন গৃহবধূ। তিনি বলেন, ঘরের উত্তর কোনে খোলা আকাশের নিচে হয় তিন বেলার রান্নার কাজ করেন তিনি। বৃষ্টির নামলে সেটাও বন্ধ হয়ে যায়। আক্ষেপে নিজেদের জীবনটাকে গোরু ছাগলের সাথে তুলনা করলেন মহুয়া মা। বাবা মান্নান চৌধুরী দিনমজুর। তার সপ্তাহে দুদিন কাজ হয় তো পাঁচদিন বন্ধ। ফলে অভাব কিছুতেই পিছু ছাড়ছেনা তাদের। স্বাভাবিক ভাবে দুঃখ ও যন্ত্রনা মধ্যে দিন কাটছে পরিবারটির। মান্নান চৌধুরী বলেন, স্থানীয় লোয়া রামগোপালপুুর পঞ্চায়েত ও গলসি ১ নং বিডিও অফিসে বার বার জানিয়েও কোন সুরাহা পায়নি তিনি। তার দুই মেয়ে। চেয়ে চিন্তে একজনের বিয়ে দিয়েছেন পাশের গ্রামে। ছোট মেয়ে উচ্চমাধ্যমিক পড়ছে। অগত্যা ঝুপড়িতেই ছোট মেয়েকে নিয়ে বাস করছেন তিনি। স্থানায়ী বাসিন্দা আলাউদ্দিন সেখ বলেন, মনে হচ্ছে এখানে তৃণমূল জিতে নাই। গ্রামে এমন পরিবার আরও আছে। তার দাবী, রাইপুর ও আটপাড়া এলাকায় ২,৭৫৪ ভোটে জিতেছন তৃণমূলের বিধায়ক নেপাল ঘরুই। তিনি গ্রামে এসে খোঁজ নেননি। ভোটের আগে প্রতিশ্রুতি দিলেও পাশে দাঁড়াননি বিধায়ক থেকে ব্লক প্রশাসন কেউই। ভোট আসে ভোট যায় তবুও বদলায়না মহুয়ার মতো কন্যাশ্রীদের জীবন।