ভুটানের ডোকলামে ১০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে গ্রাম তৈরি করেছে চিন, ছবি প্রকাশ করলো আন্তর্জাতিক সংস্থা

নতুন গতি, ওয়েব ডেস্ক : উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়ল নতুন গড়ে ওঠা চিনা গ্রামের ছবি। অভিযোগ, গত এক বছর ধরেই ভুটানের ভূখণ্ডে এই গ্রাম গড়ে তুলেছে চিনা সামরিক বাহিনী। এক অগ্রণী উপগ্রহচিত্র বিশেষজ্ঞ সংস্থা ওই ছবি প্রকাশ করে জানিয়েছে, প্রায় ১০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে একাধিক বসতি গ্রাম গড়ে তুলেছে চিন। সবটাই ভুটানের ভিতরে। আর এই বিষয়টি যে নতুন করে ভারতের উদ্বেগ বাড়াবে তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই।

     

     

    তাৎপর্য পূর্ণ ভাবে ভুটানভূমিতে গড়ে তোলা এই গ্রামগুলি ডোকলাম থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত। ডোকলামে গত ২০১৭ সালে এক সংঘর্ষে জড়ায় ভারত-চিন। তার পর থেকেই দু’দেশের সম্পর্কের পারদ চড়ছে বেশ খানিকটা। ভারতের বিরুদ্ধে ভুটানের মাটিকে কাজে লাগাচ্ছে চিন এমন অভিযোগ উঠেছে বারবার। আর এই উপগ্রহ চিত্র তারই প্রমাণ বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা।

     

    ভুটানের সঙ্গে ভারতের মৈত্রীর সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। ইতিহাস বলে, ছোট্ট ওই দেশটির বহু বিষয়ে বিশেষ পরামর্শদাতা ছিল ভারত। এমনকী তাদের সশস্ত্র বাহিনীর প্রশিক্ষণও হয়েছে এ দেশেই। এই পরিস্থিতিতে গত কয়েক বছরে ভুটানের উপর চাপ বাড়াচ্ছে চিন। বার বার তাদের সীমানা নিয়ে নতুন করে ভাবতে বলা হচ্ছে বলে অভিযোগ। ভারতের বিরুদ্ধে তার মিত্র প্রতিবেশীকে অস্থির করে তুলতে পারলে আখেরে লাভ চিনের। কিন্তু এ সব চুক্তির কোনও রূপরেখা সুনির্দিষ্ট নয়। চিনের গড়ে তোলা বসতিগুলি নিয়ে কোনও চুক্তি আদৌ হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে চাইছে আন্তর্জাতিক মহল।

     

    আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থাটি উপগ্রহ চিত্র প্রকাশ করে জানিয়েছে, গত বছর মে মাস থেকে চলতি নভেম্বর পর্যন্ত ভুটানের জমিতে বেশ কয়েকটি গ্রাম তৈরি করে ফেলেছে। প্রায় ১০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে থাকা ওই গ্রাম গুলিকে কী ভাবে ব্যবহার করতে চাইছে চিন, সেটাই ভাবাচ্ছে ভারতকে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ওই গ্রামগুলিকে দু’ভাবে ব্যবহার করা হতে পারে। সাধারণ চোখে মনুষ্য বসতি হিসাবে দেখিয়ে তলে তলে ভারতের বিরুদ্ধে সেনা জড়ো করা হতে পারে ওই জমিকে ব্যবহার করে।

     

    এর আগে ২০২০ সালেই বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছিল, ডোকলামের খুব কাছে বসতি গড়ছে চিন। এ বার সেই দাবির সত্যতা প্রমাণ করল উপগ্রহ চিত্র। যদিও চিনের সরকারি সংবাদ মাধ্যমের তরফে দাবি করা হয়েছে, ভুটান সীমান্তের ২ কিলোমিটারের মধ্যে।

     

    এর আগে চিনের তরফে জানান হয়েছিল, আঞ্চলিক অখণ্ডতা, সার্বভৌমত্ব এবং সীমানা রক্ষায় পদক্ষেপ করবে। তারপর এই গ্রাম গড়ে তোলার ঘটনাকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।