স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় শিশু পড়ুয়াদের পড়ানোর দায়িত্ব তুলে নিয়েছে একাদশ শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীরা

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: করণা প্রভাবে দু’বছর ধরে স্কুল-কলেজ বন্ধ। শিশুরা সকলে বাড়িতে থাকছে। পঠন-পাঠন,ও , স্কুলমুখী বন্ধ হয়ে পড়েছে শিশুদের। এমনই এই অবস্থায একাদশ শ্রেণীর স্কুল পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীরা প্রত্যেকেই নিজেদের এলাকায় গিয়ে হাতে হাত মিলিয়ে করোনা অতিমারীর কারণে বন্ধ থাকা বিদ্যালয়ের শিশু পড়ুয়াদের পড়ানোর দায়িত্ব স্থানীয়ভাবে তুলে নিয়েছে নিজেদের কাঁধে। সুযোগ পেলেই তামান আজাদ, হর্ষ বৈদ, বিবেক ভদ্র, উত্তরণ বসাক, সায়ন গুপ্ত, অদ্রিজা পতিতুণ্ডি, আদিত্য ঘোষরা দল বেঁধে ছুটছেন মালদহের প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে। পড়াচ্ছেন কচিকাঁচাদের। দাদা দিদিদের এই নতুন ধরণের পড়ানোর কায়দায় উচ্ছ্বসিত খুদে পড়ুয়ারাও।

    পরিকল্পনা প্রথম এসেছিল ইংলিশবাজার শহরের রবীন্দ্র এভিনিউর বাসিন্দা তামান আজাদের মাথাতে। মালদহের একটি সুপরিচিত ইংরাজি মাধ্যম স্কুলের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র তামান তাঁর পরিকল্পনা ভাগ করে নিয়েছিল সহপাঠীদের সঙ্গে। তারাও হৈ হৈ করে সায় দিয়েছিল তামানের এই পরিকল্পনায়। ব্যাস! তারপরেই লেগে পড়ে সকলে। পড়াশোনার ব্যস্ততার ফাঁকে ফাঁকে সোস্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে ছড়িয়ে দিতে থাকে তাদের পরিকল্পনার কথা। সাড়া মেলে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। করোনা অতিমারীতে বন্ধ থাকা স্কুলের খুদে পড়ুয়াদের পড়াশোনার যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি তাদের মন ভালো রাখতে মাঠে নেমে পড়ে কিশোর কিশোরীদের নেটওয়ার্ক ‘এইড ফর এড’। মালদহ থেকে শুরু করা এই অভিনব পরিকল্পনায় এখন যুক্ত হয়ে গিয়েছে সারা দেশের প্রায় ১০০ কিশোর কিশোরী।

    তামান জানায়, আমরা ছুটি পেলেই চলে যাচ্ছি গ্রামে। বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে খুদে পড়ুয়াদের যেমন বাংলা, অঙ্ক, ইংরাজি শেখাচ্ছি খেলার ছলে তেমনই খোঁজ নিচ্ছি তাদের মনের ইচ্ছেগুলোর। কখনও গিটার বাজিয়ে তাদের গান শুনিয়ে মন ভালো রাখার চেষ্টা করছি আবার কখনও তাইকুন্ডোর মতো শরীর চর্চা এবং আত্মরক্ষার কায়দায় শিখিয়ে দিচ্ছি। তামানের বন্ধুরা পড়ানোর ফাঁকে ফাঁকে দেখে নিচ্ছে খুদে পড়ুয়াদের হাতের নখ ঠিকমতো কাটা রয়েছে কিনা অথবা তারা হাতে সাবান ব্যবহার করছে কিনা ঠিক মতো।

    তামান আজাদ, হর্ষ বৈদ সহ কিশোর কিশোরীদের বক্তব্য, মা বাবাদের কাছ থেকে তো বটেই, অনেক নাগরিকও এই ইতিবাচক উদ্যোগের কথা জেনে তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে। তাই ভালোই চলছে এই শিক্ষা অভিযান। তিন মাস ধরে তাদের এই কর্মকাণ্ড চলছে। ইতিমধ্যে জেলার বেশকিছু ব্লকের বেশকিছু প্রাইমারি স্কুলে শিশুদেরকে পড়াশোনা করার সুযোগ করে দিয়েছে তাদের এই প্রচেষ্টায়।