বর্ধমানের কার্জন গেটে রাজা রানির মূর্তি বসানোর পরিকল্পনাকে কেন্দ্র করে বিতর্ক

নিজস্ব সংবাদদাতা: বর্ধমানের কার্জন গেটে রাজা রানির মূর্তি বসানোর পরিকল্পনাকে কেন্দ্র করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে । তোরণের দুই স্তম্ভের নীচে এই মূর্তি বসানো সঠিক হচ্ছে কি না তা নিয়ে ভিন্নমত উঠে আসছে শহরবাসী ও রাজনৈতিক দলগুলির মধ্য থেকে। অনেকেই বলছেন, এই মূর্তি বসানোর ফলে ঢাকা পড়বে ঐতিহ্যবাহী কার্জন গেটের নকশা। ঢাকা পড়বে ইতিহাস। তাই রাজা রানির মূর্তি অন্যত্র বসানো হোক- চাইছেন অনেকে।

     

    মূর্তি বসানোর ক্ষেত্রে মূল উদ্যোক্তা বর্ধমান দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক খোকন দাস ৷ পুরসভা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে কার্জন গেট থেকে ৫ ফুট দূরে এই মূর্তি বসানো হচ্ছে। তাই এতে ইতিহাস ঢাকা পড়ার মতো কিছু ঘটবে না ।১৯০৪ সালে লর্ড কার্জন বিশেষ অতিথি হিসেবে বর্ধমানে এসেছিলেন । তাঁর সেই আগমন স্মরণীয় করে রাখতে বর্ধমানের তৎকালীন মহারাজ বিজয়চাঁদ মহাতাব জি টি রোড ও বি সি রোডের সংযোগস্থলে এই তোরণ নির্মাণ করেন। সেই সময় এই তোরণের নাম দেওয়া হয়েছিল স্টার অফ ইন্ডিয়া।স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে নির্মাতা বিজয়চাঁদের নামে এই তোরণের নাম হয় বিজয় তোরণ। তবে সে নাম খোদাই থাকলেও বাসিন্দারা এই তোরণটিকে কার্জন গেট নামেই ডেকে থাকেন। সেই কার্জন গেটের নীচে বসানো হচ্ছে মহারাজা বিজয় চাঁদ মহাতাব ও মহারানি রাধারানী দেবীর মূর্তি। আগামী ২০ অগাস্ট এই মূর্তি দুটি স্থাপনের দিন স্থির হয়েছে । ইতিমধ্যেই বেদি তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে ।বর্ধমানের ঐতিহ্য বিজয় তোরণ । এমন একটি স্থানকে রাজা রানির মূর্তি বসানোর জন্য বেছে নেওয়া হচ্ছে তাতে কার্জন গেটের নকশা ঢাকা পড়ে যাবে বলে মত বিজেপি, সিপিআইএম এবং কংগ্রেসের । তাদের বক্তব্য, এর ফলে কার্জন গেটের নীচের অংশ দৃষ্টির বাইরে থেকে চলে যাবে । রাজা রানির মূর্তি বসাতে হলে তা অন্যত্র বসানো হোক। এ ব্যাপারে শহরবাসীর মতামত নেওয়া জরুরি বলে মনে করছে তাঁরা।যদিও বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস বলেন, ‘‘ কার্জন গেটে কোনও রকম হাত দেওয়া হয়নি । অহেতুক বিতর্ক তৈরির জন্য এ সব কথা বলা হচ্ছে ।’’ পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘‘ রাজ পরিবারের অনুমতি নিয়েই এই মূর্তি বসানো হচ্ছে । কার্জন গেট থেকে ৫ ফুট দূরে মূর্তি বসছে । অতএব তাতে ইতিহাস ঢাকা পড়বে না।’’