১৬ই নভেম্বর বীরভূমে কোর কমিটির বৈঠক, মুখোমুখি হাওয়ার চরম সম্ভাবনা কেষ্ট-কাজলের

 

     

     

    খান আরশাদ, বীরভূম:

    অবশেষে সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে আগামী ১৬ই নভেম্বর বীরভূমে তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠক হতে চলেছে বোলপুর তৃণমূল দলীয় কার্যালয়ে।
    রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশের পর বীরভূমের তৃণমূলের কোর কমিটির আহ্বায়ক বিধায়ক বিকাশ রায় চৌধুরী কোর কমিটির বৈঠক আহ্বান করেছেন।
    গরু পাচার কাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছিলেন বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্ট। জেলবন্দি হওয়ার পর জেলা সভাপতি কে হবেন! এটা নিয়েই চিন্তায় ছিল রাজ্য নেতৃত্ব। এরপর স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী বীরভূমে কোর কমিটি তৈরি করে দেন।
    গরু পাচার কাণ্ডের আগে বীরভূমে অনুব্রত মণ্ডলের যে কোন সিদ্ধান্তই ছিল শেষ কথা। এক কথায় জেলার কান্ডারী ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্ট।
    কোর কমিটির বৈঠকের পর আর কোর কমিটি থাকবে কিনা না! কোর কমিটি ভেঙ্গে দেওয়া হলে জেলা সভাপতি হিসেবে অনুব্রত মণ্ডল আগের মত একাই বীরভূমে রাজ করবেন কি না !
    জেল থেকে ফিরে আসার পর অনুব্রত মণ্ডল তার নিজের জায়গা উদ্ধার করতে সক্ষম হবেন কি না! বা কোর কমিটি বর্ধিত করা হলে অনুব্রত মণ্ডল তাতে জায়গা পাবেন কিনা এবং তাতে তাঁর ভূমিকাই বা কতটুকু হবে ? এবং তিনি যদি কোর কমিটিতে জায়গা পান, তাহলে আগের মতোই কি তাঁর একচ্ছত্র রাজ কায়েম থাকবে? এই প্রশ্নই রাজনৈতিক মহলে এখন ঘুরপাক খাচ্ছে।
    কারণ বীরভূমে কাজল-কেষ্টর ঠান্ডা লড়াই রাজনৈতিক মহলে সবাই অবগত।
    এ পর্যন্ত কোন বিজয়ার সম্মেলনীতে মুখোমুখি হতে দেখা যায়নি কাজল-কেষ্টকে।
    দুজনেই সবাইকে নিয়ে চলার কথা বারবার করে বললেও কেষ্ট মন্ডল বা কাজল শেখকে মুখোমুখি হতে এখনো দেখা যায়নি।
    আগামী ১৬ তারিখের কোর কমিটির বৈঠকে এবার কি কেষ্ট-কাজল সত্যিই মুখোমুখি হতে চলেছেন? এই নিয়েই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে নানান জল্পনা।
    অনুব্রত মণ্ডল জেলে থাকাকালীনও মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে জেলা সভাপতির পদ থেকে সরাননি।
    আবার মুখ্যমন্ত্রীর গড়া কোর কমিটির নেতৃত্বে তৃণমূল গত নির্বাচনে খুব ভালো ফল করে। এমনকি আগের নির্বাচন গুলোর চেয়েও বেশি ভোটে লিড পায় তৃণমূল।
    এই নির্বাচনে তৃণমূলের লিড প্রমাণ করে জেলার মানুষ জেলার কোন নেতা নয়, বরং মমতা ব্যানার্জি-অভিষেক ব্যানার্জিকে দেখেই ভোট দেয়। এরকমই মত প্রকাশ করছেন জেলার অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
    স্বভাবতই কোর কমিটির কৃতিত্বে রাজ্য নেতৃত্বও খুবই সন্তুষ্ট। স্বয়ং যুবরাজ অভিষেক ব্যানার্জিও এই কোর কমিটির পক্ষেই কথা বলেছেন।
    এখন চোখ সবার একই দিকে। আগামী ১৬ই নভেম্বর বৈঠকের পর অনুব্রত মণ্ডল কি তার একচ্ছত্র আধিপত্য ফিরে পাবেন ? না তৃণমূলের কোর কমিটিতে জায়গা পেয়ে অনুব্রত মণ্ডল কোর কমিটির অন্যান্য সদস্যদের সবার সাথেই মানিয়ে চলবেন !
    কারণ যে অনুব্রত মণ্ডল জেলে যাওয়ার আগে নকুল দানা, খেলা হবে, গুড় বাতাসা, সুঁটিয়ে লাল করার নিদান দিতেন। সেই অনুব্রত মণ্ডল এখন সবাইকে নিয়ে একসাথে চলার, নিজেদের মধ্যে ঝগড়া না করার আবেদন জানিয়ে শান্তির বার্তা দিচ্ছেন।
    একাংশের মত বীরভূমের বাঘ অনুব্রত মণ্ডলের জনপ্রিয়তা এতটুকুও কমেনি। তিনি ফের নিজের জায়গায় ফিরে আসবেন।
    অপর একাংশের মত জেলার রবিনহুড কাজল সেখের জনপ্রিয়তা এখন তুঙ্গে।
    এই দুই রাজ নেতা কি আগামী বৈঠকে মুখোমুখি হয়ে একসাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জেলা তৃণমূলের ভিত আরো শক্ত করতে পারবেন ?
    এরই উত্তর খুঁজছে জেলাবাসী।
    সম্ভবত: আগামী ১৬ তারিখ শনিবারের পরই এর উত্তর পাওয়া যেতে পারে।