অ্যাডমিট কার্ড ছাড়াই পিএইচডি-র কোর্সওয়ার্ক বা এমফিলের প্রথম সিমেস্টারের পরীক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক:- পরীক্ষা হয়েছে দু’বছর আগে। ফল বেরিয়েছে সময়ে। অথচ, মার্কশিট এখনও হাতে পাননি পড়ুয়ারা। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর ও স্নাতকের তিনটি সিমেস্টারের ক্ষেত্রে এমনটা ঘটেছে বলে অভিযোগ। উঠেছে অ্যাডমিট কার্ড ছাড়াই পিএইচডি-র কোর্সওয়ার্ক বা এমফিলের প্রথম সিমেস্টারের পরীক্ষা নেওয়ার মতো অভিযোগও। এই পরিস্থিতিতে, রবিবার বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথাগত রায় সমাজ মাধ্যমে অভিযোগ করেছেন, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাডমিট কার্ড ও মার্কশিট ছাপার জন্য একটি সংস্থাকে তিন বছরের বরাত দিয়েছে ২১ কোটি টাকায়। তা বিশ্ববিদ্যালয় এত দিন নিজে কয়েক লক্ষ টাকায় করত বলে তাঁর দাবি।বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবশ্য তথাগতের দাবি মানতে চাননি। উপাচার্য নিমাইচন্দ্র সাহা সোমবার বলেন, ‘‘গ্লোবাল টেন্ডারের মাধ্যমে একটি সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়েছে। তারা কাজ করে বিল দিলে, তা মেটানো হবে। এখনও আমরা কোনও টাকা দিইনি। ২১ কোটি টাকার প্রশ্ন কোথা থেকে এল, জানা নেই।’’ তবে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, মার্কশিট ও অ্যাডমিট কার্ড বিলিতে ‘গাফিলতি’ নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক দফতর। এ দিন এগজ়িকিউটিভ কাউন্সিলের (ইসি) বৈঠকে ওই দফতরের চার আধিকারিককে ভর্ৎসনাও করা হয়।বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, “পরীক্ষা নিয়ামক দফতরের কিছু গাফিলতি ও সমন্বয়ের অভাবের বিষয়ে তদন্তে সহ-উপাচার্য আশিস পাণিগ্রাহীর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। দ্রুত তাঁদের রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।’’

    বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি সংস্থা ই-মার্কশিট তৈরি করে দেওয়ার পরে, তা নির্দিষ্ট সময়ে অনলাইনে প্রকাশ করা হয়েছিল। কিন্তু ছাপানো মার্কশিট এখনও দেওয়া যায়নি। সূত্রের দাবি, এ দিন দুপুরে ইসি চলাকালীন পরীক্ষা নিয়ামক দফতরের চার আধিকারিককে ডেকে জানতে চাওয়া হয়, স্নাতকোত্তরের চতুর্থ সিমেস্টার চলছে, এখনও আগের তিন সিমেস্টারের মার্কশিট দেওয়া যায়নি কেন? অভিযোগ, দফতরের এক কর্তা দাবি করেন, মার্কশিট পড়ে রয়েছে। বিভাগীয় প্রধানেরা তা নিয়ে গিয়ে পরীক্ষার্থীদের দেবেন বলে মনে করেছিলেন তাঁরা। যা শুনে ক্ষুব্ধ হন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তারা। অ্যাডমিট কার্ড ছাড়া পরীক্ষা নেওয়া হল কী ভাবে, সে প্রশ্নও ওঠে।এর পরেই আজ, মঙ্গলবার থেকে বাংলা বিভাগের পিএইডি-র কোর্সওয়ার্ক পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরীক্ষা নিয়ামক দফতর। গোটা বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক অনিন্দ্যজ্যোতি পালের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমি কিছু বলব না। যা বলার, উপাচার্য বলবেন।’’এরই মধ্যে, কয়েকটি সূত্রের অভিযোগ, কোর্সওয়ার্কে এক দিনও হাজির না থাকা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক জন পড়ুয়াকে পিএইডি-র রেজিস্ট্রেশন করতে দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি।