ফের ডেঙ্গিতে মৃত্যু হাওড়ায়

নিজস্ব সংবাদদাতা: ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে ফের এক জনের মৃত্যু হল হাওড়ায়। হাওড়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, অক্ষয় মজুমদার (৩৭) নামে ওই যুবক আট নম্বর ওয়ার্ডের পি রোডের নেতাজিনগর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। বুধবার সকালে একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। ওই রোগীর ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ হিসেবে ডেঙ্গির জেরে জ্বর এবং রক্তক্ষরণের উল্লেখ আছে।

    এর আগে ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডে মিলন রিত (২২) নামে এক তরুণের মৃত্যু হয়েছিল ডেঙ্গিতে। হাওড়া জুড়ে ডেঙ্গির প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার পিছনে পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের ব্যর্থতাকেই দায়ী করেছেন এলাকার বাসিন্দারা। যদিও পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে তাঁদের তরফে সমস্ত রকম ব্যবস্থা নেওয়া হলেও সাধারণ মানুষ যথেষ্ট সচেতন হননি। তাঁদের আরও বেশি করে সচেতন হতে হবে।জন্ডিস নিয়ে প্রথমে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি হন নেতাজিনগরের ওই যুবক। সেখানে তাঁর প্লেটলেট ক্রমাগত কমতে থাকায় পরিবারের লোকজন অক্ষয়কে আন্দুল রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করান। সেখানেই এ দিন সকালে তিনি মারা যান।

    এ দিন নেতাজিনগরে গিয়ে দেখা যায়, এলাকার বিভিন্ন জায়গায় জল জমে রয়েছে। নর্দমা নিয়মিত পরিষ্কার না হওয়ায় জল বেরোনোর রাস্তা প্রায় রুদ্ধ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভার কর্মীরা নিয়মিত নর্দমা পরিষ্কার করেন না। আগে ব্লিচিং পাউডার বা লার্ভিসাইড তেল মাঝে মাঝে ছড়ানো হত। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন দল বেঁধে এসে ওই সব কাজ করতেন। এ বছর তা দেখা যায়নি। পরিস্থিতি এমনই হয়েছে যে, গোটা এলাকায় দুপুরের পর থেকে দরজা-জানলা বন্ধ করেও মশার হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না মানুষ। মৃত যুবকের দিদি সোমা রায় বলেন, ‘‘পুরসভার কর্মীরা আগের মতো ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন না বলেই ডেঙ্গি ছড়াচ্ছে। আমরা মশার জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি।’’

    পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনার জন্য এ দিন হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর, পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ ও সাফাই বিভাগের কর্মীদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেন হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী। পরে তিনি জানান, খুব শিগগিরই ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হবে। তিনি বলেন, ‘‘গত তিন-চার সপ্তাহ ধরে হাওড়ার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ডেঙ্গির প্রকোপ যে বাড়ছে, এটা ঠিক। তবে বিচ্ছিন্ন ভাবে কয়েকটি ওয়ার্ডে বাড়ছে। যেমন আট নম্বর ওয়ার্ডে যে যুবক মারা গিয়েছেন, সেখানে কিন্তু ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা কম।’’চেয়ারপার্সনের আবার দাবি, ডেঙ্গিতে যাঁরা মারা যাচ্ছেন, দেখা গিয়েছে, তাঁদের প্রত্যেকেরই কোমর্বিডিটি রয়েছে। সেই বিষয়টিও নজরে রাখা হচ্ছে। তিনি জানান, আরও বেশি সংখ্যক কর্মী দিয়ে লার্ভিসাইড তেল স্প্রে করানো ও আবর্জনা পরিষ্কারের পাশাপাশি মানুষকে সচেতন করারও চেষ্টা হচ্ছে। তাঁদের বলা হচ্ছে, ফ্রিজের পিছনে, বারান্দায়, বাগানে বা ছাদের উপরে কোনও পাত্রে জমা জল থাকলে তা অবিলম্বে ফেলে দিতে হবে।