বয়স কে হার মানিয়ে রোদ ঝড় জল বৃষ্টিতেও তিনি সেবা করে চলেছেন গাছেদের! শিক্ষিক হলেও পরিচিত তিনি গাছ দাদু নামেই

নিজস্ব সংবাদদাতা : এলাকায় বিভিন্ন সময়ে রাস্তার পাশে মাঠে দেখা যায় তাকে। বয়স কে হার মানিয়ে রোদ ঝড় জল বৃষ্টিতেও তিনি সেবা করে চলেছেন গাছেদের। ‘গাছ দাদু’ শিক্ষক হলেও এলাকার মানুষজন এই নামেই তাকে চেনেন। বৃক্ষরোপণে যার জীবনের সংকল্প করে তুলেছেন ৮০ বছরের বঙ্কিম চক্রবর্তী। তার বাড়ির চারদিকে বিভিন্ন ধরনের দুষ্প্রাপ্য গাছের দেখা মেলবে। হরিতকী, আমলা, অগ্নিশ্বর, বয়রা, লবঙ্গ, দারচিনি সহ গোলমরিচ। চন্দন গাছ থাকলেও তা চুরি হয়ে গিয়েছে। বহু ধরনের জবা, বহু রকমের ফুল গাছ, এমনকি একই গাছে দু’রকম রংয়ের ফুল ধরে এমন গাছেরও দেখা মেলে গাছ দাদুর বাড়িতে। বাড়ির ডালিম, সবেদা গাছে ধরেছে ফল।পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে বাড়িতে হারি দিয়ে তৈরি করে দিয়েছেন পাখিদের বাসস্থান। পরিবেশ রক্ষায় পাখিদেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে, মনে করেন প্রাক্তন শিক্ষক বঙ্কিম চক্রবর্তী। যে ঘরে তিনি বেশিরভাগ সময় কাটান তার চারিদিকে ছড়িয়ে বিভিন্ন গাছের নানান কথা। গাছ নিয়ে নানা বাণী। ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে থেকে পাওয়া স্বীকৃতি সম্মান। দুই ছেলে থাকলেও বড় ছেলে থাকেন বিদেশে, ছোট ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে গাছকে ভালোবেসে পথ চলছেন বঙ্কিম বাবু ও তাঁর স্ত্রী মালতি চক্রবর্তী। গাছ নিয়ে নানা অভিজ্ঞতা ও ঘটনার কথাও জানান এই বৃদ্ধ দম্পতি।গাছ যে তাদের জীবনের সঙ্গে কতটা জড়িয়ে তাও স্পষ্ট তাদের কথা থেকে। চন্দন গাছ চুরি যাওয়ায় রীতিমতো ভেঙে পড়েছিলেন গাছ দাদু। সে ঘটনা বলতে গিয়ে আজও কেঁদে ফেলেন তিনি। নিজের মেয়ে না থাকার আক্ষেপও ভুলে থাকেন এই গাছেদের সঙ্গে থেকে। গাছকেই মেয়ে ভেবে আদর যত্ন করেন বঙ্কিম বাবু ও মালতি দেবী। তাই সমাজের সকল মানুষকে গাছ লাগানোর বার্তা দেন গাছ দাদু।কোন অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিত তালিকায় গাছ দাদু থাকলে, উপহার হিসেবে তুলে দেন চারা গাছ। গাছ দাদু বঙ্কিম চক্রবর্তি জানান, করোনার মত অতিমারি থেকে বাঁচতে এবং পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে, পাশাপাশি বিশ্ব উষ্ণায়নের থেকে নিজেদের রক্ষা করতে গাছ লাগানোই একমাত্র বাঁচার উপায় আমাদের সকলের। গাছ দাদুর এই কাজকে কুর্নিশ জানিয়েছেন এলাকার বিভিন্ন সমাজসেবী সংগঠন থেকে পরিবেশবিদ্ রাও।